চলমান দেশ বিদেশের জটিল ও গভীর পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক সত্তার ক্ষমতাসীন দলের ভবিষ্যত কার্যক্রম বিশ্বে ব্যাপক মনোযোগ পেয়েছে। সিপিসি'র নেতা হিসেবে স্বল্প ও সংক্ষিপ্তভাবে এবারের অধিবেশনের উদ্দেশ্য এবং সিপিসি'র মহান চিন্তাধারা প্রকাশিত হয়েছে।
'এবার অধিবেশনের প্রতিপাদ্য ছিলো হৃদয় দিয়ে দায়িত্ব ও কর্তব্য স্মরণ করা, চীনের বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্রের পতাকা ধরে রাখা, সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলা, নতুন যুগে চীনের বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্রের মহান বিজয় এগিয়ে নেওয়া এবং চীনা জাতির মহান পুনরুত্থানের চীনা স্বপ্ন পূরণে নিরলস প্রচেষ্টা চালানো।'
কর্ম-প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত ৫ বছরে সিপিসি পার্টির প্রশাসন সার্বিকভাবে জোরদার করেছে এবং ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন তত্ত্ব ও চিন্তাধারা পেশ করেছে। চীনের জিডিপি ৮০ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ৩০ শতাংশেরও বেশি অবদান রেখেছে। শহরে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বার্ষিক গড়পড়তা পরিমাণ ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি, ৬ কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। চীন সার্বিক ও গভীর সংস্কার চালু করেছে, গণতান্ত্রিক আইনগত প্রশাসন, চিন্তাধারা সংস্কৃতি, নাগরিকদের জীবনযাপন ও প্রাকৃতিক পরিবেশ সভ্যতাসহ বিভিন্ন খাতে বিরাট অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বিভিন্ন সংস্কারের মূল কথা তুলে ধরে সি জোর দিয়ে বলেন, চীনের উন্নয়ন নতুন যুগে দাঁড়িয়েছে। নতুন যুগে চীনের বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্রের চিন্তাধারা চীনের বিভিন্ন খাতে ফুটে উঠেছে। পাঁচ বছর আগে সিপিসি'র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেস চলাকালে ২০২১ সালে সিপিসি প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকীতে সার্বিক সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলা এবং ২০৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকীতে সমাজতান্ত্রিক আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার পর দ্বিতীয় লক্ষ্য বাস্তবায়নের সন্ধিক্ষণে ভবিষ্যতে চীনের সমাজতান্ত্রিক আধুনিক রাষ্ট্র তৈরির পদক্ষেপ বিশ্লেষণ করেছেন সি।
'আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং চীনের উন্নয়নের বহুমুখী সম্ভাবনা বিবেচনা করে ২০২০ সাল থেকে এ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত দু'টি পর্যায় ভাগ করা যায়। প্রথম পর্যায় ২০২০ সাল থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত সার্বিক সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলার ভিত্তিতে আরো ১৫ বছর নিয়ে সমাজতন্ত্রের আধুনিকায়ন মোটামুটি বাস্তবায়ন করা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০৩৫ সাল থেকে এ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত আধুনিকায়নের ভিত্তিতে আরো ১৫ বছরে চীনকে ধনী, গণতান্ত্রিক, সভ্য, সুষম ও সুন্দর শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।'
একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আগের দূরদর্শী পরিকল্পনার তুলনায় এবারের কর্ম-প্রতিবেদনে চীনের নতুন লক্ষ্যমাত্রার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অতীতের 'ধনী, গণতান্ত্রিক, সভ্য, সুষম, সমাজতান্ত্রিক, আধুনিক রাষ্ট্রে'র ধারণার সঙ্গে 'সুন্দর' ও 'শক্তিশালী' দু'টি শব্দ যুক্ত হয়েছে। যা থেকে পরিবেশগত সভ্যতা ও সংগ্রামের লক্ষ্যমাত্রায় গভীরতা ও উন্নতি প্রতিফলিত হয়েছে।
(সুবর্ণা/তৌহিদ/শিশির)