0507topic
|
গত ২৭ এপ্রিল সকালে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষনেতা কিম জং-উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন দু'দেশের সীমান্ত-এলাকা পানমুনজমে বৈঠক করেন। এটা ছিল ১১ বছর পর দুই কোরিয়ার শীর্ষনেতাদের প্রথম বৈঠক। তা ছাড়া, কোরীয় যুদ্ধের পর এবারই প্রথম উত্তর কোরিয়ার শীর্ষনেতা দক্ষিণ কোরিয়ার মাঠিতে গিয়ে দাঁড়ান। এবারের বৈঠকটি কোরীয় উপদ্বীপ, পূর্ব এশিয়া, এমনকি বিশ্বের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।
এবারের বৈঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফল হচ্ছে দুই নেতার 'পানমুনজম ঘোষণা' স্বাক্ষর। 'পানমুনজম ঘোষণা'র পুরো নাম: 'উপদ্বীপে শান্তি, সমৃদ্ধি ও একীরকণ বাস্তবায়ন'।
ঘোষণা অনুসারে:
১. দুই কোরিয়া চলতি বছর শেষ হবার আগেই সীমান্তে যুদ্ধাবস্থার অবসান ঘটাবে এবং কোরীয় উপদ্বীপে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে নিয়ে চতুর্পক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করবে।
২. কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তকরণের অভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবে। উত্তর কোরিয়া এর জন্য ইতোমধ্যেই ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
৩. দু'দেশ ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও বিনিময় বজায় রাখবে; দুই নেতা নিয়মিত বৈঠক ও ফোনালাপ করবেন; এবং মুন জায়ে-ইন চলতি বছর শরত্কালে পিংইয়ং সফর করবেন।
কিছুদিন আগেও কোরীয় উপদ্বীপে ছিল মারাত্মক উত্তেজনা। একদিকে উত্তর কোরিয়া একের পর এক মিসাইল ও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষায় চালায় এবং অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র মোতায়েন করে 'থাড' ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী ব্যবস্থা। এমনি এক প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার বিশেষ দূতকে উত্তর কোরিয়া পাঠান; উত্তর কোরিয়ার শীর্ষনেতা বেইজিং সফর করেন। তারপর থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে থাকে। যার সর্বশেষ পরণতি বলা চলে 'পানমুনজম ঘোষণা'।
বৈঠকের পর দুই কোরিয়া উপদ্বীপের শান্তি ও একীকরণের জন্য ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিয়েছে, যেমন: উত্তর কোরিয়া ইতোমধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তকরণের কাজ শুরু করেছে; উত্তর কোরিয়া ঘড়ির কাটা দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মিল রেখে ঠিক করেছে; সীমান্তে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর যন্ত্রপাতি খুলে নেওয়া হয়েছে; দু'দেশের পরবর্তী আলোচনা ও বৈঠকের প্রস্তুতিমূলক কাজও চলছে।
(তুহিনা/আলিম)