ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের দক্ষিণ এশিয়া ব্রডকাস্টিং সেন্টারের উপ-পরিচালক সুন চিং লি, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল, সিআরআই বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী, সিআরআই সিংহলী বিভাগের উপপরিচালক শি ইয়্যু, ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব মোঃ শওকত নবী। ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস, সিআরআই, বাংলাদেশে প্রবাসী চীনাদের সংস্থা ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর যৌথভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পর আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী ও অন্য অতিথিরা। অনুষ্ঠানে বক্তব্যে সুন চিং লি সিআরআইয়ের পক্ষ থেকে উপস্থিত সবাইকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, গত বছর চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পূর্তি উদযাপিত হয়েছে। সেসময় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যৌথভাবে ২০১৭ সালকে 'চীন বাংলাদেশ মৈত্রী বছর' হিসেবে ঘোষণা করেন। এ প্রেক্ষাপটে সিআরআই বাংলা বিভাগ বছরব্যাপী ধারাবাহিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও চলচ্চিত্র সপ্তাহ সে আয়োজনেরই অংশ।
চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ও আদান প্রদানের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের উল্লেখ করে সুন চিং লি বলেন, ১৯৬৯ সালে সিআরআই বাংলা বিভাগ অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরুর পর থেকে দুদেশের জনগণের ঐতিহ্যবাহী মৈত্রী আর পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ানোর জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে এবং এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সিআরআই বাংলা বিভাগ শিগগির ঢাকায় তার শাখা দফতর চালু করতে যাচ্ছে ঘোষণা দিয়ে সুন চিং লি। এ ক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মহল ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু প্রদর্শনীর আলোকচিত্রগুলোর প্রশংসা করে বলেন, চীনা বন্ধুদের তোলা ছবিগুলোতে বাংলাদেশের মানুষ, জীবনযাত্রা, উন্নয়ন, কর্মক্ষম নারী ও শিশু রয়েছে। ছবিগুলোতে বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি, চোখে দীপ্তি। এ প্রদর্শনী দুদেশের মানুষকে কাছাকাছি আনবে, পরস্পরকে জানতে সাহায্য করবে এবং দুদেশকে আরো ঘনিষ্ঠ করবে। বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক হাজার বছরের প্রাচীন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ সম্পর্ক ত্রিমাত্রিক- মানুষে মানুষে, সরকারে সরকারে ও রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে। বাংলাদেশ ও চীন এখন উন্নয়ন অংশীদার, কৌশলগত অংশীদার ও সাংস্কৃতিক অংশীদার বলেও উল্লেখ করেন হাসানুল হক ইনু।
সিপিসির সাম্প্রতিক কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের গুরুত্বপূণূ ভাষণের উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি ২০২০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত করে সমৃদ্ধ চীন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। আর বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হতে চায়। এ দিক থেকে দুদেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মিল রয়েছে এবং দুদেশ পরস্পরের অভিজ্ঞতা থেকে লাভবান হবে বলে মনে করেন তিনি। চীনা প্রেসিডেন্ট বিশ্বের মানুষের জন্য অভিন্ন ভবিষ্যতের কথা বলে তাঁর বৈশ্বিক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন বলেও প্রশংসা করেন তথ্যমন্ত্রী।
সমৃদ্ধ চীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন এক্ষেত্রে চীন আন্তর্জাতিক বেতার ও বাংলাদেশ বেতার সহযোগী ভূমিকা পালন করতে পারে। ঢাকায় চীনের শাখা দফতর খোলার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে হাসানুল হক ইনু সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।
পরে পুরস্কার বিজয়ী চীনের আলোকচিত্রশিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ও অন্য অতিথিরা। প্রদর্শনীতে প্রথম পুরস্কার জিতেছেন লিউ হোং ইয়াং ও বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন চাংপেই সুন।
আলোকচিত্র ও চীনা চলচ্চিত্র প্রদর্শনী আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এতে ৭টি নির্বাচিত চীনা চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
(স্বর্ণা/মহসীন)