অক্টোবর ২০: ১৮ অক্টোবর বেইজিংয়ের মহাগণভবনে সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধন করা হয়। এতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীনের অষ্টাদশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কর্ম-প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। ভারতের নানা গণমাধ্যম, বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিত এ প্রতিবেদনের ওপর বেশ সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন। ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া গবেষণালয়ের অধ্যাপক ডক্টর বি আর দীপক মনে করেন, প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ও উপযুক্ত। এটি আগামী পাঁচ বছর এবং তার পরবর্তী চীনের উন্নয়নের দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী একটি চীন দেশের কাছ থেকে বিশ্বের নানা দেশ উপকৃত হবে।
জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগের পরিচালক এবং বিখ্যাত চীনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে ডক্টর বি আর দীপক চীনকে পছন্দ করেন এবং তিনি সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের ওপর সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন। সময়ের পার্থক্যের কারণে স্থানীয় সময় সকালে সাড়ে ৬টায় ভারত থেকে সিপিসি'র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার উপভোগ করেন তিনি। প্রেসিডেন্ট সি'র প্রতিবেদন সম্পর্কে ডক্টর দীপক বলেন,
"এটি খুব লম্বা প্রতিবেদন এবং এতে নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জনকল্যাণের বিষয়গুলো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। চীনা জনগণের জীবনযাপনের সমস্যার সমাধানের কথাও এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও রয়েছে সিপিসি'র গঠন, কূটনৈতিক নীতি, আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলাসহ নানা বিষয়। এটি সম্পূর্ণ একটি প্রতিবেদন।"
লাইভ অনুষ্ঠান দেখা ছাড়াও দীপক পরে ইন্টারনেটে চীনা ভাষা ও ইংরেজি ভাষায় প্রতিবেদনের দু'টি সংস্করণের কর্মপ্রতিবেদন পড়েন। তিনি মনে করেন ত্রিশ হাজার অক্ষরের এ প্রতিবেদনে, চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্রের নতুন যুগে প্রবেশ করার বিষয়টি ফুটিয়ে তুলেছে। তিনি বলেন,
"আমি মনে করি প্রতিবেদনে চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্র নতুন যুগে প্রবেশ করার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ ও বৈশিষ্ট্যময়। সি চিন পিং প্রতিবেদনে বলেছেন, ২০২০ সালের আগে সার্বিক সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলা হবে এবং ২০২০ সাল থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত সার্বিক সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলার ভিত্তিতে আরো ১৫ বছরে সমাজতন্ত্রের আধুনিকায়ন মোটামুটি বাস্তবায়ন করা হবে। ২০৩৫ সাল থেকে এ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত আধুনিকায়নের ভিত্তিতে আরো ১৫ বছরে চীনকে ধনী, গণতান্ত্রিক, সভ্য, সুষম ও সুন্দর শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।"
দীপক মনে করেন, চীনকে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করে গড়ে তোলার এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া থেকে বিশ্বের নানা দেশ উপকৃত হবে। তিনি বলেন,
"এটি খুব ভাল একটি ব্যাপার। আমি ভাবছি এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় চীন শুধু নিজের উন্নয়ন অর্জন করবে তা নয় বরং চীনের প্রতিবেশী দেশ, আঞ্চলিক দেশ ও বিশ্বের দেশগুলো এ থেকে উপকৃত হবে। বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থার সুষ্ঠু উন্নয়নে ইতোমধ্যেই অনেক অবদান রেখেছে চীন এবং চীনের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে এ অবদান আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।"
ভারত চীনের গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল ও উন্নয়নশীল একটি প্রতিবেশী দেশ। দু'টি দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
ডক্টর দীপক বলেন, আমি মনে করি, ভারতের নানা মহলের উচিত্ মন দিয়ে এ কর্ম-প্রতিবেদন পড়া এবং এর মধ্যে থেকে দু'দেশের সহযোগিতার সুযোগ অনুসন্ধান করা।
(শিশির/তৌহিদ/লিলি)