দাভোসে ৪৮তম বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যাশা
  2018-01-23 15:07:52  cri

জানুয়ারি ২৩: স্থানীয় সময় ২৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৮তম বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠক সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর বৈঠকের প্রতিপাদ্য হলো 'বিভেদপূর্ণ বিশ্বে সহযোগিতা জোরদার করা'। অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন মহলের লোকজন এই বৈঠক নিয়ে তাঁদের প্রত্যাশা প্রকাশ করেন। এই ফোরাম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করে বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং অন্য সমস্যা সমাধানের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম বলে তাঁরা মনে করেন।

আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় এ নিয়ে শুনবেন একটি প্রতিবেদন।

চলতি বছরের বার্ষিক বৈঠক অর্থনীতির অব্যাহত উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, চিন্তা-ধারার বিবিধকরণ ও শক্তির বহুমেরুকরণ মোকাবিলা করা এবং সমাজের মতভেদ নির্মূল করা ও নমনীয় প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা -এ চারটি প্রতিপাদ্যকে ঘিরে চালানো হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভূতাত্ত্বিক প্রতিযোগিতা তীব্রতর হওয়ার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মর্ম পুনরায় জোর দেওয়া হবে এ বৈঠকে।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্ড্রু উইলসন মনে করেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও সরকারের সহযোগিতা এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে নজর রাখা হলো চলতি বছরের বার্ষিক বৈঠকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি বলেন,

'আমি মনে করি, চলতি বছরের বৈঠকের একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সরকার এবং সমাজ কিভাবে বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে সহযোগিতা চালাতে পারে, সেটি। ছোট শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং ক্ষুদ্র শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নতুন উন্নয়নের অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি। আরেকটি লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো প্রযুক্তির ওপর দৃষ্টি রাখা, যা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সহনশীলতা বাড়াতে সক্ষম হবে।'

৪৮ বছরব্যাপী উন্নয়নের পর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বিষয় কেবল অর্থনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এই ফোরাম অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন মহলের লোকজনের বর্তমান ও ভবিষ্যতের সম্মুখীন সমস্যা এবং এসব সমস্যা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করার গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠে।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের আফ্রিকা অঞ্চলের উপ-প্রধান প্যাট্রিক ইউসেফ বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের এবারের দাভোস বৈঠক মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলোর সহযোগিতা খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে ভালো সুযোগ যুগিয়েছে। তিনি বলেন,

'এই বৈঠক শুধুমাত্র বাণিজ্যিক মহলের জনগণের সঙ্গে সম্পর্কিত, তা নয়, বরং কোনো কোনো সংস্থার সঙ্গেও সম্পর্কিত। সহযোগিতা খুব দরকার। কারণ একা একা কাজ করলে সফল হওয়া যায় না। সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা যাবে।'

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস শোওয়াব এর আগে বলেন, বর্তমানে বিশ্বের সামনে সম্মুখীন চ্যালেঞ্জ খুব কঠোর। তাই বিভিন্ন দেশের উচিত আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরো বেশি সমন্বয় জোরদার করা এবং সহযোগিতা চালানো। এ বছরের বার্ষিক বৈঠকের লক্ষ্য হলো দেশের সঙ্গে দেশের অভিন্ন স্বার্থ সুসংহত করা এবং দেশ ও সমাজের অভ‍্যন্তরীণ বিভেদ ও মতভেদ নির্মূল করা।

উল্লেখ্য, এবারের বার্ষিক বৈঠকের উদ্যোক্তারা জানিয়েছে, চলতি বছর অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দের সংখ্যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ মানে দাঁড়িয়েছে। ৭০টি দেশ ও সরকারের নেতৃবৃন্দ এবং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থার ৩৮ জন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এতে অংশ নিচ্ছেন। তা ছাড়া, চলতি বছর নারী অতিথিদের হার ২১ শতাংশের বেশি, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ মান ছাড়িয়ে গেছে।

চলতি বার্ষিক বৈঠকের অংশ হিসেবে ২৪তম বার্ষিক 'ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ড' অনুষ্ঠান স্থানীয় সময় ২২ জানুয়ারি রাতে অনুষ্ঠিত হয়। এই পুরস্কার স্থাপনের লক্ষ্য হলো যারা নিজ উদ্যোগে বিশ্বের অবস্থা পরিবর্তন করেন তাদের প্রশংসা করা। চলতি বছর তিন জন পুরস্কার বিজয়ী হলেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনেত্রী কেট ব্ল্যানচেট, বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এলটন জন এবং বলিউডের বিখ্যাত তারকা শাহরুখ খান। (লিলি/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040