সিউল-চীনা দিবস-২০১৭' সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত
  2017-11-14 18:26:06  cri
সুপ্রিয় বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠান 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি'। আর এ অনুষ্ঠানে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু ওয়াং ছুই ইয়াং জিনিয়া।

প্রথমে "দ্বিতীয় ইতালীয় গ্লোবাল ফুড সপ্তাহ" আয়োজন সংক্রান্ত একটি সাংস্কৃতিক খবর।

দ্বিতীয় ইতালীয় গ্লোবাল ফুড সপ্তাহ আগামী ২০ থেকে ২৬ নভেম্বর চীনের কুয়াং চৌ শহরে অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২ নভেম্বর কুয়াং চৌয়ে ইতালির কনস্যুলেটে দ্বিতীয় ইতালীয় গ্লোবাল ফুড সপ্তাহ উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ইতালীয় গ্লোবাল ফুড সপ্তাহে ইতালির প্রায় ৩'শ কূটনৈতিক, কনস্যুলার এবং সাংস্কৃতিক সংস্থার উদ্যোগে এক'হাজারেরও বেশী ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, কুয়াং চৌয়ে ইতালীয় কনস্যুলেট, ইতালির ফরেন ট্রেড কমিশন, চীনা-ইটালিয়ান চেম্বার অব কমার্স, এমিলিয়া রোমাগ্না এলাকা, ইতালীয় রন্ধন শৈলী ইনস্টিটিউট, ইতালীয় সমেলিয়ার ইনস্টিটিউট এবং সুন দে কারিগরি কলেজের সঙ্গে ধারাবাহিক খাদ্য উত্সব কার্যক্রম প্রচার করবে। এতে রয়েছে: 'বিশ্ব খাদ্য গবেষণা ও উদ্ভাবন ফোরাম—নতুন রেশম পথে খাদ্য নিরাপত্তা', ইতালীয় রেসিপির রন্ধন প্রতিযোগিতা, ইতালীয় বিখ্যাত নিরামিষ শেফ অররা আর্কা'র রন্ধন শো, 'ইতালীয় অসাধারণ সুস্বাদ্যু খাবার' এবং হাইনান আন্তর্জাতিক কফি প্রদর্শন ইত্যাদি।

কুয়াং চৌয়ে ইতালির কন্সুলার জেনারেল লরা এপোজি জানিয়েছেন, খাবারের প্রেমের মাধ্যমে ইতালি-চীন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে। দু'দেশের খাদ্য সাংস্কৃতিক বিনিময়ও এগিয়ে যাবে।

বন্ধুরা, "দ্বিতীয় ইতালীয় গ্লোবাল ফুড সপ্তাহ" অনুষ্ঠান সম্পর্কিত সাংস্কৃতিক খবরটি এখানেই শেষ। এবার শুনুন নভেম্বর মাসকে 'চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র মাস' হিসেবে নির্ধারণ শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।

চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র দিবস দীর্ঘদিন ধরে দু'দেশের চলচ্চিত্র বিষয়ক বিনিময় ও সহযোগিতার জন্য অবদান রেখে চলেছে। তাই নভেম্বর মাসকে 'চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র মাস' নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য সরকার।

ত্রয়োদশ চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র দিবস ১ নভেম্বর ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস এ্যান্জেলেসে অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, ৩০ অক্টোবর লস এ্যান্জেলেসের প্যারামাউণ্ট থিয়েটারে পালিত হয় চীন-মার্কিন টিভি দিবস।

এখন পর্যন্ত চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র দিবসে ৮'শটিরও বেশী দর্শকপ্রিয় ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। 'চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র দিবস উদযাপনের সময় আয়োজকরা দু'দেশের প্রধান প্রধান ফিল্ম কোম্পানিগুলোকে আমন্ত্রণ করে একসাথে মিলে ফিল্ম এবং টেলিভিশন শীর্ষ ফোরাম এবং ভিডিও বাজার এবং প্রচার বিষয়ক সম্মেলন আয়োজন করে। চলতি বছরের 'চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র মাসে' লস এঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, লাস ভেগাস, হিউস্টন এবং ডালাসসহ বিভিন্ন মার্কিন শহরগুলোর প্রধান প্রধান সিনেমা হলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের একশ'রও বেশী আকর্ষণীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে।

