সংবাদ পর্যালোচনা: ম্যানিলায় চীনের প্রধানমন্ত্রী ও ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত
  2017-11-16 17:59:54  cri

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং বুধবার বিকেলে ম্যানিলায় প্রেসিডেন্ট ভবনে ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী লি বলেন, বাস্তব অনুশীলন প্রমাণ করেছে যে, সুপ্রতিবেশীসূলভ বন্ধুত্বের অনুসরণ করা চীন ও ফিলিপিন্সের মৌলিক স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এটা মূলত জনমত, আঞ্চলিক মূল প্রবণতা এবং অভিন্ন উন্নয়নের ভিত্তি। চীন-ফিলিপিন্স যৌথভাবে সঠিক পথ অবলম্বন করে মৈত্রী সুসংবদ্ধ করবে, সহযোগিতা গভীর করবে, হারানো সময় আবার ফিরিয়ে আনবে এবং দু'দেশের সম্পর্কের সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল উন্নয়ন এগিয়ে নেবে।

বুধবার বিকেলে ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে প্রেসিডেন্ট ভবনের চত্বরে প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংয়ের জন্য মনোজ্ঞ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ সময় সামরিক ব্যান্ড দল চীন ও ফিলিপিন্সের জাতীয় সংগীত বাজায়। চত্বরে ১৯ বার তোপধ্বনি করা হয়। দু'দেশের নেতারা একসাথে গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।

এক দশকে চীনের কোনো প্রধানমন্ত্রীর এটাই প্রথম ফিলিপিন্স সফর। বৈঠকে লি খ্য ছিয়াং প্রেসিডেন্ট দুতের্তেকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আন্তরিক শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, 'এখন উত্তর গোলার্ধে শীতকাল এসেছে। তবে ম্যানিলার তাপমাত্রা এখনো অনেক বেশি। এটা যেন বর্তমান চীন-ফিলিপিন্স সম্পর্কের মতো। আমাদের সম্পর্ক ধীরে ধীরে উষ্ণ হয়ে উঠছে। আমরা আশা করি, এ ভালো প্রবণতা বজায় থাকবে এবং হারানো সময় ফিরে আসবে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আমি প্রথম ফিলিপিন্সে এসেছি। আমরা মৈত্রী বজায় রাখার জন্য এসেছি। যদিও আমাদের সম্পর্কে ঝড়বৃষ্টি ছিল; তবে দু'দেশের সম্পর্ক ভালোর দিকে যাবে-এমনটাই আশা করে জনগণ। আমাদের সুন্দর ভবিষ্যত সৃষ্টির সদিচ্ছা কখনো পরিবর্তন হয়নি।'

লি খ্য ছিয়াং উল্লেখ করেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, তথ্য প্রযুক্তি, কৃষি ও মত্স্য শিল্প, দারিদ্র্য বিমোচন ও আবাসন খাতে সংস্কারসহ নানা খাতে ফিলিপিন্সকে সহযোগিতা করতে চায় চীন। কৌশলগত নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করা, ঐতিহ্য ও অপ্রচলিত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ ভালোভাবে মোকাবিলা করা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও যুব খাতে সহযোগিতা জোরদার করতে চায় চীন।

দুতের্তে বলেন, 'এ সফরে আমি ও প্রধানমন্ত্রী লি প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, সামুদ্রিক সহযোগিতা, আইন প্রয়োগ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং মাদকদ্রব্য পাচার রোধসহ অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আন্তরিক মতবিনিময় করেছি। ফিলিপিন্স আসিয়ানের পালাক্রমিক সভাপতি রাষ্ট্র হওয়ার সময় চীন সরকার যে মূল্যবান সমর্থন দিয়েছে, আমি এ সুযোগে তার কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের উত্থাপিত ফিলিপিন্সের অবকাঠামো নির্মাণে জাতীয় পরিকল্পনায় চীন সরকার যে সমর্থন দিয়েছে, তাতেও আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ তা ফিলিপিন্সের জনস্বার্থের সঙ্গে জড়িত। ফিলিপিন্সের মালাভি যুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর পুনর্বাসন এবং জীবিকা উন্নয়নে চীন যে সমর্থন দিয়েছে, তার জন্যও আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।'

দুতের্তে বলেন, চীন হচ্ছে ফিলিপিন্সের ভালো বন্ধু ও আন্তরিক সহযোগী অংশীদার। চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিলিপিন্সে বিনিয়োগে স্বাগত জানাই। আমরা চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা শিখতে আগ্রহী, দু'দেশের পরিবহন ব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ ও কৃষিসহ নানা খাতে সহযোগিতা জোরদার করতে চাই এবং দু'দেশের সম্পর্ক সফলতার দিকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। চীন ও আসিয়ানের সম্পর্কোন্নয়নে সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করবে ফিলিপিন্স।

বৈঠকের পর লি খ্য ছিয়াং এবং দুতের্তে অবকাঠামো, উত্পাদন শক্তি, অর্থনৈতিক প্রযুক্তি, অর্থ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের দশ বারোটি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতামূলক দলিল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

(ইয়ু/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040