জুলাই ২৩: রাশিয়ার বালতিয়াস্ক বন্দরের সেনা অধিনায়ক হাউসের মহড়া পরিচালনা কেন্দ্রে স্থানীয় সময় গতকাল (শনিবার) সকালে চীন-রাশিয়া 'জয়েন্ট সী- ২০১৭' বা 'যৌথ সমুদ্র- ২০১৭' শীর্ষক সামরিক মহড়ার উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর চীনা পক্ষের অধিনায়ক নৌবাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার থিয়ান ছুং এবং রুশ অধিনায়ক নৌবাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার অ্যালেকজান্ডার ফেদতেঙ্কভ যথাক্রমে বিভিন্ন কৌশলগত গ্রুপের উদ্দেশ্যে এই অভিযান ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব সমন্ধে বক্তৃতা করেন। এর মাধ্যমে চীন-রাশিয়া 'জয়েন্ট সী- ২০১৭' সামরিক মহড়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের অধিনায়ক নৌবাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার থিয়ান ছুং তাঁর ভাষণে বলেন, চীন-রাশিয়া 'জয়েন্ট সী' ধারাবাহিক সামরিক মহড়া হল চীন-রুশ সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতা অংশিদারী সম্পর্ক জোরদার করার বাস্তব উদ্যোগ। দু'টি বাহিনী বিশেষ করে নৌবাহিনীর পারস্পরিক বিনিময় ও সহযোগিতা গভীর করার গুরুত্বপূর্ণ এক উদ্যোগ। এই মহড়া দু'দেশের যৌথভাবে বিশ্ব শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভুমিকা পালনের জন্য অনুকূল। বিগত ৬ বছরে চীন ও রুশ বাহিনীর মধ্যে এই ধরণের উচ্চ পর্যায়ের পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতা বিরাজমান আছে। মহড়া ও পারস্পরিক বিনিময়ের বিষয় প্রসারিত হয়েছে এবং প্রচুর সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন
"চলতি বছরে, দু'টি বাহিনী পূর্বের সফল ধারণা নিয়ে 'সমুদ্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্মুখীন সন্ত্রাসবাদ' এবং 'জরুরি উদ্ধার কাজ' এই দুই বিষয়ের উপর দৃষ্টি দিয়েছে। মহড়ার বিষয় আরো বিস্তৃত এবং জটিল হবে। দু'দেশের নৌবাহিনী বাস্তব সহযোগিতা ও যৌথ অভিযান পরিচালনার দক্ষতা নতুন স্তরে এগিয়ে নেবে"
রুশ অধিনায়ক অ্যালেকজান্ডার ফেদতেঙ্কভ বলেন, ২০১২ সালে চীন-রাশিয়া 'জয়েন্ট সী' মহড়া শুরু হয় এবং তখন থেকে মহড়ার বিষয়বস্তু দিন দিন জটিল ও পেশাদারি হয়েছে। দু'পক্ষের সহযোগিতাও হয়েছে আরও নিবিড়। 'জয়েন্ট সী- ২০১৭' সামরিক মহড়া নিশ্চিতভাবে চীন-রুশ নৌবাহিনীর সহযোগিতা আরও জোরদার করবে এবং দু'বাহিনীর আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন
"নৌবাহিনীর যেসব সদস্য ও পরিচালনা বিভাগ এবারের মহড়ায় অংশ নিয়েছে তাদের উচিৎ সেনা মোতায়েন কৌশলের উন্নয়ন সাধন করা এবং দু'বাহিনীর পরিচালনা কেন্দ্রের মধ্যে সমন্বয় ও পেশাদারিত্ব জোরদার করা"
এরপর তিনি এবারের মহড়ার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এবারের যৌথ সামরিক মহড়ায় চীন ও রাশিয়া একসাথে যৌথ কমান্ড গঠন, যৌথ পরিচালনা বিভাগ এবং কৌশলগত গ্রুপ পরিচালনা বিভাগ এবং যৌথভাবে সৈন্য মোতায়েন করে।
রুশ নৌবাহিনীর ফ্রিগেট - 'সাহস', টাগ বোট- ১২৩ এবং চীনা নৌবাহিনীর জাহাজ 'হে ফেই' নিয়ে গঠিত হয় প্রথম কৌশলগত গ্রুপ।
চীনা নৌবাহিনীর 'ইউয়ুন ছেং' জাহাজ, 'লুও মা হু' জাহাজ এবং রুশ নৌবাহিনীর 'রক্ষা' নামে জাহাজ নিয়ে গঠিত হয় দ্বিতীয় কৌশলগত গ্রুপ।
চীনা যুদ্ধ জাহাজ গ্রুপের পরিচালক, নৌবাহিনীর দক্ষিণ যুদ্ধ অঞ্চলের ডেপুটি কমান্ডার ইউয়ু মান চিয়াং বলেন, চীনা নৌবাহিনী প্রথমবারের মতো বাল্টিক সাগরে প্রবেশ করলো এবং মহড়ায় অংশ নিল। দীর্ঘ যাত্রাপথ এবং নতুন রুটে চলাচল তাদের জন্য এবারের মহড়ার দু'টি বৈশিষ্ট্য।
তিনি বলেন "এবারের মহড়ায় আমাদের 'গাইডেড' ক্ষেপণাস্ত্র ডেস্ট্রয়ার ও ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ফ্রিগেটের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আগের চেয়ে বেশী শক্তিশালি।
বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস দমন অভিযানে নৌবাহিনীর দেশের বাইরে যাওয়া একটি অবশ্যম্ভাবী প্রবণতা এবং তা বড় দেশের দায়িত্ব। একই সাথে এটি বিশ্ব শান্তি রক্ষায়ও অবদান রাখে।" (শিশির/মহসীন/সুবর্ণা)