তিব্বতে গাছ চাষ করার চাচা বিয়ান জিউ'র গল্প
  2017-12-29 15:48:47  cri

চীনের তিব্বতী জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শাননান শহরের চানাং জেলা ব্রহ্মপুত্র নদীর মধ্য অববাহিকার সঙ্কীর্ণ উপত্যকায় অবস্থিত। শীতকাল ও শরত্কালে বালি ঝড় বেশি, কিন্তু বৃষ্টি কম। বৃক্ষরোপণ হল স্থানীয় একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। চানাং জেলায় বৃক্ষরোপণের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিয়ান জিউকে গাছ বাবা নামে পরিচিত। স্থানীয় নাগরিকরা বলেন, যে গাছ বিয়ান জিউ চাষ করেন, তা বেঁচে থাকার হার উচ্চ। কারণ গাছ বাবা গভীর মনোভাব দিয়ে গাছ করতে থাকরেন।

চাচা বিয়ান জিউ'র বয়স ৫৯ বছর। ২০০৫ সালে তিনি চীনের জাতীয় সবুজায়ন পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৬ সালে তিনি জাতীয় আদর্শ শ্রমজীবির মর্যাদা লাভ করেন। বৃক্ষরোপণ করার কারণ সম্পর্কে চাচা বিয়ান জিউ বলেন, '১৭ বছর বয়স থেকে আমি খাশি চরানো শুরু করি। আমি আট বছরের খাশি চরানো করেছিলাম। তখন আমি খাশি চরানো করার পাশাপাশি পাহাড়ে গাছ চাষ শুরু করি। কয়েক বছরের পর গাছ বড় হয়েছে, আমি গাছের নিচে ঠান্ডা লাগাছিলাম, চা খাছিলাম। শরত্কালে গাছগুলোর পাতা পড়ে গেছে, খাশি পাতা খেতে পারে। সেজন্য আমার মনে হয়, গাছ চাষ করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।'

১৯৯০ সালে বিয়ান জিউ স্থানীয় বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনায় অংশ নেন। তিনি ১২জন নিয়ে এ কাজের দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সরকারের প্রথম বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্র শাননান শহরের নাইদং জেলার জিয়েবা থানায় অবস্থিত। তাঁরা সেখানে পাঁচ বছরের মত বৃক্ষরোপণ করেছিলেন। ২০০৪ সালে বিয়ান জিউ তাঁর দেশের পারিতে প্রায় ১৩লাখ বর্গ মিটারের খিলভুমি ঠিকা করে বৃক্ষরোপণ করার দায়িত্ব শুরু করেন। তিনি গ্রামের কমিশনের সঙ্গে ৫০ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেন। শাননান শহরের বনবিদ্যা ব্যুরো বিয়ান জিউকে বেশি সমর্থন করে। ২০০৫ সালে বিয়ান জিউ এখানে বৃক্ষরোপণ শুরু করেন।

আসলে এ বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্রে অবস্থা খুবই খারাপ। আগে এখানে একটি উপত্যকা ছিল। স্থানীয় নাগরিকরা সন্দেহ করেছিলেন যে, এখানে গাছ বেচে থাকতে পারে কিনা? বিয়ান জিউ'র সম্মুখীন প্রথম প্রশ্ন হল পানি অভাব। প্রথমে তাঁরা ট্র্যাক্টর চালিয়ে নদী থেকে পানি নিয়ে আসতেন। তাঁরা অভ্যন্তরীণ এলাকা থেকে স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সংপতিপূর্ণ গাছ কেনেন।

২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বিয়ান জিউ প্রতি মাসে মাত্র ২ বা ৩ বারের মত পাবিতে ফিরে যান। পাঁচ বছরের মাধ্যমে তিনি বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্রের আয়তন ১৩লাখ থেকে ৩৭ লাখ বর্গ মিটারে বেড়েছেন। যদিও বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্র নির্মাণের প্রক্রিয়ায় তাঁর অনেক কঠিন সম্মুখীন ছিল, কিন্তু তিনি কখনো ত্যাগ করার চিন্তা করেন নি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমি কখনো ত্যাগ করার চিন্তা করি নি। আমি যেকোন পদ্ধতিতে ভালভাবে গাছ চাষ করার চেষ্টা করতে থাকি। আসলে আমার অনেক কঠিন ও চ্যালেন্ঞ্জ সম্মুখীন হই। কিন্তু আমি মাত্র চিন্তা করি যে, অবষ্যই ভালভাবে বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্র নির্মাণ করতে থাকি।'

বর্তমান বিয়ান জিউ প্রতি বছরে কচি চারাগাছ বিক্রির আয় ২০ লাখেরও বেশি ইউয়ান আরএমবি। নেট মুনাফা হল ৩ থেকে ৪ লাখ ইউয়ান। বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্র স্থানীয় বাসিন্দারকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বর্তমান বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্রে স্থায়ী শ্রমিক ৭৬ জন এবং মৌসুমি অস্থায়ী শ্রমিক ২৭০জনেরও বেশি। তাঁরের সর্বোচ্চ বেতন এক দিন ২৩০ ইউয়ান। নূন্যতম ১৪০ ইউয়ান।

ভবিষ্যত্ সম্পর্কে বিয়ান জিউ বলেন, বৃক্ষরোপণ ক্ষেত্র একটি পার্কে নির্মাণ করা হল তাঁর পরিকল্পনা। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'এখানে কোন কোন পাহাড়ে গাছপালা অভাব। আমার পরবর্তী পরিকল্পনা হল পাহাড়ে গাছ চাষ করা। এরপর আমি পাহাড় দৃশ্য স্থানে নির্মাণ করবো, যাতে পর্যটককে আকর্ষণ করার মাধ্যমে স্থানীয় বান্সিদারের আয় বৃদ্ধি করা যাবে।'

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040