গরম শীতের স্মৃতি
  2017-12-29 15:44:09  cri



মুক্তা: বন্ধুরা, আগের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে কণ্ঠশিল্পী চুয়াং সিন ইয়ানের সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছিলাম। তিনি ১৯৯৩ সালের ৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। আশা করি, মনে আছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে চুয়াং সিন ইয়ান'র কণ্ঠে 'গরম শীতের স্মৃতি' গানটি শোনাবো।

তৌহিদ: এ গানে বলা হয়েছে, তুমি জানতে চাও পাহাড়ে আমার বাড়ি কথায়! আমি দূরে সাদা তুষার দেখি। আমি শহরের সমৃদ্ধি খুঁজি। কিন্তু মনের স্মৃতি থেকে তা দূরে নয়। পুরানো স্মৃতি যেনো এক কাপ চায়ের মতো। বসন্ত থেকে শরত্কাল শুধুই একটি মুহূর্ত। তোমাকে ছেড়ে যাবো কী? আমি দীর্ঘ পথ পার হয়েছি, তোমাকে খোঁজার জন্য। তোমাকে ভালবেসেছি দীর্ঘসময়। তাই তোমাকে হারাতে চাই না।

আচ্ছা, বন্ধুরা, চলুন গানটি শুনি।

(গান ১)

মুক্তা: বন্ধুরা শুনছিলেন ''গরম শীতের স্মৃতি'' গানটি। এখন আমি আপনাদেরকে একটি ব্যান্ড দলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো। ব্যান্ডের নাম হল 'থাওফাওজিহুয়া'। বাংলা ভাষায় যার অর্থ 'পালানোর পরিকল্পনা'। মাও ছুয়ান, মা সিয়াও দং, কাং আং ও হংথাও (毛川、马晓东、刚昂、红桃)-এ চার জন ব্যান্ডটি প্রতিষ্ঠা করেন। আগে এর নাম ছিল ময়ূর ব্যান্ড। ব্যান্ডটি ২০০৯ সালে বেইজিংয়ের সংগীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে। একই বছর চীনা রকসংগীত উত্সবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যান্ডের পুরস্কার লাভ করে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে 'থাওফাওজিহুয়া'-এর 'দশ হাজার বার দুঃখ' শিরোনামের গান শোনাতে চাই।

তৌহিদ: এ গানে বলা হয়েছে,

'হে প্রিয়, আমার সবকিছু হলে তুমি। আমি উত্তেজনা থামাতে পারি না, শ্বাস নিতে পারি না! আজ রাতে, কি আরেকটি রাত হারাবো! আমি নিজের চিন্তা লুকিয়ে রাখবো? হে প্রিয়, দশ হাজার বার দুঃখ পাবার মতো! আমার আরো স্বপ্ন আছে। সবসময় উষ্ণ স্থানে তোমার অপেক্ষা করি। প্রতি ফোটা অশ্রু যেনো দশ হাজার আলোর কণা। আমার উষ্ণ প্রবাহ তোমার সমুদ্র খুঁজছে। এটাই আমার নিয়তি। হে প্রিয়, তোমার চোখে দুঃখ দেখা যায়। তুমি ধ্বংসাবশেষে রয়েছো, কিন্তু পালিয়ে যেতে পারবে না। আমরা কি এ রাত আরেক বার হারিয়ে ফেলবো? আমরা কি সব আশা ধ্বংস করবো'?

আচ্ছা, বন্ধুরা, চলুন গানটি শুনি।

(গান ২)

মুক্তা: বন্ধুরা, আপনারা শুনছিলেন 'দশ হাজার বারের দুঃখ' গানটি। এখন আমি আপনাদেরকে আরেকজন নারী কণ্ঠশিল্পীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো। তিনি হলেন মেবাও। তিনি আগে ছিলেন একজন ডিজাইনার । তিনি কোনো বিশেষ প্রতিযোগিতায় অংশ নেননি। তার নিজের গ্রাফিক ডিজাইন কোম্পানি আছে। তার দু'টি সন্তান আছে। তিনি সংগীত খুব পছন্দ করেন। এ বছর তার নিজের অ্যালবাম প্রকাশের কথা রয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে তার কণ্ঠে 'তুমি' নামের গানটি শোনাবো।

তৌহিদ: 'তুমি' গানে বলা হয়েছে, 'তোমার চোখ দেখি, মুখ দেখি, তুমি ধীরে ঘুমাও। আমি আবিষ্কার করেছি, সুখ খুব সহজ এবং মূল্যবান। সাদাকালো পিয়ানোর সংগীত সহজ, গভীর ও বিশুদ্ধ। হয়তো কোনো দিন মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যাবে তুমি। কিন্তু মনে রেখো, আমার ভালোবাসা রয়েছে তোমার সঙ্গে। ভবিষ্যতে যদি কোনো স্বপ্ন থাকে, তোমাকে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করবো। এক মুহূর্তও অপচয় করতে চাই না। হয়তো কোনো দিন তুমি বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াবে! মনে রেখো, তোমার পাশে আমি আছি। তোমার সঙ্গে থাকবো আজীবন।'

