কিউবা আন্তর্জাতিক বইমেলা সেদেশের জনগণের প্রিয় একটি সাংস্কৃতিক মহাসম্মিলনী। চলতি বছরের বইমেলায় ৪১টি দেশ ও অঞ্চলের এই শিল্পের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। প্রথমে রাজধানী হাভানায় ১৫ দিন ব্যাপী আয়োজিত হয় এই মেলা। এর পর সে দেশের ১৫টি শহরে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শিত হবে। শেষ প্রদর্শিত অনুষ্ঠিত হবে মে মাসে কিউবার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সানডিয়াগোয়।
এবারে চীনের ৬০টিরও বেশী প্রকাশনা সংস্থা বইমেলায় অংশ নিয়ে সহযোগিতার সুযোগ খুঁজেছে। কিউবার প্রকাশনা সংস্থার চেয়ারম্যান হুয়ান রদ্রিগেজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, কিউবা আন্তর্জাতিক বইমেলা হলো এ অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। চীন একটি বিশাল দেশ, চীনের আছে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। থিম কান্ট্রি হিসেবে চীনের পাঁচ হাজার বছরের সংস্কৃতি হাভানায় নিয়ে আসাকে কিউবা স্বাগত জানায়।
চীনের বেতার, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রশাসনের উপ-পরিচালক চৌ হুই লিন বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, এবারের বইমেলা হলো চীন-কিউবা প্রকাশনা শিল্পের বিনিময়ের নতুন অধ্যায়ের সূচনা। এবার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দু'দেশের প্রকাশনার কার্যকর সহযোগিতা আরো ঘনিষ্ঠ হবে তা চীনের প্রত্যাশা। সেরা বই দু'দেশের পাঠকদের কাছে এনে দেওয়া, যাতে দু'দেশের জনগণের সমঝোতা ও মৈত্রী আরো গভীর হবে।
বন্ধুরা, ২৭তম কিউবা আন্তর্জাতিক বইমেলা সান কার্লোসে অনুষ্ঠিত শিরোনামে সাংস্কৃতিক খবরটি এখানে শেষ। এবার শুনুন 'আজকের চীন' শিরোনামে সাংস্কৃতিক সপ্তাহ ভারতের নয়াদিল্লিতে শুরু শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।
১ ফেব্রুয়ারি 'আজকের চীন' শিরোনামের সাংস্কৃতিক সপ্তাহে কুয়াং যৌ ব্যালে নৃত্য দলের বিশেষ পারফর্মেন্স নয়াদিল্লির সরি কেল্ড অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ভারতে চীনের রাষ্ট্রদূত লুও চাও হুই এবং তাঁর স্ত্রী চিয়াং ই লি, ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক কমিটির পরিচালক তাই রুই সি এবং ভারতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং নয়াদিল্লির বিভিন্ন মহলের এক হাজার ৫'শও বেশী দর্শক এবারের পারফর্মেন্স উপভোগ করেছেন।
রাষ্ট্রদূত লুও পারফর্মেন্সে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, এবারের ব্যালে নৃত্যের বিশেষ পারফর্মেন্স হলো ভারতে 'আজকের চীন' সাংস্কৃতিক সপ্তাহের প্রথম অনুষ্ঠান। আমরা আশা করি এবারের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীন-ভারত সাংস্কৃতিক বিনিময় এগিয়ে যাবে। অন্যদিকে ভারতের জনগণ চীনকে আরো ভালভাবে জানতে পারবে সেটই আমাদের আশা।
ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক কমিটির পরিচালক তাই রুই সি তাঁর ভাষণে বলেন, প্রথম 'আজকের চীন' সাংস্কৃতিক সপ্তাহ অনুষ্ঠানের ভারত সফরকে তাঁরা আন্তরিক স্বাগত জানায়। ভারত আশা করে চীনের সঙ্গে অব্যাহত ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করবে, দু'দেশের জনগণের সাংস্কৃতিক বিনিময় আরো গভীর হবে, যাতে চীন-ভারত সম্পর্কে অব্যাহত উন্নয়ন হয়।
পারফর্মেন্স শেষে ভারতীয় দর্শকরা অনুষ্ঠানের মানের উচ্চ পর্যায়ের মূল্যায়ণ করেছে। অনেক দর্শক বলেন যে, তাদের ধারণা ছিল ব্যালে নৃত্য একটি পশ্চিমা শিল্প। কিন্তু অনুষ্ঠানে চীনা শিল্পীরা এত সুন্দর ব্যালে পারফর্মেন্স তাদের সামনে উপস্থাপন করেছে, একই সঙ্গে চীনা বৈশিষ্ট যোগ করেছে। সত্যিই অনেক সুন্দর! ভারতে আরো বেশী চীনা শিল্পীদের উচ্চ পর্যায়ের পারফর্মেন্স দেখার প্রত্যাশা প্রকাশ করেন তাঁরা।
বন্ধুরা, 'আজকের চীন' সাংস্কৃতিক সপ্তাহ নয়াদিল্লিতে উদ্বোধন শিরোনামে সাংস্কৃতিক খবরটি এখানে শেষ। এবারে শুনুন ঢাকায় চীনের ইয়ুননান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক খবর।
গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় শুরু হয়েছে চীনের ইয়ুননান প্রদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রদর্শনী।
ইউননান প্রদেশের শিক্ষা বিভাগ এ প্রদর্শনী আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইউননানের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় এতে যোগ দিয়েছে। প্রদর্শনীতে চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা বৃত্তিসহ নানা সুযোগের তথ্য দেওয়া হয়। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের চীনের ইউননান প্রদেশে লেখাপড়ায় উত্সাহ দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেলায় চীন ও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ধারাবাহিক কিছু সহযোগিতা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন তাঁর ভাষণে বলেন, বাংলাদেশ সরকার চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগকে সমর্থন জানায়। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশের আরও বেশি শিক্ষার্থী ইউননান প্রদেশে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে। চীন ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের মৈত্রীর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার চীন। শিক্ষা খাতে দুদেশের সহযোগিতা জোরদার করা উচিত্। এক্ষেত্রে প্রদর্শনীটিকে ভালো সুযোগ বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ইউননান প্রদেশে বর্তমানে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার। এর মধ্যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি।
কাজাখস্তানের বিখ্যাত পণ্ডিত ডারহান কিডিরিলি সম্প্রতি দেশের রাজধানী আসতানায় চীনা সংবাদদাতার সাথে এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, গত কয়েক হাজার বছরে মধ্যএশিয় দেশগুলো ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বজায় রয়েছে। 'এক অঞ্চল, এক পথ'র যৌথ নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়ায় একাডেমিক গবেষণা বিষয়ক সহযোগিতার মাধ্যমে রেশম পথ বরাবর দেশগুলোর সম্পর্কও আরো ঘনিষ্ঠ হয় ওঠবে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, রেশম পথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ছাড়া, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, একাডেমিক সহযোগিতাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রের সহযোগিতাও আছে। তাঁর মতে একাডেমিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সমঝোতা বাড়ানোর পক্ষে কল্যাণকর হবে। তিনি আশা করেন ভবিষ্যতে চীনা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে একাডেমিক সহযোগিতা গভীর করবে।
(জিনিয়া/মহসীন)