জার্মান পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর চীনের প্রতি দেশটির নীতির পরিবর্তন ঘটবে কি?
  2017-09-25 15:01:39  cri
সেপ্টেম্বর ২৫: গতকাল (রোববার) জার্মান পার্লামেন্টের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে প্রকাশিত ভোটের প্রাথমিক ফলাফল অনুসারে, চতুর্থ বারের মতো দেশটির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাঙ্গেলা মার্কেল।

তবে বর্তমানে তাঁর নেতৃত্বের পার্টি কোন পার্টির সঙ্গে জোট সরকার গঠন করবে, তা নির্ধারিত হয় নি। এ দিকে মার্কেল পরবর্তী চ্যান্সেলর পদে চীনের প্রতি তার নীতির কোনো পরিবর্তন করবেন না বলে ধারণা করছেন জনসাধারণ।

জার্মানির হেসে-দারমস্ট্যাড রাজ্যের অর্থনীতি, জ্বালানি, যোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক উপমন্ত্রী নর্বাট নইসার সম্প্রতি সাংবাদিককে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, তিনি মনে করেন, জার্মানির সাধারণ নির্বাচনের পর চীনের প্রতি নীতির কোনো পরিবর্তন হবে না, যার কারণ হচ্ছে চীন এশিয়ায় জার্মানির গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার এবং আর্থ-বাণিজ্যিক বিনিয়োগ, প্রযুক্তিগত নব্যতাপ্রবর্তন, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানসহ নানা ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে জার্মানির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক সুষ্ঠু।

তিনি বলেন, 'জার্মানির প্রতিটি জোট সরকার অব্যাহতভাবে চীনের সঙ্গে সে ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করে আসছে এবং জার্মান-চীন সম্পর্ক অপূর্ব উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করাকে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে। এমন কোনো জোট সরকার নেই, যে চীনের সঙ্গে মৈত্রী ও পারস্পরিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে না'।

বর্তমানে চীন ও জার্মানির মধ্যে চীন-জার্মান সরকার পর্যায়ের সংলাপ, চীন-জার্মান কূটনীতি ও নিরাপত্তাবিষয়ক কৌশলগত সংলাপ, চীন-জার্মান উচ্চ পর্যায়ের অর্থ-বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তা বৈঠকসহ ৭০টিরও বেশি নানা পর্যায়ের সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এছাড়া সহযোগিতার আওতা প্রযুক্তি, রসায়ন ও নেটওয়ার্কসহ নানা ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ছে। জার্মান-চীন মৈত্রী সমিতির চেয়ারম্যান দিয়েটার বোনিং বলেন, সংসদ নির্বাচন জার্মানির চীন-নীতির ওপর প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন,

'যাইহোক, যে পার্টিই নির্বাচনে জয়লাভ করুক না কেন তা জার্মানির চীন-নীতির ওপর প্রভাব ফেলবে না। সকল রাজনৈতিক পার্টি একমত যে, চীন জার্মানির বৃহত্তম অর্থনৈতিক অংশীদার। এমন কি সাধারণ লোকও এতে একমত পোষণ করে'।

জার্মানির চীন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আন উ হাং মনে করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও জার্মানির নানা ক্ষেত্রের আদান-প্রদান দিন দিন ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। বিশেষ করে অর্থনীতির ক্ষেত্রে স্থিতিশীল সহযোগিতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন,

'চীন ও জার্মানির সহযোগিতার স্থিতিশীল উন্নতি নির্বাচনের পর অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বলা যায়, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে অনেক স্থিতিশীল উপাদান থাকে, যার ফলে দু'দেশ আর্থ-বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আরো সহযোগিতা চালাতে পারে। আমি মনে করি, জার্মানির উচিত অর্থনীতির ক্ষেত্রে নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে চীনকে সমতাসম্পন্ন ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে গণ্য করা'।

জার্মান-চীন প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশক মিশেল রুহল্যান্ড দু'দেশের সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়ে প্রত্যাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

'গত ১০০ বছর আগে জার্মানি থেকে চীনে যেতে জাহাজ করে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ এমন কি ৩ মাস লেগে যেতো। বর্তমানে ডাচেলডর্ফ থেকে বেইজিং যেতে মাত্র ১০ ঘন্টা সময় লাগে। বিশ্ব ছোট হয়ে আসছে। একে অপরের যোগাযোগ করা এখন অনেক সহজ। তাই আমি বিশ্বাস করি, জার্মানি-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আরো বড় উন্নতি সাধিত হবে। (রুবি/টুটুল/স্বর্ণা)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040