চীনের 'টয়লেট বিপ্লব' নিয়ে সিপিপিসিসি'র নারী সদস্যদের প্রস্তাব
  2018-04-10 09:58:33  cri

 


সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সবাই ভালো আছেন? সুদূর বেইজিং থেকে আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই) বাংলার নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠান। আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি সুবর্ণা ও টুটুল।

বন্ধুরা, সম্প্রতি বেইজিংয়ে চীনের গুরুত্বপূর্ণ 'দুই অধিবেশন' অর্থাত্ জাতীয় গণকংগ্রেস (এনপিসি) ও গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি) আয়োজিত হয়। এতে চীনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কে ব্যাপক পরামর্শ ও প্রস্তাব পেশ করেন এনপিসি ও সিপিপিসিসি'র প্রতিনিধি ও সদস্যরা। আজকের অনুষ্ঠানে তাঁদের কিছু প্রস্তাব তুলে ধরবো।

১. শিক্ষাদানের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের জীবনযাপনের পরিবর্তন করতে হবে: এনপিসি'র নারী প্রতিনিধি

চীনের ত্রয়োদশ এনপিসি'র প্রতিনিধি, কুইচৌ প্রদেশের মিনজু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা একাডেমির উপ-প্রধান ম্যাডাম চেং লি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে শিক্ষাদানের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তনের গল্প তুলে ধরেন।

৪৯ বছর বয়স্ক চেং লি চীনের কুইচৌ প্রদেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় খাইলি শহরের মিয়াও জাতির গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যখন ছোট তখন তাঁর গ্রামের কয়েক জন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষক হন। এই ঘটনা তাঁকে উত্সাহিত করে। তাঁর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার ভীষণ ইচ্ছা তৈরি হয়। পরে তিনি কুইচৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও কুইচৌ নর্ম্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি ব্রিটেনের লুটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ও চীনের সাউথওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। মিয়াও জাতির গ্রাম থেকে বিশ্বে লেখাপড়ার দারুণ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি। এতে তিনি ব্যাপকভাবে জীবনের সুখ অনুভব করেন। তিনি বলেন,

'আমার ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিলো প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা হবো। পরে বড় হওয়ার পর নিজের প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হই।'

চেং লি দূর দূরান্তের পাহাড়াঞ্চল থেকে শহরে এসে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তাই জন্মস্থানের শিক্ষা উন্নয়নের ওপর ভীষণ মনোযোগী তিনি। এনপিসি'র প্রতিনিধি হিসেবে নিয়মিতভাবে গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শন করেন তিনি এবং গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাদানের ওপর গুরুত্ব দেন। এনপিসি'র প্রতিনিধি হওয়ার প্রথম বছরে তিনি 'গ্রামের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে আলোর পরিবেশ উন্নতি সম্পর্কে প্রস্তাব' পেশ করেন। তিনি বলেন,

'মূলত গ্রাম ও জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের ক্লাসরুমগুলোতে যে আলো তা যথেষ্ট নয়। কিছু কিছু ক্লাসরুমে এলইডি বাতি ব্যবহার করা হয়েছে, তবে তা যথেষ্ট উজ্জ্বল নয়। জেলায় স্কুলের অবকাঠামো অনেক উন্নত, সেজন্যে এ বিষয়ে ব্যাপক মনোযোগ দরকার। বাচ্চাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর মনোযোগ দিতে হবে।'

প্রতিনিধি চেং আরো বলেন, তিনি এনপিসি'র একজন প্রতিনিধি, আবার তিনি পেশায় একজন শিক্ষিকা। 'দুই অধিবেশন' শেষে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধেক বছরের মতো স্কলার হিসেবে গবেষণা করবেন। আগামী ৫ বছরের জন্য দুটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন তিনি। তিনি বলেন,

'আমার পরিচয় শিক্ষিকা ও সংখ্যালঘু জাতির প্রতিনিধি। তাই চীনের সংখ্যালঘু জাতির অধ্যুষিত এলাকার শিক্ষাদান কর্মে অবশ্যই কিছু সাফল্য অর্জন করতে হবে। চীনা গল্প তুলে ধরা আর চীনের শ্রেষ্ঠ কণ্ঠ সম্প্রচার করা আমার আগামী ৫ বছরের প্রধান দায়িত্ব।'

২. চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার এনপিসি'র প্রতিনিধির নারীদের টয়লেট সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব

