প্রথম 'এক অঞ্চল, এক পথ' চীনা শিল্পীদের আফ্রিকা সাংস্কৃতিক সফরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২১ মার্চ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, কেনিয়ার বিখ্যাত নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেনিয়া-চীন সাংস্কৃতিক বিনিময় অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এবারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। সিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুল এবং চীনের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিল্পীদের নিয়ে এবারের সফর দল গঠিত হয়েছে।
চীনের শিল্পী-প্রতিনিধি দলের পরিচালক চু কুই চৌ বলেন, "এক অঞ্চল, এক পথ' গভীর ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। এর মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে চীনের চমৎকার ঐতিহ্যগত সংস্কৃতির মোহিনীশক্তি তুলে ধরা যায়। এবারের সাংস্কৃতিক সফরের প্রধান লক্ষ্য হলো কেনিয়ার সমাজের বিভিন্ন মহলের সাথে ব্যাপক সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক বিনিময় উন্নয়ন করা, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য জনগণের মতামতের মজবুত ভিত্তি গভীর করা।"
পরিকল্পনা অনুসারে, মার্চ মাসের শেষ দিকে সাংস্কৃতিক বিনিময় সফর দল কেনিয়ায় গিয়ে চীনের সহায়তাপুষ্ট আফ্রিকা প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করবে।
বন্ধুরা, 'এক অঞ্চল, এক পথ' চীনা শিল্পীদের আফ্রিকায় সাংস্কৃতিক সফর নিয়ে সাংস্কৃতিক খবরটি শুনলেন। এবারে রয়েছে "বোলোনে আন্তর্জাতিক শিশু-বই মেলা"র খবর।
ইতালির বোলোনে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কোম্পানির আমন্ত্রণে অতিথি দেশ হিসেবে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে ইতালির বোলোনের প্রদর্শনী কেন্দ্রে ৫৫তম বোলোনে আন্তর্জাতিক শিশু-বই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। চীনের শিশু প্রেস ও প্রকাশনা কর্পোরেশন এবং চীনের বই আমদানি ও রপ্তানি (গ্রুপ) কর্পোরেশন যৌথভাবে এবারের বইমেলা আয়োজন করে।
ইতালি যাওয়ার আগে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চীনের বেতার, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রশাসনের আমদানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক জাও ইয়ুন হাই, চীনের শিশু প্রেস ও প্রকাশনা কর্পোরেশনের পরিচালক লি স্যুই ছিয়েনসহ সংশ্লিষ্টরা প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা এবারের বইমেলার সার্বিক অবস্থা উপস্থাপন করেছেন।
এবারের ইতালির বোলোনে আন্তর্জাতিক শিশু-বই মেলায় চীনের প্রদর্শনী হলের মোট আয়তন ৯'শ বর্গমিটার। চীনের প্রদর্শিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার।
প্রদর্শনী হলের বিভিন্ন বই ছাড়াও চীনের শিশু প্রেস ও প্রকাশনা কর্পোরেশনের ধারাবাহিক আকর্ষণীয় কার্যক্রম পরিকল্পনা করেছে। যেমন চীনের শিশু-বই বাজারের উন্নয়ন রিপোর্টিং সম্মেলন, মূল চিত্র প্রদর্শনী, ধারাবাহিক ফোরাম, নতুন বইয়ের প্রকাশনা সম্মেলন, চীন-বিদেশী শিশুদের সাহিত্য লেখক বিনিময় ইত্যাদি।
ইতালীর বোলোনের আন্তর্জাতিক বই মেলা হলো বিশ্বের বৃহত্তম, সর্বাধিক অনুমোদিত, প্রভাবশালী শিশু সাহিত্যের বার্ষিক বই মেলা। এ বইমেলা প্রতি বছর শিশু-বই প্রকাশনা খাতের উচ্চ পর্যায় ও পেশাদার শিল্পের সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করে।
-- "আমি চীন ভালবাসি, আমি ফিলিস্তিন ভালবাসি'--ফিলিস্তিনের বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বারের মত চীনা সংস্কৃতি প্রচার কার্যক্রম অনুষ্ঠান--
ফিলিস্তিনের বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২ মার্চ প্রথমবারের মত চীনা সংস্কৃতি প্রচার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এবারের কার্যক্রমের উদ্যোক্তা স্যু লি কুও ছিলেন ফিলিস্তিনে এসে কাজ করার প্রথম দলের একজন সরকারী চীনা ভাষা শিক্ষক। তিনি বলেন,