লস এঞ্জেলেসে চীনের কনস্যুলেটের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর ওয়াং জিন 'চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র মাস' নির্ধারণ অনুষ্ঠানে বলেন, "২০০৫ সাল থেকে চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র দিবস দু'দেশের সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্র বিনিময়ের জন্য একটি সেরা প্ল্যাটর্ফম দিয়েছে।" তাছাড়া, দু'দেশের জনগণের বোঝা পড়া ও মৈত্রী উন্নয়নের জন্যও অনেক অবদান রেখেছে।

বন্ধুরা, নভেম্বর মাসকে 'চীন-মার্কিন চলচ্চিত্র মাস' হিসেবে নির্ধারণ শিরোনামে সাংস্কৃতিক খবরটি এখানে শেষ হোল। এবার শুনুন দশ তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের সাংস্কৃতিক মেলা শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক খবর।

তাইওয়ানের দু'হাজারেরও বেশী সাংস্কৃতিক সংস্থা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান দশ তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের সাংস্কৃতিক মেলায় অংশ নিয়েছে। এ সাংস্কৃতিক মেলা ৩ নভেম্বর চীনের ফু চিয়েন প্রদেশের সিয়া মেন শহরে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মেলায় তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের অংশগ্রহণ দেখে মনে হয় যে, সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল শিল্প হলো তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের বিনিময় ও সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটর্ফম। তাঁরা আশা করেন এবারের সাংস্কৃতিক মেলার মাধ্যমে দু'পারের জনগণের সমঝোতা গভীর হবে।

এবার সাংস্কৃতিক মেলায় ১২টি স্টল খোলা হয়। এ ১২টি স্টল ৪টি বিভাগে গঠিত। এগুলো হলো 'ক্র্যাফ্ট আর্টওয়ার্ক', 'ক্রিয়েটিভ ডিজাইন', 'ডিজিটাল বিষয়বস্তু ও ফিল্ম'।

বন্ধুরা, এবার শুনুন 'সিউল-চীনা দিবস-২০১৭' সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।

অক্টোবর মাসের শেষ দিকে চীনের সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়, হুনান প্রদেশের সরকার, দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের দূতাবাসের উদ্যোগে পঞ্চম 'সিউল-চীনা দিবস ২০১৭' সিউল মহাচত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের রাষ্ট্রদূত ছিউ কুও হং এবং সিউল মহা নগরের মেয়র পার্ক ইউয়ান চুন একসাথে দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং ভাষণ দিয়েছেন। ছিউ কুও হং বলেন, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। এশিয়ার উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক শান্তি ও বিশ্বের সমৃদ্ধি এগিয়ে নিতে দু'দেশের অভিন্ন চেষ্টা রয়েছে। 'সিউল-চীনা দিবস' দক্ষিণ কোরীয় জনগণের কাছে আরো বেশী চীনা তথ্য এনে দেবে, দু'দেশের জনগণের সমঝোতা ও মৈত্রী আরো গভীর হবে।

২০১৭ সাল চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিার ২৫তম বার্ষিকী। 'সিউল-চীনা দিবস' দু'দেশের অভিন্ন সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত এবং দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য আরো বেশী অবদান রাখার প্রত্যাশা প্রকাশ করেন ছিউ। পার্ক ইউয়ান চুন বলেন, সিউল দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী হিসেবে, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ উন্নয়নের জন্য অনেক অবদান রেখেছে।

ভাষণের পর চীনের হুনান প্রদেশের শিল্পী দল, বেইজিংয়ের জাতীয় সাংস্কৃতিক হেরিটেজ রক্ষা তহবিল, থাংজিং সাংস্কৃতিক দড়াবাজি দল, সিউল শহরের কয়েকটি প্রতিনিধিত্বশীল তায়কোন্ডো পার্ফমিং দল এবং সিউলের চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পারফর্মিং দলসহ দু'দেশের ৮টি গ্রুপ এবং প্রায় ৩০টি প্রদর্শনী সংস্থা স্থানীয় নাগরিকদের জন্য চমত্কার অনুষ্ঠান পারফর্ম করে।

অনুষ্ঠান ছাড়াও মহাচত্বরে 'চীনা গল্প ছবি প্রদর্শনী ২০১৭' অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রদর্শনীতে সুন্দর চীনা দৃশ্য ও চীনের উন্নয়ন প্রতিটি ছবিতে উপভোগ করেন দর্শকরা। প্রদর্শনীর কেন্দ্র এলাকায় 'চীনের বিগত ৫ বছর', 'বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস', 'হুনান সংস্কৃতি বিশ্বের মঞ্চে'সহ বিভিন্ন প্রচার ভিডিও দর্শকদের কাছে চমত্কার চীনা গল্প ব্যাখ্যা করেছে। এতে চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে চীনের মহা কৌশল এবং চীনের শান্তি উন্নয়নের ধারণা প্রকাশ করা হয়।

