0312topic
|
'দুই অধিবেশন'-এ মূলত দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, জনগণের জীবনমান, সংস্কার, উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়; গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলতি বছর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত হয়েছে। আর সেটি হল চীনের সংবিধান সংশোধন। গতকাল (রোববার) বিকেলে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেস-এনপিসির প্রথম সম্মেলনের তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সংবিধান সংশোধনের খসড়া প্রস্তাব ভোটাভুটির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।
'আজকের টপিক' অনুষ্ঠানে আমরা এ-বিষয়টি নিয়েই মূলত আলোচনা করব।
সংবিধানের সংশোধন যে-কোনো দেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সংবিধান দেশের মৌলিক আইন ও রাষ্ট্রপ্রশাসনের মূল ভিত্তি। তবে সংবিধান অপরিবর্তনীয় নয়; দেশের উন্নয়ন ও পরিস্থিতির স্বার্থে সংবিধানও পরিবর্তিত হয়ে থাকে। চীনের বর্তমান সংবিধান ১৯৮২ সালে কার্যকর হওয়ার পর, ১৯৮৮, ১৯৯৩, ১৯৯৯, ২০০৭ সালে সংশোধন করা হয়েছে। এ-বারের সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব, দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিমালা যুক্ত হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে নতুন যুগে চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের উন্নয়নে শক্তিশালী সাংবিধানিক নিশ্চয়তা দেওয়া হল।
এ-বারের সংবিধান সংশোধন খসড়ায় মোট ১১টি অধ্যায়ে ২১টি বিষয় ছিল। এদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল:
১. দেশের রাজনীতি ও সমাজ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত উন্নয়ন তত্ত্ব ও নতুন যুগে সি চিন পিংয়ের চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নির্ধারণ;
২. চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের কৌশল ও 'দু'টি শতবছরের লক্ষ্য' (১. সিপিসি প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি হবে ২০২১ সালে। লক্ষ্য হচ্ছে, এই সালের মধ্যে চীনকে সার্বিকভাবে সচ্ছল গড়ে তোলা। ২. আর নয়াচীন প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি হবে ২০৪৯ সালে। লক্ষ্য হচ্ছে, এই সালের মধ্যে চীনকে একটি সমৃদ্ধ, সভ্য, সুষম দেশ হিসেবে গড়ে তোলা।);
৩. সার্বিকভাবে আইন অনুসারে দেশ প্রশাসন করা ও সংবিধানের বাস্তবায়নকাজ আরও উন্নত করা;
৪. দেশের প্রেসিডেন্টের কার্যমেয়াদসংক্রান্ত নিয়ম সংশোধন;
৫. দেশের শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক নীতির উল্লেখ;
৬. সমাজতান্ত্রিক কেন্দ্রীয় মূল্যবোধসংক্রান্ত বিষয় সংবিধানে যোগ করা;
৭. দেশের তত্ত্বাবধান ব্যবস্থাকে আইনগত ভিত্তি দেওয়া; ইত্যাদি।
এ-বারের সংবিধান সংশোধনের আগে ব্যাপকভাবে জনগণের মতামত গ্রহণ করা হয়। এ-উপলক্ষে জনগণের কাছ থেকে মোট ১১৮টি প্রতিবেদন ও ২৬৩৯টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে। সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আনুষ্ঠানিক ভোটাভুটির আগে, বার বার বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।
(তুহিনা/আলিম)