বসন্ত উত্সবের ছুটি শেষে সারা চীনে পরিবহনের ব্যস্ততা
২১ ফেব্রুয়ারি হলো চীনের চান্দ্র পঞ্জিকা অনুসারে চান্দ্র নববর্ষের ষষ্ঠ দিন, এদিনটি বসন্ত উত্সব ছুটির শেষ দিন। তাই সারা চীনে আবার শুরু হয়েছে পরিবহনের ব্যস্ততা। রেল, সড়কপথ ও বেসামরিক বিমান চলাচলসহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট বিভাগ যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে এ ব্যস্ততার সময় মোকাবিলা করে থাকে। বিস্তারিত শুনবেন সিআরআই'র প্রতিবেদনে।
২০ ফেব্রুয়ারি, অর্থাত্ চান্দ্র নববর্ষের পঞ্চম দিন থেকে রেলপথে আবার যাত্রীদের ব্যস্ততার সময় শুরু হয়। এদিন সারা দেশের রেলপথে ১ কোটি ৬ লাখ পার্সন টাইমস লোক যাতায়াত করেছে। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। সারা চীনের রেলপথে ৯১৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন বাড়ানো হয়েছে।
চান্দ্র নববর্ষের ষষ্ঠ দিন চীনের পরিবহনের সবচেয়ে ব্যস্ত এক দিন। বিভিন্ন প্রদেশের রেল বিভাগ অনেক প্রস্তুতি নিয়ে পরিবহনের ব্যস্ততার এ সময় মোকাবিলা করে। চীনের মধ্যাঞ্চলের আনহুই প্রদেশের ফুইয়াং রেলস্টেশনের নিরাপত্তা ও বিপণন বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ইউয়ান সিয়াও উয়েই বলেন,
"ছুটি শেষে যাত্রীদের ব্যস্ততার সময় মোকাবিলা করার জন্য স্টেশনে অস্থায়ী টিকিট অফিস ও 'ওয়েটিং রুম' নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া আমরা ১৬টি টিকিট পরীক্ষা কেন্দ্র ও ৮টি নিরাপত্তা পরীক্ষার কেন্দ্র খুলেছি। যাতে যাত্রীরা আরো সুষ্ঠুভাবে স্টেশনে প্রবেশ বা ত্যাগ করতে পারে।"
রেলপথ ছাড়া সড়কপথও এ সময় ব্যাপকভাবে ব্যস্ত সময়ের সম্মুখীন হয়। বেইজিং, মুক্তা নদীর বদ্বীপ অঞ্চল, ইয়াসি নদীর ত্রিভুজ এলাকা, ছেং তু ও ছুং ছিংসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরত যাত্রীদের ব্যস্ততার সময় আসছে। কিন্তু বৃষ্টি, তুষার ও কুয়াশাসহ বিভিন্ন বিশেষ আবহাওয়ার কারণে হেবেই, সানসি, লিয়াওনিং, সিনচিয়াংসহ বিভিন্ন অঞ্চলের এক্সপ্রেস সড়কপথ অস্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে ।
চীনের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপাত্তে দেখা যায়, সবচেয়ে ব্যস্ত লাইন হলো লাংফাং-বেইজিং, পাওতিং-বেইজিং, তুংকুয়ান-সেনজেন, ফোসান-কুয়াংচৌ, সুচৌ-শাংহাইসহ দশটি লাইন। হেবেই প্রদেশের দ্রুত গতির ট্রাফিক পুলিশের প্রচার বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ওয়াং দাই ইং বলেন,
"বেইজিংয়ে যাওয়ার সবচেয়ে ব্যস্ত সময় হলো চান্দ্র নববর্ষের পঞ্চম ও ষষ্ঠ দিন। আমরা জনগণের নিরাপত্তা ও দ্রুত ভ্রমণ নিশ্চিত করতে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে থাকি।"
বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে বেইজিং, শাংহাই, কুয়াংচৌ ও সেনজেনসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বিমানবন্দর ফেরত যাত্রীদের ব্যস্ততার সময়ের সম্মুখীন হয়। এ সময় বেইজিং ক্যাপিটাল এয়ারপোর্ট দিয়ে সারা দিন ২.৮৩ লাখ পার্সন টাইমস লোক যাতায়াত করে বলে অনুমান করা হয়।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪০ দিনের বসন্ত উত্সব সময়ে পরিবহনের ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে ছুটি শেষে। ফেরত যাত্রীদের প্রধান অংশ হলো ছাত্রছাত্রী ও শহরে যারা কাজ করেন তারা। সংশ্লিষ্ট বিভাগ পরিবহনের চাপ মোকাবিলার জন্য অস্থায়ী ট্রেন, গাড়ি ও ফ্লাইটের পরিকল্পনা করে থাকে।
উপাত্তে আরো দেখা যায়, চলতি বছর আগের বছরের চেয়ে নতুন যাত্রীদের সংখ্যা বেড়েছে।
চলতি বছর জনগণ জন্মস্থান থেকে বাবা মাসহ বেইজিং, শাংহাই, সেনজেন ও কুয়াংচৌসহ বিভিন্ন বড় শহরে বসন্ত উত্সবের ছুটি উপভোগ করার কারণে বিপরীত ভ্রমণ লাইন বাড়ানো হয়েছে। যাতে নাগরিকরা আরো সহজভাবে টিকিট কিনতে পারে। তাছাড়া এ সময় কোনো কোনো লোক ফ্লাইট বুকিং করে বাবা মা'র সঙ্গে অন্য প্রদেশ বা দেশে বসন্ত উত্সবের ছুটি উপভোগ করে। (জিনিয়া/টুটুল/লিলি)