0505jingji
|
১. চীনা রফতানিপণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের যে প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন দিয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে মার্কিন অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও হাজার হাজার আমেরিকান চাকরি হারাবে। সম্প্রতি গবেষণায় এ-তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করে ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন (এনআরএফ) ও কনজুমার টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েশন (সিটিএ)।
গবেষণার ফল অনুসারে, মার্কিনি শুল্ক ও চীনা পাল্টা ব্যবস্থার কারণে আনুমানিক এক লাখ ৩৪ হাজার মার্কিন কর্মী চাকরি হারাবে, যাদের অধিকাংশই কম দক্ষ শ্রমিক। তা ছাড়া, মার্কিন কৃষকদের আয় ৬.৭ শতাংশ কমে যাবে। এতে কৃষিখাতে বেকার হয়ে যাবে ৬৭ হাজার লোক। উত্পাদন খাতেও প্রায় ১১ হাজার কর্মী চাকরি হারাবে।
গবেষণা-প্রতিবেদনে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলা হয়েছে, যদি মার্কিন সরকার তার সর্বশেষ হুমকি অনুসারে, চীনের আরও ১০,০০০ কোটি ডলারের রফতানিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি ৪৯০০ কোটি ডলার কমবে ও ৪ লাখ ৫৫ হাজার লোক চাকরি হারাবে। সেক্ষেত্রে মার্কিন কৃষকরা দ্বিগুণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং কৃষকদের আয় কমবে ১৫ শতাংশ, যার ফলে ১ লাখ ৮১ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।
গবেষণা-প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দ্বিতীয় দফায় চীনের ১০,০০০ কোটি ডলারের রফতানিপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হলে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি রাজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক, জর্জিয়া, মিসৌরি, পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, ও ওহাইওতে সবচেয়ে বেশি কর্মী চাকরি হারাবে।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন ৫০০০ কোটি ডলার মূল্যের চীনা রফতানিপণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করে। ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে চীনও ৫০০০ কোটি ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে। চীনের সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্র আরও ১০,০০০ কোটি ডলারের চীনা পণ্যের ওপর আমদানিশুল্প আরোপের হুমকি দেয়।
২. ইয়াংসি নদী অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের মাধ্যমে মানসম্পন্ন প্রবৃদ্ধি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। তিনি সম্প্রতি হুপেই প্রদেশের রাজধানী উহানে অনুষ্ঠিত ইয়াংসি নদী অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নসংক্রান্ত এক সভায় বলেন, এ-অঞ্চলের উন্নয়ন সিপিসি'র গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, নতুন পরিস্থিতিতে ইয়াংসি নদীর অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নে সামষ্টিকভাবে অগ্রগতি অর্জন করতে হবে; পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে; এবং পুরানো চিন্তাধারা বাদ দিয়ে নবত্যাপ্রবর্তনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
৩. চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের ব্যবসা-পরিবেশ উন্নততর হচ্ছে। সম্প্রতি চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অধিদফতরের এক জরিপে এ-তথ্য উঠে এসেছে। অধিদফতরের ওয়েবসাইটে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, ১৩২টি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালানো হয়। এগুলোর মধ্যে ৭৫.৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান মনে করে যে, ব্যবসা-পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে। তাদেরকে এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সামনে আগের চেয়ে কম কাগজপত্র উপস্থাপন করতে হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ৮১.৫ শতাংশ জানিয়েছে, তারা অনলাইনে সরকারি সেবা পাচ্ছে। এদের মধ্যে ৬৭.৩ শতাংশ অনলাইন সরকারি সেবায় সন্তুষ্ট।
জরিপ অনুসারে, বেইজিংয়ে ব্যবসা করার ব্যাপারে আগ্রহও বাড়ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা বেইজিংয়ে আরও এক থেকে তিন বছর ব্যবসা করবে। ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের ধারণা চলতি বছর আগের বছরের চেয়ে ভালো ব্যবসা হবে।
