এবারের ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-প্রধানমন্ত্রী ওয়াং ইয়াং বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে মানবজাতির যৌথ স্বপ্ন এবং বর্তমানের গুরুত্বপূর্ণ মূল প্রতিপাদ্য। চীন সবসময় আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন ব্রতের সক্রিয় উদ্যোক্তা । এ সম্পর্কে তিনি বলেন
'দারিদ্র্য বিমোচন খাতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং সহযোগিতা গভীরতর করতে চীন আগ্রহী। এটি 'জাতিসংঘের অবিরাম উন্নয়ন এজেন্ডা–২০৩০' বাস্তবায়নে প্রবল চালিকাশক্তি যোগাবে'।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন , জীবিকা উন্নয়ন ও ঐক্যবদ্ধ সম্পদ অর্জন বাস্তবায়নকে নীতি হিসেবে সবসময় নিজের ক্ষমতাসীন আওতায় দেখে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) ও চীন সরকার। চীনের রাজনৈতিক প্রাধান্য ও ব্যবস্থাপনাগত অগ্রাধিকার হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন খাতে লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জনের সুনিশ্চিত বিষয়। বিশেষ করে সিপিসি'র অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর দারিদ্র্য বিমোচনের কর্মকাণ্ড অব্যাহতভাবে বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে চীনে প্রতিবছর আরও ১ কোটি মানুষ এই অবস্থা থেকে মুক্ত হয়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
'দারিদ্র্য বিমোচন খাতে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ এবং তিনি সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে দৃঢ়। এটি সিপিসি'র বিভিন্ন সংস্থা ও বিভিন্ন স্থানীয় সরকারকে হাতে হাত রেখে ভালভাবে কাজ করার জন্য উত্সাহ দিয়েছে। সেই সঙ্গে, সিপিসি'র দুর্নীতিদমন জোরদার ও সঠিক দারিদ্র্য বিমোচন উদ্যোগ কাজে লাগানোও লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে'।
তিনি আরো বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য পরবর্তীতে নতুন উন্নয়ন ধারণা মেনে চলবে চীন। এটি আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন খাতে নতুন অবদান রাখবে বলেও জানান তিনি।
দারিদ্র্য বিমোচন ও অবিরাম উন্নয়ন খাতে চীন যে লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা আন্তর্জাতিক সমাজের ভূয়সী প্রশংসা পায়। জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা 'এফএও'র মহাপরিচালক জোসে গ্রেজিয়ানো দা সিলকা মনে করেন, 'জাতিসংঘের অবিরাম উন্নয়ন এজেন্ডা–২০৩০' কাঠামোতে বিশ্বের ৮০ শতাংশ দরিদ্র মানুষ গ্রামাঞ্চলে বসবাস করে। গ্রামীন দারিদ্র্য বিমোচনে চীনের অভিজ্ঞতা উল্লেখযোগ্য। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
'কৃষি উন্নয়ন খাতে চীন অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। এতে দরিদ্র লোকজনের জীবনযাপনের মান ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিগত ৩০ বছরে চীনে ৭০ কোটি মানুষ দরিদ্র অবস্থা থেকে উত্তরণ লাভ করেন। চীনে দারিদ্র্য বিমোচন লক্ষ্যে যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল তার ১০ বছর পরই 'জাতিসংঘের অবিরাম উন্নয়ন এজেন্ডা –২০৩০' নির্ধারণ করা হয়'।
জানা গেছে, বিশ্বের ১৩টি দেশের শীর্ষনেতৃবৃন্দ,১৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীসহ ২ শতাধিক প্রতিনিধি এবারের 'দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন শীর্ষ ফোরাম-২০১৭'-এ অংশগ্রহণ করেন।
(ওয়াং হাইমান/মহসীন)