পাকিস্তানের স্বাধীনতার ৭০তম বার্ষিকীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী
  2017-08-15 15:40:13  cri
পাকিস্তানের স্বাধীনতার ৭০তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠান গতকাল (মঙ্গলবার) দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়াং ইয়াং এতে অংশ নেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।

মঙ্গলবার সকালে জিন্নাহ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেইন এবং প্রধানমন্ত্রী শাহেদ খাকান আব্বাসিসহ দেশটির বিভিন্ন মহলের কর্মকর্তা এবং পাকিস্তানে দায়িত্বরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকসহ প্রায় এক হাজার মানুষ এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। ভাষণে ওয়াং ইয়াং বলেন,

'এ বিশেষ দিনে পাক সরকারের আমন্ত্রণে আমরা আনন্দিত। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমি চীন সরকার এবং চীনা জনগণের পক্ষ থেকে পাক জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি।'

স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তানের উন্নয়নের সাফল্যের উচ্চ মূল্যায়ন করেন তিনি। তিনি চীন পাকিস্তান ঐতিহ্যবাহী মৈত্রীর প্রশংসা করেন এবং দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার বিশাল ভবিষ্যতের কথা উল্লেখ করেন।

ভাষণে ওয়াং ইয়াং আরো বলেন, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর দেশ দু'টির বিভিন্ন মহলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং নিজ নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি পরিবর্তন থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ফলে সার্বক্ষণিক বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে এবং সার্বিক সহযোগিতা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ওয়াং ইয়াং বলেন,

'আমরা কখনও ভুলে যাবো না, জাতিসংঘে নয়া চীনের বৈধ অবস্থান পুনরুদ্ধারের সময় বিনাশর্তে চীনকে সমর্থন করেছে পাকিস্তান। আমরা কখনও ভুলে যাবো না, গত শতাব্দীর ৬০ ও ৭০ দশকে দু'দেশের প্রকৌশলীরা নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে কারাকোরাম পাহাড়ে রক্ত ও ঘাম দিয়ে চীন ও পাকিস্তানের মৈত্রী সড়ক নির্মাণ করেন। আমরা কখনও ভুলে যাবো না, চীনের ওয়েনছুয়েন ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পাকিস্তান সর্বপ্রথম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং তাদের মজুদ করা সব তাঁবু দুর্গত অঞ্চলে পাঠায়।'

ওয়াং ইয়াং বলেন, চীন ও পাকিস্তানের কাঁধে জাতির পুনরুত্থানের ঐতিহাসিক দায়িত্ব রয়েছে। দেশকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা এবং জনকল্যাণ বাস্তবায়নের জন্য আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় আমাদের আরো ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চালানো উচিত্। যখন ২০১৫ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পাকিস্তান সফর করেন তখন তিনি চীন-পাকিস্তান সম্পর্ককে সার্বক্ষণিক কৌশলগত সহযোগিতার অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নতি করেছেন, ফলে চীন ও পাকিস্তানের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।

ওয়াং ইয়াং আরো বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখতে, দু'দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে একে অপরকে সমর্থন করতে এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে সমন্বয় জোরদার করতে ইচ্ছুক।

চীন পাকিস্তানকে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে মনে করে বলে জোর দেন ওয়াং ইয়াং। প্রেসিডেন্ট সি এবং পাক শীর্ষনেতাদের মতৈক্য অনুযায়ী চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে চীন, যাতে পাকিস্তানের আত্মনির্ভরশীল উন্নয়নের ক্ষমতা বাড়ানো যায় এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' বরাবর অঞ্চলের জনগণের বাস্তব কল্যাণ সম্ভব হয়।

তা ছাড়া, ভাষণে ওয়াং ইয়াং আরো বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদার করতে ইচ্ছুক। শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা সম্প্রসারণ করবে চীন।

আন্তর্জাতিক পরিবেশে যে কোনো পরিবর্তন ঘটুক, চীনের যতো উন্নতিই হোক, চীন বরাবরই পাকিস্তানের সুপ্রতিবেশী, শ্রেষ্ঠ বন্ধু, ভালো অংশীদার এবং ভাই হয়ে থাকবে বলে জোর দিয়ে বলেন ওয়াং ইয়াং।

(লিলি/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040