জাতিসংঘ 'দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব' সমর্থন করে: আন্তোনিও গুতেরহিস
  2018-02-21 15:57:13  cri
ফিলিস্তিন সমস্যাসহ মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল (মঙ্গলবার) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি বিশেষ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক সদস্যদেশের প্রধান হিসেবে সম্মেলনে ভাষণ দেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সম্মেলনে 'দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব'-এর প্রতি জাতিসংঘের সমর্থনের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরহিস। আজকের 'সংবাদ পর্যালোচনা'য় আমরা এ-বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

বিশেষ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরহিস, জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার বিশেষ সমন্বয়কারী নিকোলে ম্লাদেনভ, জাতিসংঘে ইসরাইলের স্থায়ী প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন।

শুধু আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরহিস সম্মেলনে বলেন, এর কোনো বিকল্প নেই; নেই কোনো 'প্ল্যান বি'। তিনি বলেন,

"বর্তমানে আমাদের উচিত ফিলিস্তিন-ইসরাইল বিরোধ অবসানে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি রাজনৈতিক উপায় খুঁজে বের করা। এই ব্যাপারে 'দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব' সমর্থনের কথা আমি আরেকবার ঘোষণা করতে চাই। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, পারস্পরিক স্বীকৃতি, এবং জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব, আন্তর্জাতিক আইন ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে সরাসরি আলোচনায় বসলেই কেবল সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান সম্ভব। এতে দু'দেশের জনগণের আশা পূরণ ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্যার জটিলতা বেড়েছে।"

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তাঁর ভাষণে ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি-প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে একটি বহুপাক্ষিক সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রস্তুত ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিন সবধরনের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন কখনই আলোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেনি। তিনি আরও বলেন,

"যেটুকু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে, তা আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে। প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে এবং রাজনৈতিক ও আইনগত উপায়ে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী আমরা। সহিংসতা থেকে আমরা দূরে থাকতে চাই। 'দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব' এবং আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব অনুসারে আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্তের সাথে খাপ খায় না, এমন যে-কোনো প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করব।"

ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুসালেমকে দেওয়া মার্কিন স্বীকৃতির বিষয়টিও উঠে আসে তার ভাষণে। তিনি বলেন, এই আচরণ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং আন্তর্জাতিক সমাজ এর বিরোধিতাও করেছে।

এ-সম্পর্কে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি নিক্কি হ্যালি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনের অসন্তুষ্টির ব্যাপারে মার্কিন সরকার অবগত আছে। তিনি বলেন, যে-কোনো সময় আলোচনায় অংশ নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে আলোচনার জন্য আগ বাড়িয়ে ফিলিস্তিনকে ডাকবে না যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি মা চাও সু সম্মেলনে বলেন, 'দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব' ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানের সঠিক উপায়। আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি-আলোচনার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা। মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে—এমন সকল পক্ষের উচিত গঠনমূলক ভূমিকা পালন করা। তিনি আরও বলেন,

"সত্যিকারভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়ে তুললেই কেবল ইসরাইলের জন্য স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হলে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিও স্থিতিশীল হবে।" (ওয়াং হাইমা/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040