"চীনের বসন্ত উত্সবের মাস শেষ হয়নি; এখনও বসন্ত উত্সবের আমেজ রয়ে গেছে। প্রতিজন প্রতিনিধি ও ইনার মঙ্গোলিয়ার বিভিন্ন জাতির কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষকে বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা জানাই; নয়া কুকুর বর্ষে তৃণভুমির আড়াই কোটি মানুষের সুখী জীবন কামনা করি।'
সোমবার বিকেলে ইনারমঙ্গোলিয়ার প্রতিনিধিদলের সভাকক্ষে সি চিন পিংকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নীল রঙয়ের উত্তরীয় উপহার দেন মঙ্গোলীয় জাতির প্রতিনিধিরা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ইনারমঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে গণকংগ্রেসের নির্বাচনে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট সি এবং সবার ভোটে এনপিসি'র প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। এ সম্পর্কে সি চিন পিং বলেন,
"আমি ইনারমঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কারণ জাতীয় সীমান্ত এলাকার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় সিপিসি'র কেন্দ্রীয় কমিটি। এ থেকে বোঝা যায়, চীনের দরিদ্র এলাকার উন্নয়ন বাস্তবায়ন ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হবার ব্যাপারে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে।"
পর্যালোচনা অধিবেশনে নতুন যুগে গ্রামাঞ্চলের পুনরুত্থান, প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা, ও দারিদ্র্যবিমোচন সম্পর্কে ইনারমঙ্গোলিয়ার ৮ জন প্রতিনিধির বক্তব্য শোনেন সি চিন পিং। তিনি উল্লেখ করেন, ইনারমঙ্গোলিয়া চীনের সবচেয়ে ঐতিহ্যিক জাতীয় স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। সংখ্যালঘু জাতিঅধ্যুষিত এলাকার স্বায়ত্তশাসন আইন সর্বপ্রথম এখানেই প্রয়োগ করা হয়। এ-অঞ্চলের কৌশলগত অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইনারমঙ্গোলিয়ার সুষ্ঠু সংস্কার ও উন্নয়ন বাস্তবায়ন, চীনের বিভিন্ন অঞ্চল তথা আন্তর্জাতিক সমাজের জন্যও ইতিবাচক হবে।"
ইনারমঙ্গোলিয়ার দারিদ্র্যবিমোচন কার্যক্রম সম্পর্কে সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, চলমান সমস্যা সমাধান করার পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর ও টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন,
"দারিদ্র্যবিমোচন কার্যক্রমকে গ্রামাঞ্চলের পুনরুত্থান কৌশলের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে, যাতে গ্রামাঞ্চল ও পশুপালন এলাকার উন্নয়ন বাস্তবায়ন, সুন্দর ও আরামদায়ক প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তোলা, গ্রামাঞ্চলের সভ্যতা সংরক্ষণ, কার্যকর প্রশাসন কায়েম, এবং সার্বিকভাবে পশুপালকদের জন্য সুন্দর বাড়িঘর নির্মাণ করার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যায়। দারিদ্র্যবিমোচন প্রক্রিয়ায় যে-কোনো ধরনের দুর্নীতি দমন করতে হবে; দারিদ্র্যবিমোচনের ক্ষেত্রে বিশেষ অর্থায়ন-ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে; সংশ্লিষ্ট তহবিলের অবৈধ ব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতি কঠোরভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।"
বর্তমানে চীনের ইনারমঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ৫৫টি জাতি বসবাস করে থাকে। মোট লোকসংখ্যা আড়াই কোটিরও বেশি। তাদের মধ্যে সংখ্যালঘু জাতির লোকসংখ্যা প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ। সি চিন পিং বলেন, পারস্পরিক সহায়তার তত্ত্ব অনুশীলন করে জাতীয় ঐক্যের চেতনা গভীরতর করতে হবে; চীনা জাতির অভিন্ন কমিউনিটির চেতনা জাগ্রত করতে হবে; বিভিন্ন জাতির লোকদেরকে যৌথভাবে মাতৃভূমির সীমান্ত এলাকা রক্ষা করতে হবে; এবং যৌথভাবে সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে হবে। প্রেসিডেন্ট সি বলেন,
"চীনা সমাজতন্ত্রের কেন্দ্রীয় মূল্যবোধ বিভিন্ন জাতির আত্মিক উন্নয়নের দিক নির্ধারণ করেছে। বিভিন্ন জাতির মধ্যে এ মূল্যবোধের বাস্তবায়ন ও প্রশিক্ষণ জোরদার করতে হবে; কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু জাতির বৈশিষ্ট্যময় সংস্কৃতিতে এ-মূল্যবোধ দৃঢ়মূল করতে হবে; বিভিন্ন জাতির লোকজনের মধ্যে মাতৃভূমি, চীনা জাতি, চীনা সংস্কৃতি, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের পক্ষে ব্যাপক সমর্থন সৃষ্টি করতে হবে। আর এভাবেই চীনের বিভিন্ন জাতির মধ্যে অভিন্ন আত্মিক বন্ধন সৃষ্টি করা যাবে।"(সুবর্ণা/আলিম)