চলতি বছর 'দুই অধিবেশন' চলাকালে চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার এনপিসি'র প্রতিনিধি থিয়ান বেই ছেন এনপিসি'র স্থায়ী কমিটির কার্যালয়ের কাছে একটি বিশেষ প্রস্তাব দাখিল করেন। এর মূল বিষয় চীনের মূলভূভাগে নারী ও পুরুষের টয়লেটের অনুপাত বাড়িয়ে দেওয়া। এ অনুপাত পুরুষ ১, নারী ২ করার প্রস্তাব দাখিল করেন তিনি।

চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার প্রতিনিধি থিয়ান বলেন, গত কয়েক মাসে হংকংয়ের বিভিন্ন মহলের নারী সমিতির কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন, মূলভূভাগে নারী ও পুরুষের টয়লেট সংখ্যায় গুরুতর ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। হংকংয়ের বিভিন্ন মহলের নারী সমিতি গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিতভাবে মূলভূভাগ সফর করেন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁরা দেখেছেন, মূলভূভাগ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, রেস্তোরাঁ ও ফিলিং স্টেশনগুলোতে নারীদের টয়লেটের বাইরে লম্বা লাইন তৈরি হয়, মাঝে মাঝে নারীরা পুরুষদের টয়লেট ব্যবহার করেন।

প্রতিনিধি থিয়ান গবেষণার মাধ্যমে জানতে পারেন, চীনের পাবলিক টয়লেট নির্মাণের মানদণ্ড নিয়ে বাধ্যতামূলক কোনো নীতি চালু হয় নি। চীনের বিভিন্ন শহরের মধ্যে শুধু কুয়াংতুং প্রদেশের চুহাই শহরে নারীর টয়লেট সংখ্যা সম্পর্কে স্পষ্ট নীতিমালা রচনা করা হয়েছে। ২০১৩ সালে প্রকাশিত চীনের ৯টি শহরের নারী ও পুরুষের টয়লেট সংখ্যার তদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, চীনের ৯টি বড় শহরে পুরুষ ও নারীর টয়লেট সংখ্যা ১ অনুপাত ১.১৫ পরিমাণে দাঁড়ায়নি। সবচেয়ে দুর্বল কুয়াংচৌ শহরে পুরুষ ও নারীর টয়লেট রুম ১.৭৯ অনুপাত ১।

এ সম্পর্কে প্রতিনিধি থিয়ান মনে করেন, টয়লেট সমস্যা জনগণের মূল চাহিদা ও চীনের রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তির সাথে জড়িত। থিয়ান উদাহরণ দিয়ে বলেন, ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিক গেমস চলাকালে বেইজিং তিথান পার্কের বাইরে ৬০টি অস্থায়ী টয়লেট কক্ষের মধ্যে পুরুষ ও নারীর কক্ষ সংখ্যা ১ অনুপাত ১ থেকে ১ অনুপাত ৪-এ পরিণত হয়। ২০১০ সালে শাংহাই বিশ্ব মেলায় সভাকক্ষের ভিতরে পুরুষ ও নারীর টয়লেট সংখ্যা ছিলো ১ অনুপাত ২.৫। তবে শহরাঞ্চল আর নাগরিকদের আবাসিক এলাকা ও বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানে এ সমস্যা স্পষ্টভাবে উন্নত হয় নি।

এর সঙ্গে সঙ্গে হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। ২০০৪ সাল থেকে হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার সরকার নারী ও পুরুষের টয়লেট ১.৫ অনুপাত ১ থেকে ২ অনুপাত ১-এ উন্নীত করে। পাশাপাশি নারী ও বাচ্চাদের চাহিদা বিবেচনা করে টয়লেট কক্ষের ভিতরে বিভিন্ন শেল্ফ, হুক ও শিশুর ডায়াপার পরিবর্তনের জায়গা স্থাপন করে। এ পর্যন্ত হংকংয়ের ৯০ শতাংশেরও বেশি টয়লেটে এমন ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে।

প্রতিনিধি থিয়ান আরো বলেন, চীনের মূলভূভাগে নারীর সংখ্যা ৬০ কোটিরও বেশি। দেশ বিদেশের বিনিময় আর আন্তর্জাতিক অবস্থান উন্নীত হওয়ার সাথে সাথে চীনে আসা পর্যটকের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। চীনের সভ্য ভাবমূর্তি ও জনগণের চাহিদা বিবেচনা করে নারী ও পুরুষের টয়লেট সংখ্যা ২ অনুপাত ১-এ উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি, যাতে নারীদের এ বাস্তব সমস্যা সমাধান করা যায়।