৪. দক্ষিণ কোরিয়ায় অনলাইনে কেনাকাটা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। মার্চে দেশটিতে অনলাইনে কেনাকাটা হয়েছে ৮.৯৯ ট্রিলিয়ন ওন (৮৩৬ কোটি মার্কিন ডলার) মূল্যের পণ্য, যা একটি রেকর্ড। এর আগের রেকর্ড ছিল চলতি বছরের জানুয়ারির; তখন বিক্রি হয়েছিল ৮.৭৯ ট্রিলিয়ন ওন মূল্যের পণ্য। মার্চের বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০.১ শতাংশ বেশি ছিল। বৃহস্পতিবার এক সরকারি প্রতিবেদন থেকে এ-তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, মার্চ মাসে অনলাইনে খাদ্যপণ্য বিক্রি বেড়েছে ৭৪.৫ শতাংশ। অন্যদিকে একইসময়ে বাসাবাড়িতে ব্যবহারযোগ্য ইলেক্ট্রনিক পণ্যের বিক্রি বেড়েছে ৪১.৬ শতাংশ।
অনলাইন কেনাকাটার মধ্যে মার্চে স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ৩১.৪ শতাংশ। মার্চে স্মার্টফোনের মাধ্যমে কেনাকাটা হয়েছে ৫.৪ ট্রিলিয়ন ওন মূল্যের পণ্য।
৫. চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জার্মানিতে শুন্য পদের সংখ্যা রেকর্ডসংখ্যক বেড়েছে। ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চ (আইএবি) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ-তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন অনুসারে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে জার্মানিতে শুন্য পদ সৃষ্টি হয় ১১ লাখ ৯০ হাজার, যা গত বছরের চেয়ে এক লাখ ২৬ হাজার বেশি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জার্মান কোম্পানিগুলোকে দক্ষ কর্মী পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। সব ধরনের কোম্পানিকেই দক্ষ কর্মীর অভাব পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে যেখানে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৯ লাখ ৩০ হাজার শুন্য পদ ছিল, সেখানে পূর্বাঞ্চলে ছিল মাত্র ২ লাখ ৬০ হাজার শুন্য পদ।
৬. বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২৭৬ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি বেইজিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুন পিং চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এবং বাকি ২৫ হাজার কোটি টাকা (৩১৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার) চীন সরকারের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। তবে প্রকল্পে চীনা ঋণের পরিমাণ যে কমে যাচ্ছে, তা মার্চের মাঝামাঝি সময়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে।
তবে শেষ পর্যন্ত চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২৭৬ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়েছে। এই অংক প্রতিশ্রুত অর্থের চেয়ে ১২.০৬ শতাংশ কম।
২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর মূল কাজ শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করে কাজ করা হচ্ছে। সড়ক-সেতুর কাজ এগিয়ে তৃতীয় স্প্যান বসলেও, পিছিয়ে পড়েছে রেল প্রকল্পের কাজ। সর্বশেষ পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।
৭. বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, আগামী ৭ জুন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হবে। বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি'র (ডিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদের সদ্যস্যদের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী এ-তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পয়ঃনিষ্কাশন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং অবকাঠামো খাতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। বর্তমান সরকার দারিদ্র্য দূরীকরণে সাফল্য দেখিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের হার প্রায় ২.৪ শতাংশ। দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণে অধিকতর মনোযোগ দিচ্ছে বলেও তিনি জানান।
মন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশের রফতানি বাড়াতে তৈরি পোশাক খাতের অবদান আরও বেশ কয়েক বছর বজায় থাকবে এবং বাইরের দেশগুলোতে চামড়াজাত পণ্য রফতানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
৮. বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংকে জনপ্রিয় করতে 'ইউপে' তৈরি করেছে ভার্চুয়াল ব্যাংক-নোট। কম্পিউটারে তৈরি এই নোট যেকোনো মূল্যের এবং সংখ্যার হতে পারে। যখন ইউপে অ্যাপে লেনদেন হবে, তখন চাহিদামতো কিউ আর কোডটি সঠিক পরিমাণের ভার্চ্যুয়াল নোটে রূপান্তরিত হবে।
২০১৭ সালে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড 'ইউপে অ্যাপ' নামে মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতির চালু করে। ইউপে ব্যবহারে সবধরনের আর্থিক লেনদেন নিরাপদ করার জন্য ব্ল্যাক চেইন ও কিউ আর (কুইক রেসপন্স কোড)-এর মতো নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হয়েছে।
(আলিমুল হক)