প্রসঙ্গ: তৃতীয় চীন-যুক্তরাষ্ট্র হোয়ারটন শীর্ষসম্মেলন
  2018-04-15 15:29:41  cri

তিন দিনব্যাপী তৃতীয় চীন-যুক্তরাষ্ট্র হোয়ারটন শীর্ষসম্মেলন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়ারটন বাণিজ্য বিভাগে শুরু হয়েছে। চীনের জাতীয় গণকংগ্রেসের বৈদেশিক কমিটির উপ-মহাপরিচালক ও সদস্য ফু ইং গতকাল (শনিবার) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের উচিত সেকেলে চিন্তাভাবনা ত্যাগ করে, সকল দেশের পাশাপাশি বসবাসের জন্য এক নতুন উপায় খুঁজে বের করা। আজকের 'সংবাদ পর্যালোচনা'য় আমরা এ-বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

হোয়ারটন শীর্ষসম্মেলনের উদ্যোক্তারা জানান, সম্মেলনের উদ্দেশ্য দেশে-দেশে ও সমাজে-সমাজে বিদ্যমান পার্থক্য নির্মূল করা নয়, বরং বৈচিত্র্যের প্রশংসা করা। এর মাধ্যমে এক সত্যিকারের চীনকে উপলব্ধি করতে পারে পশ্চিমা সমাজ। এই প্রসঙ্গে হোয়ারটন বাণিজ্য বিভাগের প্রধান জিওফ্রে গেরেট বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পরস্পরের বৈশিষ্ট্যকে সম্মান করা এবং বৈচিত্র্যকে দু'দেশের পারস্পরিকভাবে কল্যাণকর সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে চিহ্নিত করা। তিনি বলেন

"হ্যাঁ, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সত্যিই পার্থক্য আছে। তবে বাণিজ্য ও অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, আপনি এই পার্থক্যের মধ্যে উত্পাদনের শক্তি আবিষ্কার করতে পারেন। পার্থক্যের মধ্যেই পারস্পরিক সম্পূরকতা, সুবিধা ও কল্যাণ থাকতে পারে। আমি মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পার্থক্যকে দু'দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্যিক সুযোগ সৃষ্টির উত্স হিসেবে কাজে লাগানো।"

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিপিসি'র বৈদেশিক কমিটির উপ-মহাপরিচালক ও সদস্য ফু ইং বলেন,

"চলতি বছর চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার ৪০তম বার্ষিকী। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিশাল পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে চীনের মূল ভূভাগের ৩ লাখেরও বেশি ছাত্রছাত্রী যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করছে। প্রতিবছর ৩০ লাখ চীনা পর্যটক যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করে থাকে। দু'দেশ অনেক ক্ষেত্রে পরস্পরের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এতে কল্যাণ দু'পক্ষেরই।"

সদ্যসমাপ্ত বোআও এশিয়া ফোরামে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভাষণের মর্মার্থ তুলে ধরেন ফু ইং। ভাষণে চীনে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত থাকার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট সি। তিনি বলেন, চীন তার দরজা বন্ধ করবে না, বরং ক্রমশ আরও উন্মুক্ত করবে। চীনের সংস্কারনীতি ও উন্মুক্তকরণনীতি সম্প্রসারণের উদ্যোগ কীভাবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সামনে বিদ্যমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে, তা ব্যাখ্যা করেন ফু ইং।

তিনি বলেন, নিজের উন্নয়ন-লক্ষ্য বাস্তবায়নে চীনের চাই শান্তিপূর্ণ বিশ্ব। সেই সঙ্গে, বিশ্বের জন্য নিজের বড় হওয়া ও বেশি দায়িত্ব বহন করার তাগিদ অনুভব করে চীন।

হোয়ারটন বাণিজ্য বিভাগের প্রধান জিওফ্রে হেরেট এর আগে এক প্রবন্ধে লিখেছিলেন: চীন সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালুর মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই, নিম্ন পর্যায়ের ম্যানুফ্যাকচারিং দেশ থেকে বৈশ্বিক অর্থনীতির নেতৃস্থানীয় এক শক্তিতে ও নবত্যাপ্রবর্তনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী দেশে পরিণত হয়েছে। চীনের উচ্চগতির রেলপথের দৈর্ঘ্য বাকি বিশ্বের মোট দৈর্ঘ্যের চেয়েও বেশি। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় পুঁজি বিনিয়োগের মোট পরিমান ছিল ১৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। উক্ত সময়কালে চীনে এই খাতে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। অথচ ২০২০ সালে এই খাতে চীনের মোট বিনিয়োগ দাঁড়াবে ১৫,০০০ কোটি মার্কিন ডলারে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন যোগাযোগ ও সংলাপের মাধ্যমে সঠিক পথে এগুতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন তার লেখায়। এ-সম্পর্কে তিনি আরও বলেন,

"আমি মনে করি, আরও বেশি যোগাযোগ, অংশগ্রহণ, সমঝোতা ও বাণিজ্যিক বিনিময়ের মাধ্যমে দু'দেশ আরও বেশি উপকৃত হতে পারে।" (ওয়াং হাইমান/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040