বন্ধুরা, টয়লেট বিপ্লব হল সম্প্রতি দুই অধিবেশনে গ্রামের সঞ্জীবনীশক্তি পুনরুদ্ধার কৌশলের উত্থাপিত এক বিষয়। আসলে এমন সমস্যা শুধু গ্রামাঞ্চলেই রয়েছে তা নয়, চীনের শহরাঞ্চলেও এমন কিছু সমস্যা আছে। তাই এ বিষয়টিতে এনপিসি ও সিপিপিসিসি'র সদস্যরা ব্যাপক মনোযোগ দেন।

এখন আমরা এ বিষয়ে সিপিপিসিসি'র সদস্যদের উত্থাপিত কিছু প্রস্তাব তুলে ধরবো।

দুই অধিবেশন চলাকালে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং সরকারি কার্যবিবরণীতে গ্রামের সঞ্জীবনীশক্তি পুনরুদ্ধার কৌশল সম্পর্কে পরিচয় দেওয়ার সময় বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, গ্রামাঞ্চলের আবাসিক পরিবেশের উন্নয়ন ও পরিবর্তনে তিন বছর মেয়াদি কার্যক্রম চালু করতে হবে এবং টয়লেট বিপ্লব বাস্তবায়ন করতে হবে। এ মতামত ব্যাপকভাবে সবার সমর্থন পেয়েছে। সিপিপিসিসি'র নারী সদস্য ম্যডাম উ চিং এ বিষয়ে ব্যাপক গুরুত্বারোপ করেন। এবারের অধিবেশনে তিনি 'টয়লেট বিপ্লবকে গ্রামের সভ্যতা বাস্তবায়নের দ্রুততর পদ্ধতিতে পরিণত করা' নামে এক প্রস্তাব পেশ করেন। তিনি কেন এ বিষয় নিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন? এ সম্পর্কে ম্যাডাম উ তাঁর মন্তব্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

'আমি তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি। তাই চীনা নাগরিকদের সাধারণ জীবনের সাথে জড়িত বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেই আমি। টয়লেট সমস্যা দেখতে ক্ষুদ্র, তবে আসলে তা গণজীবিকার সাথে জড়িত একটি বড় ঘটনা। 'টয়লেট বিপ্লব' সিপিসি'র সাধারণ সম্পাদক ও দেশের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উদ্যোগ। শহর ও গ্রামাঞ্চলে পাবলিক টয়লেটের কাঠামো ভারসাম্যহীন ও অসম্পূর্ণ। গ্রামাঞ্চলের অনেক টয়লেট এখনও প্রাকৃতিক আকারের।'

ম্যাডাম উ'র প্রস্তাবে চারটি মতামত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শীর্ষ পর্যায়ের পরিচালনা জোরদার করা, ছোট টয়লেটের প্রশাসন ও উন্নতির মধ্য দিয়ে শহর ও গ্রামের পরিবেশের উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা। নির্দিষ্টভাবে সরবরাহ করা, ইন্টারনেট, বিগ ডেটাসহ নতুন প্রযুক্তিতে অব্যাহতভাবে টয়লেট তথ্যায়ন ও প্রশাসনিক মান উন্নীত করা। টয়লেটের সাংস্কৃতিক উপাদানসহ ডিজাইন বাস্তবায়ন করা, যাতে আঞ্চলিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য এ বিশেষ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা যায় এবং শহর ও গ্রামের সভ্যতা ও পরিবেশের গুণগতমান উন্নীত করা যায়। তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অভিজ্ঞতা থেকে শ্রেষ্ঠ বিষয় বয়ে এনে বিজ্ঞান প্রযুক্তির নব্যতাপ্রবর্তন ও সবুজ পরিবেশ সংরক্ষণ করে টয়লেট শিল্পের উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা যায়।

আসলে ২০১৩ সালের দুই অধিবেশনে তিনি এমন প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। এ সম্পর্কে ম্যাডাম উ বলেন,

'সিপিসি, সরকার ও চীনা জনগণের ব্যাপক মনোযোগী বিষয়কে আমাদের গবেষণার মূল বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। টয়লেট বিপ্লব এর মধ্যে একটি। একটি বিষয় ঠিক করার পর বিভিন্ন গবেষণা শুরু করতে হবে, তা না করলে মতামত প্রকাশের কোনো অধিকার নেই। আমরা শুধু অফিসে বসে খালি মুখে এমন কথা বলতে পারিনা, আমাদের গবেষণা করতে হবে। সিপিপিসিসি'র সদস্য হিসেবে অবশ্যই ভালভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে।'

