0901china
|
পৃথিবীতে এখনও টিকে আছে যেসব প্রাচীন প্রাণী, শিওং মাও সেগুলোর অন্যতম। আজকের বড় পান্ডার পূর্বপুরুষরা ৩০ লাখ বছর আগেও পৃথিবীতে বিচরণ করত বলে গবেষকরা বলছেন। পান্ডার সমসাময়িক প্রায় সকল প্রাণীই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
পান্ডার সাথে ভল্লুক ও বিড়ালের মিল থাকায় এর চীনা নাম হয়েছে শিওং মাও বা 'ভল্লুক বিড়াল'। চীনারা পান্ডা খুব ভালবাসে। চলুন এ প্রাণীটি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিই।
পান্ডা বর্তমান চীনের সি ছুয়ান, কান সু এবং শান সি প্রদেশের পাহাড়াঞ্চলে বসবাস করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বন্য পান্ডার মোট সংখ্যা হাজারের সামান্য বেশি। আর গৃহপালিত পান্ডার সংখ্যা আরও কম, একশ'র মত। এ কারণেই চীনের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীগুলোর মধ্যে পান্ডাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
চীনে সেসব প্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, পান্ডা সেগুলোর অন্যতম। আপনি কি জানেন, বাঁশ পান্ডার মূল খাদ্য? সে গরম সহ্য করতে পারে, কিন্তু ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে না। দেখতে ভল্লুকের মত হলেও, শীত তার ধাতে সয় না। পান্ডা গাছে উঠতে পারে, পানিতে সাঁতারও কাটতে পারে। তার শ্রুতিশক্তি ও ঘ্রাণশক্তি প্রবল। কিন্তু দৃষ্টিশক্তি কম। জন্মগতভাবেই এরা চোখে কম দেখে।
জাতীয় পর্যায়ের উপহার হিসেবে কয়েকটি পান্ডাকে চীন থেকে বিভিন্ন বন্ধুদেশে পাঠানো হয়েছে। ১৯৫৭ সালে 'ফিং ফিং' নামক একটি পান্ডা পাঠানো হয় তত্কালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে। ১৯৫৯ সালে দেশটিতে পাঠানো হয় 'আন আন' নামক আরেকটি বড় পান্ডাকে। 'ফিং ফিং আন আন' অর্থ 'নিরাপত্তার শুভ কামনা'।
১৯৯০ সালে চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের 'মাসকট' হিসেবে বড় পান্ডার আকৃতি ব্যবহার করা হয়। মাসকটের নাম দেওয়া হয় 'ফান ফান'। তখন স্টেডিয়ামে 'ফান ফান' হাতে স্বর্ণপদকজয়ী চীনা ক্রীড়াবিদের দৌড় চীনাদের আবেগে আপ্লুত করেছে।
অন্য কোনো প্রাণীকে হত্যা করে না বিধায় বড় পান্ডাকে 'শান্তির পশু' বলে ডাকা হয়। ১৭০০ বছর আগেও যুদ্ধের ময়দানে পান্ডার ছবিসম্বলিত পতাকাকে যুদ্ধবিরতির চিহ্ন হিসেবে গণ্য করা হত। কোনো পক্ষ 'শিওং মাও' পতাকা উড়ালে ধরে নেওয়া হত যে,সে পক্ষ যুদ্ধবিরতি চায়, শান্তি ও সন্ধি চায়। আধুনিক বিশ্বে পান্ডাকে শান্তি ও মৈত্রীর প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।