বন্ধুরা, বিশ্বের সাংস্কৃতিক পর্ব এখানে শেষ। এখন শুনুন আমার সহকর্মী মহসীনের উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক পর্ব।

প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com

চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/মহসীন)

বন্ধুরা আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। আমাদের নিয়মিত আয়োজন সাহিত্য ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের দক্ষিণ এশিয়া পর্বে আপনাদের আমন্ত্রন জানাচ্ছি। আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন।

বন্ধুরা, প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় এবং সর্বাধিক পঠিত কথা সাহিত্যিক। বাংলা কথা সাহিত্যের নতুন পাঠক তৈরিতে তিনি এক ধরণের বিপ্লব সৃষ্টি করেন। পেশায় হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের রসায়ন বিদ্যার শিক্ষক। পরবর্তীতে লেখালেখিকে তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন।

একই সাথে হুমায়ূন আহমেদ নাটক এবং ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ করে বাংলাদেশের মৃতপ্রায় বিনোদন অঙ্গনে প্রাণ সঞ্চার করেন।

গতকাল ১৩ নভেম্বর ছিল গুনী এই কথাশিল্পী ও নির্মাতার ৬৯ তম জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

নানা আয়োজনে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাইরে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম দিন উদযাপিত হয়। এ সংক্রান্ত কিছু খবর আপনাদের জানাব।

বড় পরিসরে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম দিন উপলক্ষ্যে বিশেষ আয়োজন করে বিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগল। হিমু চরিত্রের স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা একটি ডুডল তৈরি করে। গতকাল বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যারা গুগলে ব্রাউজ করেছেন তাদের নিশ্চয়ই চোখে পড়ে থাকবে বিশেষ ডুডলটি। এতে দেখানো হয়েছে, চায়ের টেবিলে বই হাতে বসে আছেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর তৈরি জনপ্রিয় চরিত্র হিমু হলুদ পাঞ্জাবি পরে খালি পায়ে হেঁটে আসছে। আর চারপাশে প্রকৃতির আবহ।

বিশেষ দিন স্মরণে ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গুগল তাদের হোমপেজে মানানসই লোগো তৈরি করে থাকে। এটাকেই বলা হয় ডুডল।

বাংলাদেশে বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল, চ্যানেল আই হ‌ুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন স্মরণে হুমায়ন মেলার আয়োজন করে। এটি তাদের নিয়মিত আয়োজন।

গতকাল ঢাকার তেজগাঁওয়ের প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা। প্রয়াত এ লেখকের পরিবারের সদস্য ছাড়াও সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা এতে উপস্থিতি ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিল প্রবীণ অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম, আতাউর রহমান, সংগীতশিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়, সেলিম চৌধুরী, ফেরদৌস আরা, শিশুসাহিত্যিক আলী ইমাম, কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনসহ অনেকে। হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় হলুদ রঙের বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন অতিথিরা। মেলায় ছিল হুমায়ূন আহমেদের বই, চলচ্চিত্র, নাটকসহ তার কর্মজীবনের নানা সামগ্রীর স্টল। এছাড়া ছিল হ‌ুমায়ূন আহমেদের লেখা গান, নাচ, আবৃত্তি, স্মৃতিচারণা পর্ব।

এদিকে, গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ঢাকার কাছে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতেও গতকাল পালিত হয় হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিন। সকাল থেকে শীতের কুয়াশা মাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন হুমায়ূন ভক্তরা। সাইকেল, বাসে চড়ে হলুদ পাঞ্জাবি পরা হিমু পরিবারের সদস্যরাও এসেছিলেন। কবরে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে হুমায়ূন আহমেদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তারা।

প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন তার দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিদকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারা হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ও তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করেন। হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি আর ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষণে নুহাশ পল্লীতে জাদুঘর নির্মাণের কথা বলেছেন স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন।

অকাল প্রয়াত গুনী এই লেখকের প্রতি আমরাও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

