বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে 'চীনের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেস সম্পর্কিত চীনের উন্নয়ন ও বিশ্বের তাত্পর্য' শীর্ষক আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক সেমিনার। চীনের সমাজবিজ্ঞান একাডেমি ও চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময় কেন্দ্র যৌথভাবে এ উদ্যোগ গ্রহণ করে। সিপিসি'র কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য, সিপিসি'র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার বিভাগের মন্ত্রী হুয়াং খুন মিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান ভাষণ দেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশের থিংক ট্যাংক কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়াসৌ ফুকুদা, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ, ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডোমিনিক দ্য ভিল্লেপিন-সহ সাবেক রাজনীতিবিদরা সেমিনারে সমবেত হন। সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের পর চীনে এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক ফোরাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী হুয়াং খুন মিং 'চীনের নবযাত্রা শুরু ও বিশ্ব উন্নয়নের নতুন সুযোগ' শিরোনামে প্রধান বক্তৃতা দেন। তিনি বলেন, সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেস জনসাধারণের সুন্দর জীবনের প্রত্যাশার ওপর নজর রেখেছে এবং নতুন যুগে চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতান্ত্রিক কার্যক্রম ও উন্নয়নের রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। এবারের জাতীয় কংগ্রেসের যুগান্তকারী তাত্পর্য আছে যা বিশ্বে গভীর প্রভাব ফেলবে। নতুন যুগে চীনের উন্নয়ন বিশ্বের জন্য আরো বেশি সুযোগ বয়ে আনবে। চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যৌথভাবে আরো সুন্দর বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আশা করি, দেশি-বিদেশি থিংক ট্যাংক সক্রিয়ভাবে সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের কথা তুলে ধরবে, সার্বিক ও গভীরভাবে সিপিসি নিয়ে গবেষণা করবে, আন্তরিকভাবে মতবিনিময় করবে এবং বাস্তব সহযোগিতা করবে।
ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডোমিনিক দ্য ভিল্লেপান মনে করেন, গত কয়েক দশকে চীনের উত্থানের সঙ্গে চীনের উন্নয়ন বিশ্বে লক্ষণীয় প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, 'গত কয়েক দশকে বিশ্বে আকাশ-পাতাল পরিবর্তন হয়েছে। চীন আবার বিশ্বমঞ্চে ফিরে এসেছে। এটা মনে হয় বর্তমান বিশ্বে সুস্পষ্ট এক বৈশিষ্ট্য। চীন উপলব্ধি করেছে, আন্তর্জাতিক সংকট নিষ্পত্তি, নেতৃত্ব ও প্রবৃদ্ধি জোরদার করার ক্ষেত্রে মহান দায়িত্ব পালন করছে দেশটি। চীনের উচিত্ ইউরোপ ও স্থিতিশীল স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে নতুন এ যুগে হাতে হাত রেখে যৌথভাবে সহযোগিতা করা।'
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ তার ভাষণে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রস্তাবের সুদূরপ্রসারী প্রভাবের কথা জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, 'আমি পাকিস্তান থেকে এসেছি। পাকিস্তান হলো 'এক অঞ্চল, এক পথ' মহান প্রস্তাবের সুবিধাভোগী দেশের অন্যতম। 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রকল্প আমাদের দেশে অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। আমরা চীনের এমন মহান প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় দেশগুলোও এ মহান উদ্যোগে অংশ নিয়েছে। এটা পাকিস্তানের উন্নয়নের অবস্থা পরিবর্তন করবে।'
কেনিয়ার আফ্রিকান নীতি গবেষণালয়ের মহাপরিচালক পিটার কাগওয়ানজা বলেন, 'ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেস চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। প্রেসিডেন্ট সি'র উত্থাপিত চীনা জনগণের স্বপ্ন অন্যান্য দেশের জনগণের স্বপ্নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। ২০১৭ সালের পর চীনের উন্নয়ন কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনা আফ্রিকা ও চীন এ দুই সভ্যতার মধ্যে সহযোগিতার নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং এ সহযোগিতা আরো গভীর ও সম্প্রসারিত হবে।'
সেমিনারে প্রধানত ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান সফলতা এবং বিশ্বের তাত্পর্য, উন্নয়ন ও উন্মুক্তকরণের চীন ও বিশ্ব অর্থনীতির নতুন সুযোগ এবং চীনের বৈদেশিক নীতি ও বিশ্বের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন-এ তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
(ইয়ু/তৌহিদ)