আজ (বুধবার) চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শেন ইং বলেন, ২০১৭ সালে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান সূচক উন্নত হয়েছে। বছরজুড়ে কেনাকাটার পরিমাণ ২৬ লাখ ৪০ হাজার কোটি ইউয়ান ছাড়িয়ে যায়। প্রতি প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার দশ শতাংশেরও বেশি। বছরের প্রতি মাসে মুনাফার প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ বেশি ছিল।
তিনি বলেন, '৯৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৯টির মুনাফা প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ বেড়েছে, ২৬টির ২০ শতাংশ বেড়েছে। মুনাফার পরিমাণ ১০০০ কোটি ইউয়ান ছাড়ানো প্রতিষ্ঠানের পরিমাণ ৪১টি। তেল, ইস্পাত, কয়লাসহ নানা ঐতিহ্যবাহী শিল্পে চমত্কার অগ্রগতি হয়েছে, যা সামষ্টিক মুনাফার ভিত্তি মজবুত করেছে। অগ্রসর প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও আধুনিক সেবা শিল্পসহ নানা শিল্পের মুনাফার স্থিতিশীল বৃদ্ধি হয়েছে। এটি মোট বৃদ্ধির ৪০ শতাংশ। ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান কৌশলগত নবত্থিত শিল্পে পরীক্ষামূলকভাবে প্রবেশ করেছে। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পত্তির কার্যকারিতা বাস্তবায়িত হয়েছে। এ থেকে গত বছরের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি মুনাফা পাওয়া গেছে।
গত বছর সরবরাহ ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কারে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। অচলাবস্থায় থাকা প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত উত্পাদন কমেছে। এমন প্রতিষ্ঠান মোট ১২০০টি। পাশাপাশি 'ব্যবস্থাপনার স্তর ও আইনি ব্যক্তি কমানোর মধ্য দিয়ে প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার সামর্থ্য উন্নত হয়েছে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ৮৩৯০ জন আইনি ব্যক্তি কমানো হয়েছে, যা মোট পরিমাণের ১৬.০৮ শতাংশ। এর মাধ্যমে পরিচালনা ব্যয়ে ১৩৫০ কোটি ইউয়ান সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে সারা বছর উত্পাদনের পরিমাণ কমানোর লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়েছে।
শেং ইং বলেন,
'বর্তমানে ইস্পাতের উত্পাদন কমানোর কাজ মোটামুটি শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী ইস্পাত শিল্প উন্নত করা প্রয়োজন। কয়লা শিল্পে গত বছর নির্ধারিত লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৮ সালে কয়লা শিল্পে ১ কোটি টন উত্পাদন কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়লা শিল্পে পুনর্গঠন জোরদার করা খুব জরুরি।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে লেভারিজের প্রতি সবার দৃষ্টি আকৃষ্ট করে সেন ইং বলেন, চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পত্তি তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা কমিশন ৫টি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেগুলো হচ্ছে শৈল্পিক মান নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক লেভারিজ নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগের আকার, ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রম ও আর্থিক ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা।
শেন ইং আরও বলেন, কমিশন স্টক রাইটের মাধ্যমে অর্থায়ন, ঋণ থেকে স্টক পরিবর্তন করে পুঁজি বাড়ানোসহ নানা পদ্ধতিতে কাঠামো বিন্যাস করেছে, যাতে সুষ্ঠু উন্নয়ন হয়।
তিনি বলেন, 'এক, স্টক রাইটের মাধ্যমে অর্থায়ন। ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান স্টক বাজারের মাধ্যমে ৩৫ হাজার কোটি ইউয়ান অর্থ সংগ্রহ করেছে। দুই, ঋণকে স্টকে পরিবর্তন করে পুঁজি বাড়ানো হয়েছে। আমাদের জরিপ অনুযায়ী মোট ৩৬টি প্রতিষ্ঠানে এ ধরণের চাহিদা রয়েছে। গত বছরে ১৭টি কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঋণকে স্টকে পরিবর্তন করে পুঁজি বাড়ানোর চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
২০২০ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের সম্পদ-দায়ের অনুপাত আরও দুই শতাংশ কমবে বলে জোর দিয়ে উল্লেখ করা হয় প্রেস ব্রিফিংয়ে।
(রুবি/তৌহিদ)