আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না যে, কয়েকটি সাধারণ খাবার এই সমস্যা সমাধান করতে পারে, যেমন: টমেটো ও আদার রস। আজকাল বাজারে একটি ওষুধও পাওয়া যায়, যা এই সমস্যা থেকে বাঁচতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। চীনে এই ওষুধটির নাম 'পাই তি ছিং'। এটি সরাসরি ত্বকে মাখতে হয়। এতে বগলের দুর্গন্ধ দূর হয়।
আসুন, এবার জেনে নিই বগলে দুর্গন্ধ সৃষ্টির কারণগুলো।
১. বংশগত কারণ
যাদের পিতা-মাতা বা পিতামাতার একজনের এ-সমস্যা আছে, তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে। এটা বংশগত কারণ। যদি পিতামাতা সংশ্লিষ্ট চিকিত্সার মাধ্যমে এ-সমস্যা থেকে মুক্তও হয়, তথাপি তাদের সন্তানের একই সমস্যা হতে পারে।
২. মানসিক কারণ
যারা বিষণ্ণতায় ভোগেন, তাদের বগলে বেশি দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া, স্নায়ুর দুর্বতলার কারণেও বগলে দুর্গন্ধ সৃস্টি হতে পারে।
৩. বয়সের ফ্যাক্টর
বগলের দুর্গন্ধ সাধারণত তরুণ-তরুণীদের বেশি ভোগায়। কারণ, তাদের শরীরে এন্ডোক্রাইন হরমোন সবল, ঘামগ্রন্থিগুলোও শক্তিশালী। তাই ব্যাকটেরিয়া সহজেই তাদের ত্বকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে।
৪. পরিবেশ ফ্যাক্টর
যারা লম্বা সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রায় কাজ করেন, তাদের শরীর থেকে স্বাভাবিকভাবে বেশি ঘাম নির্গত হয়। বিশেষ করে তাদের বগলে বেশি ঘাম হয়। সময়মতো পরিস্কার না-করলে সেখান থেকে প্রবল দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।
৫. ঘামগ্রন্থি
প্রত্যেক মানুষের আছে ঘামগ্রন্থি। সারা শরীরের ত্বকজুড়েই এই গ্রন্থি থাকে। ঘামগ্রন্থি থেকে নির্গত ঘামের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরী হয়, যা শরীরের দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে।
৬. লালা ঘামগ্রন্থি বা apocrine sweat gland
এ-ধরনের গ্রন্থি মানুষের বগল, কানের অভ্যন্তর, নাসারন্ধ্র ইত্যাদি অঞ্চলে থাকে। এসব জায়গা সবসময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে এখান থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।
বগলের দুর্গন্ধ বা ঘামের ফলে শরীরের যে-কোনো জায়গা থেকে সৃষ্টি দুর্গন্ধ আমাদের বিব্রত করে, অন্যকে বিব্রত করে। বিশেষ করে যানবাহনের ভিড়ে আপনার শরীরের দুর্গন্ধ আপনার সহযাত্রীকে, অফিসে আপনার সহকর্মীকে, বাড়িতে আপনার স্বজনদের কষ্ট দেয়। এটা যখন আপনি বুঝতে পারেন, তখন নিজেও বিব্রত হন। কখনও কখনও এ থেকে আপনার মানসিক সমস্যাও হতে পারে। অতএব, এ থেকে বাঁচতে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছিন্ন থাকবেন। যাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, তারা অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করবেন। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ভালো সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। গরমে ঢোলাঢালা কাপড় পরতে পারেন। এতে ঘাম কম নির্গত হবে। তা ছাড়া, ঝাল কম খাবেন। ঝাল খাবার আপনার ঘামের দুর্গন্ধের মাত্রা বাড়িতে দেয়।
(ওয়াং হাইমান/আলিম)