আচ্ছা বন্ধুরা, চলুন গানটি শুনি।

(গান ৩)

মুক্তা: আচ্ছা, বন্ধুরা, শুনছিলেন 'তুমি' নামের গান। এখন আমি আপনাদেরকে 'ঊষাকালে' নামের গান শোনাতে চাই। গেয়েছেন হান হং। তিনি ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তিব্বতি জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ছাংদং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন সুরকার, কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, সংগীত প্রযোজক, সম্পাদক, উপস্থাপিকা, চীনা জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য এবং জাতীয় প্রথম পর্যায়ের অভিনেত্রী। ২০১৬ সালে তিনি চীনের দাতব্য প্রতিষ্ঠানের বিখ্যাত ব্যক্তির তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনি এক চারুকলা পরিবারের সদস্য। তিনি ৫ বছর বয়স থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশনা শুরু করেন। ১৯৮০ সাল থেকে তিনি কিশোর গায়কদলে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি গণমুক্তিফৌজের দ্বিতীয় আর্টিলারি কমান্ড কর্মক্ষমতা দলে প্রবেশ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি পিপলস লিবারেশন আর্মি আর্টস ইনস্টিটিউটের ভর্তি হন। ১৯৯৬ সালে তিনি তালিয়ানে আয়োজিত চীনা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি সংগীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি গানে সুর দেওয়া শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি নিজের প্রথম অ্যালবাম প্রযোজনা ও প্রকাশ করেন।

তৌহিদ: 'ঊষাকালে' গানের পিছনের গল্প এমন, ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর কুইচৌ প্রদেশের মালিংহো অঞ্চলের একটি কেবল কার হঠাত্ দুর্ঘটনায় পড়ে। কোচে ছিলো বাবা, মা ও তাদের দুই বছর বায়সী ছেলে। দুর্ঘটনায় বাবা-মা মারা গেলেও তাদের ছেলে বেঁচে যায়। এ ঘটনা হান হংয়ের মনকে নাড়া দেয়। এরপর হান হং ওই ছেলেকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেন। গানের কথা এমন,

শরত্কালের বাতাস যেনো দীর্ঘস্থায়ী। আমি তাদের কথা পড়েছি। অসহায় চোখের সুন্দর দৃশ্য দেখেছি। আমি শুনেছি, একটি উচ্চ শব্দে উপত্যকা কেঁপে ওঠে। ওই শরত্কালে আমি বাবার চোখ কখনও দেখতে পাবো না। তিনি তাঁর জীবন দিয়ে আমাকে বাঁচিয়েছেন। আমাকে ছেড়ে যাবেন না। আমি দেখেছি, আমার বাবা-মা চলে গেছে। আমাকে একা পৃথিবীতে রেখে। জানিনা, ভবিষ্যত কত কঠিন। আমি তাদের হাত ধরি। সূর্য উঠার সময় মা হেসে ওঠেন। রাতের আকাশে তারকা উজ্জ্বল। আমি স্বপ্নে মাকে দেখেছি। আমি একা এ বিশ্বে শক্তিশালী হয়ে উঠবো। আমি তাদের জন্য একটি সুন্দর বাগান তৈরি করতে চাই। সূর্য উঠছে, ঊষা এসেছে।

আচ্ছা বন্ধুরা, চলুন গানটি শুনি।

(গান ৪)

‌মুক্তা: বন্ধুরা, শুনছিলেন 'ঊষাকালে' শিরোনামের গানটি। আশা করি, গানটি সবাই পছন্দ করেছেন। শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা আপনাদেরকে চারটি চীনা গান শুনিয়েছি। এখন শোনাবো কয়েকটি বাংলা গান। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

(বাংলা গান)

তৌহিদ: প্রিয় শ্রোতা, এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আমাদের অনুষ্ঠানে আপনারা কোনো পছন্দের গান শুনতে চান, তাহলে জানাবেন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn। আর আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানা caiyue@cri.com.cn। 'গানের অনুরোধ' আমার নিজস্ব ই-মেইল ঠিকানায় পাঠালে ভালো হয়।

আজ তাহলে এ পর্যন্তই। আশা করি, আগামী সপ্তাহের একই দিন, একই সময়ে আবারো আপনাদের সঙ্গে কথা হবে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। চাই চিয়ান। (মুক্তা/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040