0804china
|
'ছি ফাও' চীনা নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। আগে এ পোশাক শুধু চীনের সংখ্যালঘু 'মান' জাতির নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ছিল। ছিং রাজবংশ আমলে 'মান' জাতির মানুষকে 'ছি' মানুষ বলে ডাকা হ'ত। তাই মান জাতির নারীদের পোশাকের নাম হয় 'ছি ফাও'।
তখনকার 'ছি ফাও'হ'ত উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সমান চওড়া। খাড়া কলার ও লম্বা হাতাসমৃদ্ধ মোটা ও ভারী বস্ত্র দিয়ে তৈরি 'ছি ফাও' হ'ত পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত লম্বা। পোশাকের ভিতরে মেয়েরা আবার ফুলপ্যান্ট পরিধান করত। বুঝতেই পারছেন, তখনকার 'ছি ফাও' আঁটসাঁট ছিল না। এটা পরলে নারীদেহের গড়ন বোঝা যেত না। আধুনিক কালে এসে প্রাচীন 'ছি ফাও'-এ পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। আজকাল আঁটসাঁট 'ছি ফাও' তৈরি হচ্ছে। এ পোশাক পরলে নারীদেহের সুন্দর গঠন স্পষ্ট বোঝা যায়।
বিংশ শতাব্দের ত্রিশের দশকে যখন পশ্চিমা বিশ্বের নারীদের মধ্যে খোলামেলা পোশাক পরার ফ্যাশান চালু হয়, তখন থেকেই চীনের 'ছি ফাও'-এর নকশায়ও পরিবর্তন আসতে শুরু করে। ধীরে ধীরে 'ছি ফাও'-এর কলার ছোট হতে থাকে; ফুল হাতা হাফ হাতায় নেমে আসে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাতের দৈর্ঘ্য আরও কমে যায়।পাশাপাশি কমতে থাকে গাউনের দৈর্ঘ্যও। 'ছি ফাও' তৈরিতে হালকা বস্ত্রের ব্যবহারও তখন থেকেই শুরু হয়।
এই পরিবর্তিত 'ছি ফাও' নারীদেহের গঠনকে ফুটিয়ে তোলে আকর্ষণীয়ভাবে। এতে অবশ্য 'ছি ফাও'-এর প্রাচীন আভিজাত্যের সাথে কমপ্রমাইজ করতে হয়েছে। এখন 'ছি ফাও'-এর সাথে মেয়েরা একটু আলাদা সাজগোজ করেন। তারা পোশাকের সাথে মানানসই চুলের স্টাইল করেন এবং বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার পরিধান করেন।
আধুনিক 'ছি ফাও' শুধু চীনা নারীদের মধ্যে নয়, বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আজকাল বড় বড় আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে বিখ্যাত নারী ব্যক্তিত্বদের আধুনিক 'ছি ফাও' পরিধান করে অংগ্রহণ করতে দেখা যায়।