হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পের একমাত্র সুপার স্টার নায়িকা শ্রীদেবীর আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে তদন্তে আপাতত ভাটা পড়লেও রহস্যের গন্ধ পুরোপুরি মুছে যায়নি।
দীর্ঘ ৩০ বছরের বন্ধু, বলিউডের বাণিজ্য বিশ্লেষক কমল নাহতার কাছে স্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলেছেন শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর। মাইক্রো ব্লগ টুইটারে কমল তা সবাইকে জানিয়েছেন। শ্রোতা বন্ধুদেরকে আমারা শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তাদের দুজনের এই কথা বার্তা জানাব।
কমলের ভাষ্য অনুযায়ী, মুম্বাই ফিরে এসে স্ত্রীকে চমকে দিতে ফের দুবাই গিয়েছিলেন বনি।
অপ্রত্যাশিতভাবে কীভাবে আবার বাথটাবে শ্রীদেবীর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পেলেন, সেই সমস্ত কথাই কমল নাহতাকে বলেছেন বনি।
কমল লিখেছেন, "বারবার শ্রীদেবীকে ডেকে সাড়া না পাওয়ায় বনি বাথরুমের দরজায় টোকা দেন। বাথরুমের দরজা ঠেলা দিতেই খুলে যায়, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল না। তখন রাত ৮টা।"
দুবাইয়ের জুমেইরাহ এমিরেটস টাওয়ার হোটেলের ২২০১ নম্বর ঘরে তাদের কথা হওয়ার প্রায় দু'ঘণ্টা পরের এই ঘটনা, জানিয়েছেন কমল।"
বনি কমলকে বলেছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শ্রীদেবীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তখনও তিনি তাকে জানাননি যে বিকালেই দুবাই যাচ্ছেন।"
বনি কাপুর আরও বলেছেন, মেয়ে জাহ্নবীও তাঁর দুবাই যাওয়াকে সমর্থন করেছিল, কারণ সেও তার মায়ের বিষয়ে বেশ চিন্তা করতো। কখনওই মা'কে একা ছাড়তে চাইতো না।
তিনি জানান, বিদেশে এই প্রথম শ্রীদেবী ২২ এবং ২৩ তারিখ একা ছিল।
বনির কথা অনুযায়ী কমল আরও লিখেছেন, "২৪ তারিখ দুপুর সাড়ে তিনটার বিমানে বনি দুবাই যান, হোটেলে পৌঁছায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ। ডিনারের প্রস্তাব দেন শ্রীদেবীকে। এরপর গোসলের জন্য হোটেলের বাথরুমে ঢোকে শ্রীদেবী।"
বনির কথা মতো, তিনি সেইসময় বেডরুমে ক্রিকেট ম্যাচ দেখছিলেন। ২০ মিনিট পরেও শ্রীদেবী না বেরোলে তিনি জোরে জোরে ডাকতে থাকেন। তখন রাত্রি ৮টা ।
"এরপর বনি বাথরুমের দরজা ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়। ডাকতে ডাকতে বাথরুমের ভেতরে ঢোকে বনি। ভেতরে ঢুকে বনি দেখতে পায় বাথটাব পানিতে পূর্ণ হয়ে আছে। শ্রীদেবীর দেহ পানিতে ডুবে রয়েছে। তার মাথাও ডুবে ছিল। সঙ্গে সঙ্গে বনি শ্রীদেবীকে তোলেন কিন্তু তখন শ্রীদেবীর কোনো সাড়া ছিল না।
কমল নাহতার ভাষ্যে, "শ্রীদেবী প্রথমে অজ্ঞান হয়ে পড়ে তারপর ডুবে যায়, নাকি ডুবে গিয়ে জ্ঞান হারায়, একথা কেউই জানে না। আমাদের ধারণা, শ্রীদেবী বাঁচার জন্য শেষ চেষ্টায় হাত-পা ছোঁড়ারও সুযোগ পায়নি। কারণ বাথটাবের আসেপাশে একবিন্দুও পানি পড়ে ছিল না।"
শ্রীদেবীর অগণিত ভক্তর মত আমরাও আন্তরিক শোক প্রকাশ করছি। এটি যদি দুর্ঘটনার কারণে ঘটে থাকে সেটি নিতান্তই দুর্ভাগ্য। কিন্তু যদি অন্য কিছু ঘটে থাকে অন্য সবার মত আমরাও আশা করব প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হবে।
মর্যাদাসম্পন্ন কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র 'মেঘে ঢাকা'। উৎসবের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের শর্ট ফিল্ম কর্নারের ক্যাটালগে যুক্ত হয়েছে এর সংক্ষিপ্ত তথ্য ও পোস্টার।
'মেঘে ঢাকা'র ইংরেজি নাম 'লাইফ উইদাউট সান'। এটি পরিচালনা করেছেন মনজুরুল আলম। গল্প আর চিত্রনাট্যও তারই।
বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, একটি মানবিক গল্পের মাধ্যমে সেই বার্তা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এই চলচ্চিত্রে।
১১ মিনিট ব্যাপ্তির এ ছবির মূল চরিত্র সুবিধাবঞ্চিত শিশু হাবু। সে গ্রামের তাঁত শ্রমিক। পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবাকে নিয়েই তাঁর পৃথিবী। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে তাঁত শিল্প এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
গ্রামে বেঁচে থাকার অবলম্বন না দেখে বাবাকে নিয়ে হাবু কাজের সন্ধানে ঢাকায় আসে। কিন্তু শহরে এসেও রোদ্দুরের দেখা মেলে না হাবুর। রাজধানীতেও বাবাকে নিয়ে নতুন ঝড়ের মুখোমুখি হয় সে। ঝড় ও রোদকে প্রতীক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে স্বল্প দৈর্ঘ্য এই চলচ্চিত্রে।
ছবিটির শ্যুটিং হয়েছে পাবনার আটগরিয়া, হাতিরঝিল, তেজগাঁও রেল স্টেশন, ফার্মগেইটসহ বিভিন্ন স্থানে।
কানের শর্ট ফিল্ম কর্নারে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট দৈর্ঘ্যের ছবিগুলি দেখানো হয়। এর মাধ্যমে নির্মাতাদের সামনে নতুন দুয়ার খোলে। ফিল্ম প্রফেশনালদের সঙ্গে তাদের ভাবনার আদান-প্রদান হয়।
সফল কিক বক্সার থেকে পশ্চিমা সংগীতে নাম লেখানো আলী জ্যাকো এবার বাংলা গান নিয়ে হাজির হয়েছেন। গত বুধবার প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রথম বাংলা গান। তাঁর প্রথম প্রকাশিত একক গান 'গিভ মাই লাভ আ ব্র্যান্ড নিউ নেম'-এর বাংলা সংস্করণ এটি। এর আগে পূর্ব লন্ডনের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন গানের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি নিজের ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা তুলে ধরেন হুট করে সংগীতের ভুবনে পা রাখা এই শিল্পী।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের এই গায়ক জানান, একান্ত শখের বশে হঠাৎ চিন্তা থেকে গান শুরু করেন তিনি। মূলত ইংরেজি গান নিয়ে কাজ করছেন। তবে পিতৃভূমি বাংলাদেশের শ্রোতাদের জন্য সময়-সময় বাংলা গান নিয়ে হাজির হবেন। একই সঙ্গে 'আই ফাউন্ড লাভ' নামে তাঁর একটি ইংরেজি গানও বাজারে ছাড়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পক্ষে পাঁচবার 'বিশ্ব কিক বক্সিং চ্যাম্পিয়ন' আলী জ্যাকো বলেন, এ বছর ১১ মাসে ১১টি ইংরেজি গান মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। গানগুলোর কাজ এগোচ্ছে। প্রতিটি গানের সঙ্গে থাকবে মিউজিক ভিডিও।
অ্যালবাম বের করার পরিবর্তে একক গান মুক্তির ব্যাপারে জ্যাকো বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণে অ্যালবাম এখন আর কেউ কেনে না। মানুষ নিজের পছন্দমতো গান বেছে নেয়। যে কারণে অ্যালবাম করার বদলে একক গানের প্রতি জোর দিচ্ছেন তিনি।
ইউটিউব, আইটিউনসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া যাবে আলী জ্যাকোর গানগুলো।
বাংলা গানের অডিও প্রকাশের আরও খবর। ৩ মার্চ ইন্টারনেটে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড মেঘদল-এর তৃতীয় অ্যালবাম 'অ্যালুমিনিয়ামের ডানা'র প্রথম গান 'এসো আমার শহরে'। গানের গীতিকার ও সুরকার শিবু কুমার শীল।
মহসীন- গানটির মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন। নানা প্রতীকে গানের কথা ও মিউজিক ভিডিওর গল্পে সময়কে ধরতে চেয়েছে মেঘদল।