"আমি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফিলিস্তিনে এসেছি। গত এক বছরে আমার প্রধান কাজ হলো চীনা সংস্কৃতির প্রচার। গত বছর প্রায় ৩'শ ছাত্র-ছাত্রী চীনা ভাষা ক্লাসে অংশ নিয়েছে। আমরা আশা করি এবারের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁরা চীনা সংস্কৃতি আরো ভালভাবে জানতে পারবে।"
বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয় জর্দান নদীরের পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লাহর উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষা বিষয়ক সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পর্যায়ের প্রত্যাশা আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক শিক্ষকদের চীনে পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীগুলোতে অংশ নেয়। ফিলিস্তিনে চীনের কার্যালয়ও বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়কে বই অনুদান দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি আমির খলিল বলেন,
"দু'বছর আগে আমরা চীনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে একটি সিদ্ধান্ত নেই যে, চীন একজন চীনাভাষা শিক্ষক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ভাষা শিক্ষাদান করবেন।" অনেক ছাত্র-ছাত্রী চীনাভাষা কোর্সে বেশ আগ্রহী।
মাহের আলী নামে একজন ছাত্র এদিনের অনুষ্ঠানে চীনা ভাষা শেখা সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,
"আমার একটি চীনা নামও আছে—কুও সিয়াং। আমার শিক্ষক চীন থেকে এসেছেন। চীনের ৫ হাজারেরও বেশী বছরের ইতিহাস আছে। তাছাড়া চীন একটি আধুনিক দেশ। আজকের অনুষ্ঠানে আমি প্রথমবারের মত লিখার তুলি নিয়ে 'আমি চীন ভালবাসি, আমি ফিলিস্তিন ভালবাসি' লিখেছি। আমি নিজের জন্য অনেক গর্ব বোধ করি।"
শিক্ষক স্যু ২০১১ সালে তাঁর শিক্ষাদান কাজ শুরু করেন। আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনে শিক্ষক হিসেবে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। এটি তাঁর তৃতীয়বারের মতো বৈদেশিক চাকরি।
বন্ধুরা, এবারে রয়েছে দু'টি সংক্ষিপ্ত খবর।
২০১৭ সালে চীন ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক পেটেন্ট আবেদনকারী দেশ। এ-ক্ষেত্রে প্রথম স্থানে রয়েছে যথারীতি যুক্তরাষ্ট্র। চীনের 'হুয়া ওয়ে' ও 'চুং সিং' কোম্পানির পেটেন্ট-আবেদনের সংখ্যা চীনা আবেদনকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থার সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র মোট ৫৬ ৬০০ (ছাপ্পান্ন হাজার ছয়শটি) আন্তর্জাতিক পেটেন্ট-আবেদন জমা দেয়। পেটেন্ট আবেদনের সংখ্যার দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জাপান।
'চীন আন্তর্জাতিক সেবা ও পুনর্বাসন এক্সপো, ২০১৮' ১১ থেকে ১৩ অক্টোবর বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এক্সপোর এবারের প্রতিপাদ্য হল 'নতুন যুগ, নতুন শিল্প, নতুন সুযোগ'। চীনা প্রতিবন্ধী ফেডারেশনের একজন কর্মকর্তা জানান, এবারের এক্সপো আয়োজিত হবে ২৫০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে। দেশ-বিদেশের ৩৫০টিরও বেশি ব্র্যান্ড এতে অংশ নিবে, যা একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে।
এবার প্রথমবারের মত এক্সপোতে বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য প্রদর্শিত হবে। এক্সপোকে ৮টি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে।
বন্ধুরা, বিশ্বের সাংস্কৃতিক পর্ব এখানে শেষ। এখন শুনুন আমার সহকর্মী মহসীনের উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক পর্ব।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/মহসীন)