হংকংয়ে এশীয় অর্থনৈতিক ফোরাম শুরু; গুরুত্ব পেয়েছে 'চীনের প্রস্তাব'
  2018-01-17 09:13:38  cri

জানুয়ারি ১৬: প্রিয় শ্রোতা, গতকাল (সোমবার) হংকংয়ে শুরু হয়েছে ১১তম এশীয় অর্থনৈতিক ফোরাম। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা এবং খ্যাতনামা বিনিয়োগকারীরা ফোরামে অংশ নিয়েছেন। তারা বর্তমান এশিয়া ও বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং নতুন বছরের বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ফোরামে অংশগ্রহণকারীরা চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও 'চীনা প্রস্তাবে'র ওপর নজর রেখেছেন।

এবারের এশীয় অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিপাদ্য, 'প্রবৃদ্ধি পরিচালনা, নব্যতাপ্রবর্তন সূচনা-এশিয়া ও বিশ্ব।' চীনের হংকংয়ের বিশেষ প্রশাসক লিন জে ইউ এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এশিয়া গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। গত কয়েক ডজন বছরের বেশি সময় ধরে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের তুলনায় বেশি, এতে উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা ফুটে উঠেছে।

লিন জেং ইউ এ জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে চীনের মূলভূখণ্ডের অর্থনীতি দ্রুত উন্নত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠান চীনের ওপর নজর রাখছে। মূলভূখণ্ডের দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি হংকংয়ের অর্থনীতি দ্রুত উন্নত হচ্ছে। বিশেষ করে চীন সরকারের নতুন দফা অর্থনীতি চাঙ্গাকারী নীতি প্রণয়নের পর এ অঞ্চলের দীর্ঘকালীন অর্থনৈতিক উন্নয়নে হংকং সরকারের আস্থা জোরালো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

লিন জেং ইউ এ বলেন,

'বর্তমানে চীন স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। দেশটি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সত্তা। গেল ২০১৭ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬.৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। বিশেষ করে গত বছর সিপিসির ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের পর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং 'নব্যতাপ্রবর্তন, সমন্বয়, সবুজায়ন, উন্মুক্তকরণ ও সমন্বিত অর্জন' তত্ত্বের ওপর গুরুত্ব দেন। যা সহনশীল ও টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো ও নব্যতাপ্রবর্তনে সহায়ক হয়েছে। পাশাপাশি এ পদক্ষেপ চীনের মূলভূখণ্ড, হংকং ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের অর্থনীতিকে যুক্ত করবে। 'এক রাষ্ট্র, দুই সামাজিক ব্যবস্থা' নীতির নির্দেশনায় হংকং ও মূলভূখণ্ডের মধ্যে যোগাযোগ যে কোনো সময়ের তুলনায় ঘনিষ্ঠ হয়েছে।

'এশীয় অর্থনীতির পূর্বাভাস' শিরোনামে দেওয়া ভাষণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড লিপটন বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। এশিয়া বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে তিন ভাগের দুই ভাগ অবদান রেখেছে। বিনিয়োগ প্রবল এবং রপ্তানিও বেড়েছে। চীন বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তিন ভাগের এক ভাগ অবদান রেখেছে। ভাষণে চীনা অর্থনীতি নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন ডেভিড লিপটন। চীনা অর্থনীতির অগ্রগতি বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, চীন শতাধিক দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। সেসব দেশের মোট জিডিপি বিশ্বের ৮০ শতাংশ। চীন বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় দেশ এবং বিশ্বের বৃহত্তম বাজার। একই সঙ্গে ই-কমার্স, ইলেকট্রনিক খুচরা ও ইলেকট্রনিক পেমেন্টের ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে এসেছে। আর্থিক প্রযুক্তি ও রোবট প্রযুক্তিতে বিশ্বে প্রথম স্থানে অবস্থান করছে চীন। চীনা বিনিয়োগকারীরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কাঠামোগত উন্নয়ন এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডেভিড লিপটন আরও বলেন, বর্তমানে চীনের দুটি নীতিগত লক্ষ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

(রেকর্ড ২)

'আমরা দুটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত লক্ষ্যের ওপর নজর রাখছি। প্রথমত, ভোগ্যনীতি জোরদার করা। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ কমবে ও ব্যক্তিগত বিনিয়োগ বাড়বে।

দ্বিতীয়ত, সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা জোরদার করা ও ব্যাংকিং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এর অর্থ, কিছু ঋণ প্রকল্পের তত্ত্বাবধান জোরদার করা। তবে এসব ক্ষেত্রে চীন অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে।

(রুবি/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040