বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করা উচিত্: বোয়িং কোম্পানির প্রেসিডেন্ট
  2018-01-28 18:03:03  cri

সুপ্রিয় শ্রোতা, গতকাল (শনিবার) যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনা রাজ্যে মার্কিন বোয়িং কোম্পানির কারখানায় চীনের সিয়ামেন এয়ারলাইন্সকে একটি যাত্রীবাহী বিমান হস্তান্তর করা হয়। এতে 'জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা' লিখিত ছিল। বিমান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বোয়িং কোম্পানির প্রেসিডেন্ট জন ব্রান্স। এ সময় তিনি সিআরআইকে বিশেষ সাক্ষাতকার দেন। তিনি বলেন, বেসামরিক বিমান খাতের উন্নয়নে চীনের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আর সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিতে দেখলে, এক্ষেত্রে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করা উচিত্।

এ নিয়েই শুনবেন আজকের সংবাদ পর্যালোচনা। পরিবেশন করছি...।

২০১৭ সালে বোয়িং কোম্পানি চীনের বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কোম্পানিকে ২০২টি নতুন বিমান প্রদান করে। যা বিশ্বে বোয়িং বিমান বিক্রির ২৫ শতাংশ! বোয়িং কোম্পানির কাছে চীন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার। চীনে বোয়িং কোম্পানির উন্নয়ন সম্পর্কে জন ব্রান্স বলেন,

গেল ৪৫ বছরে আমরা 'উইন-উইন' সহযোগিতা চালিয়েছি। আমি মনে করি, চীন বিশ্বের বৃহত্তম বিমান যোগাযোগের বাজার হয়ে উঠবে। আগামী ২০ বছরে চীনের প্রয়োজন সাত হাজার বিমান। এর বাজার মূল্য এক লাখ কোটি মার্কিন ডলার। এসব কারণে বোয়িং কোম্পানির কাছে চীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজার। দুপক্ষের জন্যই এটা কল্যাণকর এক সম্ভাবনা।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগামী ২০ বছরে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক বিমানের চাহিদা দাঁড়াবে ৪০ হাজার। যা বিমান যোগাযোগ ও উত্পাদন খাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এখন অনেক দেশ বাণিজ্যিক বিমান বাজারে প্রবেশ করতে চায়। ২০১৭ সালে চীন নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে বড় আকারের বিমান সি৯১৯ তৈরি করেছে এবং এর সফল উড্ডয়ন করেছে। একই বছর বোয়িং কোম্পানি ও কমার্শল এয়ারক্র্যাফট কর্পোরেশন অভ চায়না লিমিটেড (Commercial Aircraft Corporation of China Ltd) যৌথভাবে চৌশান বোয়িং কোম্পানি গঠন করেছে।

জন ব্রান্স বলেন, চীন বড় একটি বাজার এবং ভবিষ্যতে এখানে বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে; আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হবে। বোয়িং ও এয়ারবাস বিশ্বের বাণিজ্যিক বিমানের চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। এ শিল্পে আরও বেশি সরবরাহকারী বা অংশগ্রহণকারী লাগবে। এক্ষেত্রে চীন তেমনই একটি পক্ষ।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আমরা সরু দেহের বিমান বা সিঙ্গেল-আইল এয়ারক্র্যাফট্‌ (Single-aisle aircraft) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে স্বাগত জানাই এবং এর মাধ্যমে আমরা আরও শক্তিশালী হব, নবায়ন ও উদ্ভাবনের পথে এগিয়ে যাব। এতে পণ্যের মান ভালো হবে এবং আমাদের মক্কেলদের আরও ভালো সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

চীনা বাজারকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুদেশের সম্পর্কের সুষ্ঠু, স্থিতিশীল উন্নয়ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তবে, সম্প্রতি মার্কিন সরকার ওয়াশিং মেশিন আমদানি, ফোটোভোলটাইক কোষ এবং উপাদান-সুরক্ষা শুল্ক গ্রহণ শুরু করেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ নিয়ে বিশ্ব উদ্বিগ্ন।

এ প্রসঙ্গে ব্রান্স বলেন, গেল কয়েক দশকে অনেক পরিবর্তন হলেও চীন-মার্কিন সম্পর্কের আস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। ভবিষ্যত উন্নয়নের দিকে তাকালে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে হবে।

তিনি বলেন, দুদেশের সম্পর্কে উত্থান-পতন ছিল। তবে বিমান শিল্পে দুদেশের সহযোগিতা সবসময় স্থিতিশীল রয়েছে। তাই ভবিষ্যত নিয়ে আমরা আশাবাদী। এ শিল্পের উন্নয়নে দুদেশের সহযোগিতা করা উচিত্ এবং যৌথ প্রচেষ্টায় সমস্যা কাটিয়ে ওঠা প্রয়োজন।

(শিশির/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040