বন্ধুরা, সহিংসতা থেকে রক্ষা পেতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে এসময়ে অন্যতম আলোচনার বিষয়। এ বছরের অগাস্ট মাসের শেষের দিকে শুরু হওয়া সহিংসতা থেকে বাঁচতে ইতোমধ্যেই প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা কক্সবাজার, টেকনাফ আর পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু অংশ এই বাস্তুচ্যুত মানুষের উপস্থিতিতে হারিয়েছে তার নিজস্ব সৌন্দর্য। আর অস্থায়ীভাবে তৈরি আশ্রয় শিবিরে এসব রোহিঙ্গারাও ভাল আছে এ কথা ভাববার কোন অবকাশ নেই। ঘটনাটিকে জাতিসংঘ দেখছে জাতিগত উচ্ছেদ কার্যক্রমের আদর্শ

উদাহরণ হিসেবে তাদের ভাষায় এথনিক ক্লিঞ্জিং এর টেক্সটবুক এক্সাম্পল।

এই ঘটনায় সেদেশের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সু চির ভূমিকা নিয়ে সমালচনার ঝড় ওঠেছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদ করছেন। এসব খবর আমরা আপনাদের ইতোপূর্বে জানিয়েছি।

এবার এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন আয়ারল্যান্ডের প্রখ্যাত সংগীত ব্যক্তিত্ব বব গেলডফ।

তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চালিত আমানবিক আচরনের প্রতিবাদস্বরূপ সম্মানসূচক ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব ডাবলিন অ্যাওয়ার্ড ফিরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সু চিও একই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।

বব গেলডফ মনে করেন, রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর জাতিগত নিধন রোধে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন সু চি।

তিনি বলেন, ডাবলিন শহরের সঙ্গে সু চির যে সম্পৃক্ততা তা সবার জন্য লজ্জার।

বব গেলডফ এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা তাকে সম্মানিত করেছিলাম, কিন্তু তিনি আমাদের লজ্জিত করেছেন।

এরই প্রতিবাদে তিনি সোমবার ডাবলিনে সিটি হল কর্তৃপক্ষের কাছে তার অ্যাওয়ার্ড ফিরিয়ে দেবেন বলে জানান।

এর আগে গত মাসে অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিল ১৯৯৭ সালে দেয়া সু চির ফ্রিডম অব দ্য সিটি অ্যাওয়ার্ড প্রত্যাহার করে নেয়।

বন্ধুরা, শনিবার, ১৮ নভেম্বর সন্ধায় চীনের সানাইইয়া শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ বছরের বিশ্ব সুন্দরী নির্বাচনের আসর মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। এবারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ জেসিয়া ইসলাম।

বাংলাদেশের জন্য সুখবর জানাচ্ছেন তিনি। প্রতিযোগিতার হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ পর্বে বিজয়ী হয়েছেন জেসিয়া ইসলাম। এর মাধ্যমে মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৭ প্রতিযোগিতায় সেরা ৪০-এ নির্বাচিত হলেন তিনি। রোববার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের সাফল্যের এ খবর জানিয়েছেন জেসিয়া ইসলাম নিজেই।

বিশ্বের ১২০ জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা ৪০ জনকে নির্বাচন করা হয়েছে। আর এই ৪০ জনের মধ্যে আছেন জেসিয়া। এর মাধ্যমে তিনি প্রতিযোগিতায় এক ধাপ এগিয়ে গেলেন। 'মিস ওয়ার্ল্ড' প্রতিযোগিতার ফাইনালের মঞ্চে থাকছেন তিনি। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের জন্য এটি একটি সুখবর।

এবারের 'মিস ওয়ার্ল্ড' প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের ডিজাইন করছে বেইজিং রাইজ। আড়াই ঘণ্টা ব্যপ্তির অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় থাকবেন টিম ভিনসেন্ট, মেগান ইয়ং ও স্টিভ ডগলাস। নতুন মিস ওয়ার্ল্ডকে মুকুট পরিয়ে দেবেন বর্তমান বিশ্বসুন্দরী স্টেফানি দেল ভালে।

বন্ধুরা, ২৩তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছে শুক্রবার। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় এই উদ্বোধন অনুষ্ঠান। উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে ৫৩টি দেশের ১৪৩টি ছবি। কলকাতার ১২টি প্রেক্ষাগৃহ ও মিলনায়তনে দেখানো হচ্ছে ছবিগুলো।

বাংলাদেশ থেকে এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে আবু সাইয়ীদের ছবি 'এক কবির মৃত্যু'।

