বন্ধুরা, প্রথমে শুনবেন "ব্যাংককে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পঞ্চম বার্ষিকী উদযাপন" শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক খবর।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পঞ্চম বার্ষিকী উদযাপনী অনুষ্ঠান ১৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। চীন ও থাইল্যান্ডের প্রায় চার'শ অতিথি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।
থাইল্যান্ডের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী উইসানু ক্রেয়া-গাম বলেন, চীনের লম্বা ইতিহাস ও গভীর সংস্কৃতি আছে। বিশাল আকর্ষণীয় চীনা সংস্কৃতি থাই মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। তিনি আশা করেন ব্যাংককে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চীনের হাজার হাজার সংস্কৃতি থাই মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে। যাতে এ সাংস্কৃতিক ভিত্তি দু'দেশের মৈত্রী ও অভিন্ন উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর ও শক্তিতে পরিণত হতে পারে।
থাইল্যান্ডে চীনের রাষ্ট্রদূত ল্যু চিয়েন উদযাপনী অনুষ্ঠানে দেওয়া এক ভাষণে কেন্দ্রটির অর্জিত সাফল্যে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, গত ৫ বছরে ব্যাংককে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৬ শতাধিক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ইভেন্ট আয়োজিত হয়। এতে দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়। সাংস্কৃতিক বিনিময় হচ্ছে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়ন এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া ত্বরান্বিত করার গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।
ব্যাংককে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হলো চীন সরকারের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত প্রথম সাংস্কৃতিক বিনিময় সংস্থা। এ কেন্দ্র থেকে চীনা সংস্কৃতি, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও তথ্য সেবা দেওয়া হয়। থাই সরকার কেন্দ্রটিকে দৃঢ় সমর্থন দেন আর থাই জনগণ কেন্দ্রটির উচ্চ পর্যায়ের মূল্যায়ন করেন।
বন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা "ব্যাংককে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পঞ্চম বার্ষিকী উদযাপন" শিরোনামে সাংস্কৃতিক খবরটি শুনলেন। এবার শুনুন 'ছিংহুয়া সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবন ফোরাম ২০১৭' শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।
'ছিংহুয়া সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবন ফোরাম ২০১৭' ১৮ নভেম্বর ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্বোধন হয়। ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্টি কমিটির সম্পাদক, স্কুল বোর্ডের পরিচালক, সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবন কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির পরিচালক ছেন স্যু, সিপিসি'র জাতীয় গণকংগ্রেসের শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান, ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও যোগাযোগ কলেজের ডিন, সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবন কলেজের ডিন লিউ পিন চিয়ে এবং দেশি-বিদেশি একাডেমিশিয়ান, শিল্পী ও রাজনীতিকরা যৌথভাবে এ ফোরামে সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবনবিষয়ক কাজ ও শিল্প নিয়ে আলোচনা করেন। এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো 'চীনা সংস্কৃতি: পরিবর্তন ও উন্নয়ন'।
ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলবিষয়ক কমিটির উপ-পরিচালক সি জুং খাই ফোরামে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের কর্ম-প্রতিবেদনে সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাস নিয়ে নতুন দাবি পেশ করেছেন। সেজন্য ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাস লালন-পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি আশা করেন, সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন কলেজের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় সাংস্কৃতিক ঐকমত্য জোরদার হবে, উন্নত হবে সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন ক্ষমতা।
সিপিসি'র জাতীয় গণকংগ্রেসের শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান, ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও যোগাযোগ কলেজের ডিন, সংস্কৃতি এবং উদ্ভাবন কলেজের ডিন লিউ পিন চিয়েও ফোরামে ভাষণ দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, নতুন যুগের দাবিতে আমাদের উচিত নতুন দৃষ্টি নিয়ে সাংস্কৃতিক উন্নয়নবিষয়ক ইস্যুর সম্মুখীন হওয়া। তিনি আশা করেন, এবার ফোরামে অংশগ্রহণকারী অতিথিরা ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন কলেজের সঙ্গে মূল্যবান মতবিনিময় করে চীনের স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করবে।
ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের চেয়ারম্যান মাইকেল ওয়ারবস ফোরামে বলেন, সংস্কৃতি হলো টেকসই উন্নয়নের কেন্দ্র। তিনি মনে করেন, সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন শিল্পের ভবিষ্যতে চীনের উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশ্বের সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে চীনের আরো অবদানের প্রত্যাশা করেন চেয়ারম্যান মাইকেল। তাছাড়া তিনি আরো আশা করেন, ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন কলেজ বৈশ্বিক সৃষ্টিশীল শহরের গবেষণাকাজে আরো বেশি অংশ নেবে।
ডিজনি কোম্পানির বৃহত্তর চীন অঞ্চলের চিফ মার্কেটিং অফিসার ছাই জি হেং বলেন, ডিজনি'র সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাপনার কেন্দ্র হলো 'মন দিয়ে বিনোদন'। তিনি বলেন, ৮৯ বছর আগে, ডিজনি সেরা গল্প ও সর্বশেষ প্রযুক্তি নিয়ে দর্শক ও ভোক্তাদের কাছে সেরা বিনোদনসামগ্রী এবং অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করে। এর পর গভীর ডিজিটাল বিন্যাস, স্থানীয়করণ কৌশল আপগ্রেড এবং ভোক্তাদের বোঝাপড়া- এ তিনটি উন্নয়ন কৌশল নিয়ে ধীরে ধীরে ডিজনি কোম্পানির ব্যবসা প্রসারিত হয়।
চীনের 'ইছিই' কোম্পানির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছেন উয়েই ই গণসংস্কৃতি প্রচার এবং নেটওয়ার্ক বিনোদন প্রোগ্রামের উদ্ভাবনী উন্নয়ন নিয়ে বিশ্লেষণ করেন। তিনি বলেন, ভালোভাবে নেটওয়ার্ক কাজে লাগাতে পারলে ইন্টারনেটে একটি ছোট অনুষ্ঠান বিশাল সামাজিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
ফোরামের পর ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সাংস্কৃতিক ও উদ্ভাবনী সংস্থা, বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেইজিংয়ের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ও উদ্ভাবনী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি ছাত্র সাংস্কৃতিক উদ্ভাবনী জোট প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/টুটুল)