এদিন ইউরোপীয় কমিশন ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া ও চেক এই নয়টি সদস্য দেশের পরিবেশ বিষয়ক কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্রাসেলসে ইইউর সদর দপ্তরে মন্ত্রী পর্যায়ের এক বিশেষ অধিবেশন আয়োজন করে। এই ৯টি দেশ বহু বছর ধরে ইইউ'র বায়ুর গুণগতমান বিষয়ক নীতি মেনে চলতে সক্ষম হয়নি। এসব দেশের দূষিত পদার্থ নির্গমনের পরিমাণ ইইউ'র মানদন্ডের বাইরে।
ইইউর পরিবেশ বিষয়ক সদস্য ভিল্লা অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, বায়ু দূষণের কারণে ইইউ'র সদস্য দেশে প্রতি বছর বিষ্ময়কর সংখ্যার প্রাণ হানি ঘটেছে। তিনি বলেন:
ব্যাপক এবং সার্বিকভাবে সমস্যা সমাধান না হওয়ায় এ পর্যন্ত প্রতি বছর ৪ লাখ মানুষ বায়ু দূষণের কারণে মৃত্যুর শিকার হয়েছে। আরো অনেকেই এ সংশ্লিষ্ট রোগের কারণে অসুস্থ্যতায় ভোগে।
ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অবস্থিত ইউরোপের পরিবেশ বিভাগ গত বছর প্রকাশিত এক বার্ষিক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে, ইইউ'র সদস্য দেশে প্রতি বছর ৪ লাখেরও বেশি মানুষ বায়ু দূষণের কারণে অসুস্থ্য হয়ে মৃত্যু বরণ করে। লাখ লাখ মানুষ শ্বাস বা হৃদরোগ ও রক্তনালীর রোগে আক্রান্ত হয়। বায়ুর গুণগতমান উন্নয়নের জন্য ইইউ সদস্য দেশের বায়ু দূষণ পদার্থ নির্গমনের জন্য স্পষ্ট নীতি নির্ধারণ করেছে। তবে এই পর্যন্ত ইইউ'র ২৮টি সদস্য দেশের মধ্যে ২৩টি দেশের বায়ূর গুণগতমান নির্ধারিত মানদন্ডে পৌঁছাতে পারেনি। গত বছরের প্রথম দিকে ইউরোপীয় কমিশন জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি ও ব্রিটেনকে দু'মাসের মধ্যে বায়ূর গুণগতমান উন্নত করার নির্দেশ দিয়েছে, তবে তা সফল হয়নি। ভিল্লা বলেন, বায়ূর গুণগতমান উন্নয়ন করতে আর অপেক্ষা করা যায় না। তিনি বলেন:
আইনানুগ দায়ীত্ব পালনের সময়সীমা অনেক আগে পার হয়ে গেছে। কেউ বলেন, আমরা অনেক সময় অপেক্ষা করেছি, তবে আমাদের আর বিরত রাখা যাবে না। আজ সকালে আমি মন্ত্রীদেরকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছি।
ভিল্লা বলেন, অধিবেশনে মন্ত্রীরা কিছু সক্রিয় প্রস্তাব দিয়েছেন, তবে এসব প্রস্তাব পরিস্থিতি উন্নয়ন করার জন্য যথেষ্ট নয়। নতুন এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া বায়ূর গুণগতমান মানদন্ডের চেয়ে খারাপ এমন পরিস্থিতি কয়েক মাস, কয়েক বছর, এমনকি ২০২০ সালের পরও স্থায়ী হবে। তিনি হুশিয়ার করে বলেন, বিভিন্ন দেশের উচিত অবিলম্বে পরিস্থিতি উন্নয়ন করার ব্যবস্থা নেয়া, নইলে এসব দেশকে মামলার সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেন:
এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমি সকল সদস্য দেশকে এই জরুরী সমস্যা সমাধানের জন্য তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছি।
ইইউর সংশ্লিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী, ইইউ কমিশন ইউরোপীয় আদালতে ইইউ'র আইন লঙ্খন করা সদস্য দেশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। এর আগে বুলগেরিয়া বায়ূ দূষণের কারণে মামলার সম্মুখীন হয়েছে এবং ইউরোপীয় আদালতে সংশ্লিষ্ট বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদি পরিস্থিতির উন্নয়ন না হয়, তাহলে ইইউ কমিশন আদালতের কাছে জারিমানার দাবিও জানাতে পারে।
(শুয়েই/মহসীন)