উৎসব চলবে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত।

আর ২০ নভেম্বর থেকে ভারতের গোয়ায় শুরু হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া। এশিয়ার অন্যতম পুরোনো এই উৎসব অন্যতম চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত।

১৯৫২ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর আমলে শুরু হয় এই উৎসব। প্রথম উৎসবে যোগ দিয়েছিল ২৩টি দেশের ২০০ সিনেমা। এবার অংশ নিচ্ছে ১০০টি দেশ।

জানা গেছে, এবার এই উৎসবকে ঘিরে গোয়ার গ্রামের আদলে তৈরি হয়েছে উৎসব চত্বর। এখানে নির্মিত হয়েছে চারটি নতুন প্রেক্ষাগৃহ। এবার এই উৎসবের 'থিম কান্ট্রি' কানাডা। আসছে কানাডার একগুচ্ছ ছবি।

এবার এই উৎসবে দেখানো হচ্ছে ছয়টি বাংলা ছবি। 'ইন্ডিয়ান প্যানোরমা' বিভাগে প্রদর্শনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে ২৬টি ছবি। এর মধ্যে আবার মেইনস্ট্রিম বিভাগে বাছাই করা হয়েছে ৫টি ছবি। তাতে থাকছে বাংলা সিনেমা 'মেঘনাদ বধ রহস্য'। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অনীক দত্ত। এ ছাড়া প্যানোরমায় ফিচার ফিল্মে দেখানো হবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের 'বিসর্জন' এবং প্রতিম ডি গুপ্তর ছবি 'মাছের ঝোল'।

==

বন্ধুরা, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের একটি খবর জানাব।

সেন্সর বোর্ডের অনুমোদন পেয়েছে মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত নতুন শিশুতোষ চলচ্চিত্র আঁখি ও তার বন্ধুরা। বাংলাদেশ সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত ছবিটি নির্মিত হয়েছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের আঁখি এবং আমরা ক'জন উপন্যাস থেকে।

পরিচালক জানান, কোন কাটছাঁট ছাড়াই ছাড়পত্র পেয়েছে এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র বোর্ডের সদস্যরা ছবিটি দেখে প্রশংসা করেছেন। ইতিমধ্যে আঁখি ও তার বন্ধুরা চলচ্চিত্রের পোস্টার উন্মোচন ও গান ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে।

সিনেমার গল্প এরকম- আঁখি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। কিন্তু প্রতিবন্ধী স্কুলে না পড়ে সাধারণ স্কুলে পড়তে আসে সে। কিন্তু শিক্ষকের আচরণে আঁখি স্কুল থেকে চলে যেতে চায়। এই অবস্থায় তিতু আর তাঁর বন্ধুরা এগিয়ে আসে। তাঁরা আঁখিকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে চায়। আঁখি জানায়, সে অন্ধ হিসেবে বিবেচিত হতে চায় না, সে আর দশজনের মতো একজন হতে চায়। বন্ধুরা এই চ্যালেঞ্জ নেয়। তারা আঁখিকে অন্ধ হিসেবে করুণা করে না। তাঁকে বন্ধু মনে করে। একবার আঁখি আর তার বন্ধুরা ডাকাত দলের খপ্পরে পড়ে। তাদের রেঙ্গুনে বিক্রি করে দেওয়া হবে। শুরু হয় আঁখির অভিযান। এভাবেই এগিয়ে চলে সিনেমার গল্প।

এই চলচ্চিত্রে আঁখি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইশা। এ ছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুবর্ণা মুস্তাফা, তারিক আনাম খান, আল মনসুর, মুনিরা ইউসুফ মেমীসহ আরও অনেকে।

আঁখি ও তার বন্ধুরা' ছবি নিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, 'একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেয়ে কীভাবে আর দশজন স্বাভাবিক ছেলেমেয়ের সঙ্গে থেকে সমানভাবে সবকিছুতে অংশ নেয়, এটাই এখানে গুরুত্বের সঙ্গে দেখানো হয়েছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর ছবিটি মুক্তি পাবে।

সুতরাং অবহেলা নয়। বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলে প্রতিবন্ধীরাও হয়ে ওঠতে পারে সমাজের মূল ধারার অংশ। অবদান রাখতে পারে নিজের পরিবার ও দেশের উন্নয়নে।

বন্ধুরা, আজ তাহলে এ পর্যন্তই। আসছে সপ্তাহে নতুন নতুন খবর নিয়ে আবার হাজির হব একই সময়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040