চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের সময় সিআরআই'র সাংবাদিকরা লিয়াওনিং প্রদেশের ফানচিন শহরের লিয়াওহো যাদুঘর পরিদর্শন করেন। তখন যাদুঘরের কর্মকর্তা লি স্যুয়ে সাংবাদিকদেরকে পিঞ্চ কাগজের প্রযুক্তি দেখাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, যদি প্রযুক্তি ক্রমশ উন্নত করা না-হয়, তবে তা একসময় হারিয়ে যায়।
তিনি বলেন, 'হয়ত আমি পরিবারের প্রভাবে বা নিজের পছন্দের কারণে এই ঐতিহ্যগত প্রযুক্তি শিখেছি। কিন্তু বর্তমানে এমন প্রযুক্তি হারিয়ে যেতে বসেছে। সেজন্য আমার মনে হয়, ঐতিহ্যগত প্রযুক্তিকে হালনাগাদ করা উচিত; বর্তমান যুগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করা উচিত।'
লি স্যুয়ের পরিবার এ-প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন ১০০ বছর ধরে। তিনি ছোটবেলা থেকেই দাদা-দাদির সাহায্যে বিভিন্ন উত্সব উপলক্ষে লণ্ঠন তৈরি করতেন। এরপর লি স্যুয়ে বিদেশে ডিজাইন শেখেন। ২০০১ সালে তিনি চীনে ফিরে আসেন এবং ঐতিহ্যবাহী পিঞ্চ কাগজ নিয়ে কাজ করতে থাকেন।
যাদুঘরে সাংবাদিকরা লিয়াওহো ঐতিহ্যবাহী কাগজ কাটা প্রযুক্তির উত্তরাধিকারী লিউ খুন'র সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ঐতিহ্যবাহী কাগজ কাটা শিল্পের জীবনীশক্তি হল নিজের ডিজাইন। চীনা মানুষ পারিবারিক পুনর্মিলনের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়। তিনি এই চেতনা তাঁর ডিজাইনে অন্তর্ভুক্ত করেন। তাঁর শিল্পকর্ম অনেক জনপ্রিয়। এ-সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমার শিল্পকর্মে শুধু যে ঐতিহ্য আছে তা নয়, বরং নিজস্ব অনুভূতি ও ডিজাইনও রয়েছে। আমি জন্মস্থানের পাখি ও লিয়াওহো'র দৃশ্য নিজের শিল্পকর্মে অন্তর্ভুক্ত করেছি।' তিনি আরও বলেন, 'আমি শুধু ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাই। আমি সাধারণ মানুষকে কাগজ-কাটা-শিল্প শিখাই। এখন কোনো কোনো বিদেশিও আমার কাছে কাগজ-কাটা শিখতে চান। আমি সবাইকে শেখাতে চাই।'
লিয়াওহো যাদুঘরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দু দং স্যু বলেন, 'আগে আমাদের যাদুঘরে শুধু স্থিরচিত্র প্রদর্শিত হতো। কিন্তু বর্তমানে আমরা ওয়েবসাইট ও ভিডিওর ব্যবহার করছি।' তিনি বলেন, 'আসলে অধিকাংশ মানুষ অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে তেমন একটা অবগত নন। আমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে এ্ ঐতিহ্য প্রচার করি। এই প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং তা সুরক্ষায় অবদান রাখতে উত্সাহী হবেন বলে আশা করি।'