চীনের চেচিয়াং প্রদেশের সিপিপিসিসি'র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ম্যাডাম উ চিং বলেন, তিনি চলতি বছর টয়লেট সমস্যার সমাধানকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বেইজিংয়ে দুই অধিবেশনে অংশ নেওয়ার আগে তিনি অন্যান্য সদস্যদের সাথে এ বিষয় নিয়ে বহু গবেষণা করেন। প্রস্তাব রচনা সম্পর্কে তিনি বলেন,

'এ প্রস্তাবের প্রস্তুতিতে সদস্যদের সাথে অনেক টয়লেট পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন টয়লেটের সমস্যা দেখে তৃণমূল পর্যায়ের নাগরিক ও কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করি। ব্যাপকভাবে তাদের মতামত শুনি ও অনেক সেমিনার আয়োজন করি। অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা ব্যাপক ও প্রতিনিধিত্ব মতামত পেশ করেন। সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে মতামত শোনার পর সার্বিকভাবে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হই।'

উ চিং আরো বলেন, টয়লেট সমস্যাকে যদিও অনেকে ছোট সমস্যা হিসেবে মনে করে, তবে তা বিভিন্ন বিভাগের সাথে জড়িত। তিনি বলেন,

'প্রস্তাবের মধ্যে বিষয় ও সমস্যা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পরামর্শ দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এ সমস্যা সমাধানে প্রস্তাব করেছি। কারণ এ প্রস্তাব শুধু একটি বিভাগের সাথে জড়িত নয়। এ সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন বিভাগের যৌথ উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। গ্রামের টয়লেট গ্রামের প্রশাসনিক কার্যালয়ের শাসনে, দর্শনীয় স্থানের টয়লেট পর্যটন বিভাগের সাথে জড়িত। টয়লেট সভ্যতা তৈরি করা সংস্কৃতি বিভাগের দায়িত্ব আর টয়লেটের স্বাস্থ্যকর মানদণ্ড পরীক্ষা জনস্বাস্থ্য বিভাগের সাথে জড়িত।'

গত ৫ বছরের মধ্যে উ চিং মোট ২৪টি প্রস্তাব দিয়েছেন। টয়লেট সমস্যা ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণ আর ইন্টারনেট কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। এসব প্রস্তাব সিপিপিসিসি'র গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে এবং চীনের চেচিয়াং প্রদেশে 'ক্ষুদ্র ঋণ কোম্পানি থেকে গ্রাম ও জেলার ব্যাংকে রূপান্তর প্রস্তাব' রাষ্ট্রীয় পরিষদের নির্দেশনা পেয়েছে। তিনি বলেন,

'সিপিপিসিসি'র সদস্যদের প্রস্তাব অবশ্যই সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উত্তর পাবে। বিভিন্ন সরকারি বিভাগ প্রস্তাব পেয়ে কম সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করার জন্য পদক্ষেপ নেবে এবং বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি বিভাগ প্রস্তাবের বাস্তবায়নে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে।'

চলতি বছর ত্রয়োদশ সিপিপিসিসি'র সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন উ চিং। এতে তিনি অনেক গৌরব বোধ করেন, আর কাঁধে বড় দায়িত্ব অনুভব করেন। তিনি বলেন,

'প্রেসিডেন্ট সি সিপিপিসিসি'র প্রত্যেক সদস্যকে ভালভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমি তৃণমূলের কণ্ঠ সিপিপিসিসি'র ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সরকারি বিভাগে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে থাকি। প্রতি বছরের দুই অধিবেশনে জনগণের ইচ্ছাকৃত মতামত তুলে ধরি আর প্রস্তাব ও পরামর্শ দেই। দুই অধিবেশন ছাড়া সিপিপিসিসি'র সদস্যরাও সরকারি বিভাগের কাছে পরামর্শ জমা দিতে সক্ষম, যাতে সবসময় তৃণমূলের বাস্তব কণ্ঠ শোনা যায়। সিপিপিসিসি'র একজন সদস্য হিসেবে আমি অনেক গর্বিত।' সাক্ষাত্কার শেষে তিনি সিআরআইয়ের সাংবাদিককে জানান,

'চীনের একটি প্রবাদে বলা হয়, পরিষ্কার নদী দেখতে চাইলে দরকার শ্রেষ্ঠ উত্স। সিপিপিসিসি'র সদস্য হিসেবে জনগণের মধ্যে প্রবেশ করে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও মতামত সংগ্রহ করতে হবে, এতে পরে সরকারকে নির্দিষ্ট প্রস্তাব ও ভালো পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হবে।'

সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সময় দ্রুত চলে যায়, আজকের বিদ্যাবার্তা অনুষ্ঠানও তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে এলো। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn

তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে একই সময়, একই দিনে আবারো কথা হবে। চাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040