মার্কিন বাহিনীর চিফ অফ স্টাফের জয়েন্ট চেয়ারম্যানের চীন সফর
  2017-08-16 14:56:06  cri
চীনের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশনের জয়েন্ট জেনারেল স্টাফ ফাং ফোং হুই পা ই ভবনে মার্কিন বাহিনীর চিফ অফ স্টাফের জয়েন্ট চেয়ারম্যান জোসেফ ফ্রান্সিস ডানফোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর সম্পর্ক এবং তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর এবং কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময় করেছেন। তারা 'চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর জয়েন্ট জেনারেল স্টাফ বিভাগের সংলাপ ব্যবস্থার কাঠামো দলিলে' স্বাক্ষর করেন। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডানফোর্ড হচ্ছেন চীন সফরকারী মার্কিন বাহিনীর প্রথম উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

আসলে এ বৈঠক চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠক। গত জুনে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কূটনৈতিক নিরাপত্তা সংলাপ চলাকালে ফাং ফোং হুই এবং ডানফোর্ড এক বৈঠক করেন। এবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ফাং ফোং হুই বলেন, সহযোগিতা হলো চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত। দু'দেশের বাহিনী খুব ভালো সহযোগিতামূলক অংশীদারে পরিণত হতে পারে। তিনি আরো বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী ভালোভাবে দু'দেশের শীর্ষনেতাদের সম্পাদিত মতৈক্য বাস্তবায়ন করতে, দু'দেশের বাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়নের স্থিতিশীল প্রবণতা বজায় রাখতে, অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে এবং দু'দেশের বাহিনীর উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবিলা করতে পারে।

চীনের বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত যোগাযোগ জোরালো করতে, পারস্পরিক কৌশলগত আস্থা বাড়াতে, বাস্তব সহযোগিতা গভীর করতে, মতভেদ দূর করতে এবং দু'দেশের বাহিনীর স্থিতিশীল ও নিরন্তর উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন,

'মার্কিন পক্ষের এবারের গুরুত্বপূর্ণ সফরের মাধ্যমে দু'দেশের শীর্ষনেতাদের সম্পাদিত মতৈক্য অবশ্যই ভালোভাবে বাস্তবায়িত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তা ছাড়া, এবারের সফরের মাধ্যমে চীনের বাহিনীর সঙ্গে মার্কিন পক্ষের জানাশোনা আরো গভীর হবে এবং দু'দেশের বাহিনীর সহযোগিতা আরো জোরদার হবে বলে আমি মনে করি।'

বৈঠকে ডানফোর্ড বলেন, দু'বাহিনীর সমন্বয়ের ভূমিকা পালন করা, পারস্পরিক আস্থা বাড়ানো এবং সংঘর্ষ এড়ানো উচিত্। দু'পক্ষের সব সুযোগ কাজে লাগিয়ে সহযোগিতা ও বিনিময় গভীর করা এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালানো উচিত্।

এ প্রসঙ্গে ডানফোর্ড বলেন,

'আমি মনে করি, আমাদের সামনে অনেক জটিল সমস্যা থাকতে পারে। কোনো কোনো সমস্যায় আমাদের অবস্থান ভিন্ন হলেও আন্তরিকতা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আচরণ করা উচিত্। একটি বিষয় নিশ্চিত যে, আমরা আমাদের মতভেদ সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।'

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী মার্কিন বাহিনীর চিফ অফ স্টাফের জয়েন্ট চেয়ারম্যান হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সামরিক উপদেষ্টা। তিনি নিরাপত্তা নীতিতে বিরাট ভূমিকা পালন করেন বলে মনে করা হয়। গত জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জি-২০র হামবুর্গ শীর্ষসম্মেলনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, মার্কিন বাহিনীর চিফ অফ স্টাফের জয়েন্ট চেয়ারম্যানের অগাস্টে চীন সফর, নভেম্বরে দু'দেশের বাহিনীর জয়েন্ট জেনারেল স্টাফ বিভাগের প্রথম সংলাপ এবং ২০১৮ সালে 'প্যাসিফিক রিম' সামরিক মহড়ায় চীনা নৌবাহিনীর অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন কাজ দু'পক্ষের ভালোভাবে করা উচিত্।

চীনের সামরিক বিজ্ঞান একাডেমির গবেষক চাও সিও চুও মনে করেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর সম্পর্ক শুধুমাত্র সহজ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়, এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে সক্ষম। ডানফোর্ডের এবারের সফর দুই বাহিনীর সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন। (লিলি/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040