গমাধ্যমকে ব্যান্ডটি জানিয়েছে, নতুন অ্যালবাম নিয়ে অনেকদিন ধরেই তাঁরা কাজ করছিলেন। সেখান থেকেই একটা গান রিলিজ পেল। এখন থেকে দুই তিন মাস পরপর একটি গান ও মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মেঘদল।
অ্যালবামে মোট দশটি গান থাকবে। অডিও ইন্ডাস্ট্রির সাম্প্রতিক বাস্তবতার কারণেই অ্যালবামের গান প্রকাশে এমন কৌশল বেছে নিয়েছেন তাঁরা।"
মহসীন- মেঘদলের বর্তমান লাইন আপ মেজবাউর রহমান সুমন (কথা, সুর, কন্ঠ, গিটার), শিবু কুমার শীল (কথা, সুর, কন্ঠ), রাশীদ শরিফ সোয়েব (লিড গিটার, কন্ঠ), এম জি কিবরিয়া (বেইজ), আমজাদ হোসেন (ড্রামস), তানভির দাউদ রনি (কী-বোর্ডস), সৌরভ (বাঁশি)।
শ্রোতা বন্ধুরা, কনসার্ট ফর বাংলাদেশ খ্যাত প্রতিভাবান সঙ্গীত শিল্পী জর্জ হ্যারিসন। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ারের ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ১ কোটি শরণার্থীর জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে আয়োজিত সেই কনসার্টের পর বিশ্ব ব্যাপী সাড়া ফেলে বাংলাদেশীদের উপর পাকিস্তানী সেনা বাহিনীর অত্যাচারের ঘটনা। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা জর্জ হ্যারিসনের সংক্ষিপ্ত জীবনী আপনাদেরকে জানাব।
জর্জ হ্যারিসন ১৯৪৩ ( উনিশশ তেতাল্লিশ) সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইংল্যাণ্ডের ল্যাংকশায়ারের লিভারপুলে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবার নাম হ্যারল্ড হার্গ্রিস হ্যারিসন ও মা লুইসে। তার বাবা ছিলেন পরিবহন বাসের সহকারী আর মা একটি দোকানে কাজ করতেন। তিনি মা বাবার চতুর্থ এবং ছোট সন্তান।
হ্যারিসন পেনি লেনের কাছে ডাভডেল প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন। তারপর ১৯৫৯ (উনিশশ উনষাট) সালে লিভারপুল ইন্সটিটিউট ফর বয়েজে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত হ্যারিসন এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন।
লিভারপুল ইন্সটিটিউটে অধ্যায়ন কালেই 'স্কিফ' নামে একটি ব্যান্ডের দলে যোগ দেন। তখন হ্যারিসনের বয়স অল্প থাকায় সেই দলে নিয়মিত হতে পারেননি।
পরবর্তীতে তাঁর গিটার বাজানোর দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে লেলোন তাকে 'দ্যা কোয়ারিমেন' ব্যান্ডে অন্তর্ভুক্ত করেন। জীবিকার তাগিদে ১৯৫৯ সালে হ্যারিসন ব্লাকারস নামে একটি স্থানীয় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেও কয়েক মাস কাজ করেন।
১৯৬৬ সালে লন্ডনে ভারতীয় সেতার বাদক পণ্ডিত রবি শঙ্করের সাথে পরিচয় হয় হ্যারিসনের। এরপর তিনি ভারতে এসে গান গাওয়া শুরু করেন। রবি শঙ্করের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হ্যারিসন পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সাথে ভারতীয় সঙ্গীতের মিশ্রণ ঘটান।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রবি শঙ্কর স্বাধীনতা যুদ্ধের শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ভারতবর্ষ ও পাশ্চাত্যের অনেক বিখ্যাত শিল্পীকে একত্রিত করেন। তাঁর মধ্যে জর্জ হ্যারিসন ছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে পহেলা অগাস্ট জর্জ হ্যারিসনকে সঙ্গে নিয়ে রবি শঙ্কর নিউইয়র্ক ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ' নামে কনসার্ট আয়োজন করেন।
এই কনসার্টে প্রায় ৪০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল। কনসার্ট থেকে পাওয়া অর্থ বাংলাদেশি শরণার্থী ও যুদ্ধে বিপর্যস্ত মানুষদের কল্যাণের জন্য দেওয়া হয়েছিল।
জর্জ হ্যারিসন ২০০১ সালে ৫৮ বছর বয়সে ক্যান্সারে ভুগে মারা যান।