সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ইইউ থেকে তাঁর দেশের বেরিয়ে আসা শীর্ষক বৈঠকের কেন্দ্রীয় বিষয়ে মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন। ইইউ ও ব্রিটেন উভয়ই চতুর্থ বৈঠকে অগ্রগতির প্রত্যাশা করছে। তবে এতে উদ্বেগ প্রকাশ করছে জনসাধারণ।
সুপ্রিয় শ্রোতা, আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনুন।
নিয়ম অনুসারে ইইউ'র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মাইকেল বার্নিয়ার এবং যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট-বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস সম্প্রতি এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ব্রিফ করেন।
বার্নিয়ার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে'র সাম্প্রতিক এ বিষয়ক ভাষণের প্রশংসা করেন এবং তাঁর ভাষণ গঠনমূলক মর্মের প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
"ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে'র ভাষণের মনোভাব খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সে মনোভব চলতি সপ্তাহের বৈঠক বেগবান এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বৈঠকের অগ্রগতি অর্জনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ২২ সেপ্টেম্বর ইতালির ফ্লোরেন্সে এক ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা সম্পর্কে দেশটির মনোভব ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, তাঁর দেশ ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর দু'বছরব্যাপী অন্তর্বর্তীকালীনের কথা বিবেচনা করবে। এ সময় ব্রিটেন ইইউ'কে প্রতি বছর বাজেট খরচ ও অন্য নির্ধারিত খরচ দান করবে, যাতে দেশটি অব্যাহতভাবে শুল্ক জোটে থেকে যেতে পারে এবং ইইউ'র সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য করতে সম্ভব হয়।
বিতর্কিত ব্রিটেনে ইইউ'র নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে থেরেসা বলেন, ইইউ'র নাগরিকরা আগের মতো ব্রিটেনে বসবাস ও জীবন-যাপন করতে পারবে। তবে তাদেরকে নিবন্ধন করতে হবে। এটাও নতুন অভিবাসন ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বৈঠকের অচলাবস্থার অবসান ঘটানোর জন্য থেরেসা মে কিছু ছাড় দিয়েছেন। তবে তার ভাষণে ইইউ এতো ইতিবাচক নয়।
এ দিন চতুর্থ বৈঠকের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মাইকেল বার্নিয়ার বলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে'র উত্থাপিত 'দু'বছরের অন্তর্বর্তীকালীন' প্রস্তাবে তিনি অবাক হয়েছেন। কারণ এর আগে বৈঠকে যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস এ বিষয় কখনো কিছু উল্লেখ করেন নি।
তিনি বলেন, ব্রিটেন অন্তর্বর্তীকালীন-এর আহ্বান জানিয়েছে, আমরা জানাই নি। ইইউ'র স্বার্থের সঙ্গে 'এ অন্তর্বর্তীকালীন' সংগতিপূর্ণ কি না, তা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বার্নিয়ার আরও বলেন, ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া বিষয়ক বৈঠক ৬ মাস ধরে চলছে। দু'পক্ষ কেবল বেরিয়ে যাওয়ার ভর্তুকি, নাগরিক অধিকার ও অ্যায়ারল্যান্ডের সীমারেখা নিয়ে অগ্রগতি অর্জন করেছে।
ডেভিড ডেভিস বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে'র ভাষণে নেতৃত্ব ও নমনীয়তা প্রতিফলিত হয় এবং ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার ভর্তুকির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, বেরিয়ে যাওয়ার ভর্তুকি দু'পক্ষের ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত। তিনি বলেন,
'আর্থিক বিষয় ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইইউ'র সদস্য থাকাকালে নিজের আর্থিক দায়িত্ব পালন করবে ব্রিটেন। তবে ইইউ'র সঙ্গে নতুন ও বিশেষ ধরনের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হলে কেবল আর্থিক বিষয়ে সম্মতি অর্জিত সম্ভব। (রুবি/টুটুল/স্বর্ণা)