হ্যালো চায়না: ৮২. ঘুড়ি
  2017-07-07 20:16:21  cri


আপনি কি কখনও ঘুড়ি ওড়ানো দেখেছেন? একটা লোক লম্বা সুতার এক প্রান্ত ধরে কখনও টেনে নিজের দিকে নিচ্ছে, কখনও ঢিল দিচ্ছে। সুতার অন্য প্রান্তে বাধা আছে পাতলা কাগজ বা কাপড়ের তৈরি ফেং জেং বা ঘুড়ি। আকাশে লম্বা লেজ দুলিয়ে সেটি উড়ছে। সে এক সুন্দর দৃশ্য!

চীনকে বলা হয় ঘুড়ি'র জন্মস্থান। প্রথম দিকে সামরিক তথ্য পাঠানো বা যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের বিশেষ যন্ত্রহিসেবে ঘুড়ি'র ব্যবহার হতো। পরে নির্মল আনন্দদায়ক খেলা হিসেবে ঘুড়ি ওড়ানো শুরু করে মানুষ। সুন্দর আবহাওয়ার দিনে খোলা মাঠে ঘুড়ি ওড়ানো ধীরে ধীরে একটি জনপ্রিয় ক্রীড়ায় পরিণত হয়।

ঘুড়ি ওড়ানো মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল বলে সম্প্রতি চিকিত্সাবিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুড়ি ওড়ালে মানুষের মনের দীনতা কেটে যায়, মন ভাল থাকে। তাই তারা সবাইকে ঘুড়ি ওড়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

আপনি কি জানেন আদিতে ঘুড়ি দেখতে কেমন ছিল? দুই হাজার বছর আগেচীনের মৌ জি নামের এক জ্ঞানী লোক তিন বছর পরিশ্রম করে একটি কাঠের পাখি বানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পাখি মাত্র একদিন আকাশে উড়েই নষ্ট হয়ে গেল। তার তৈরি কাঠের পাখি বেশিক্ষণ আকাশে থাকতে না-পারলেও, উত্সাহী মানুষের মাথায় ঘুড়ি তৈরির ধারণা ঠিকই ঢুকিয়ে দিতে পেরেছিল।

চীনে তুং হান আমলে কাগজ আবিস্কৃত হয়। তখন থেকেই মানুষ কাগজের ঘুড়ি তৈরি করতে শুরু করে। পরবর্তী কালে থাং ও সুং রাজবংশ আমলে ঘুড়ি ওড়ানো একটি খুব জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়।

চীনের বিভিন্ন নকশার ঘুড়িতে স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতিফলন দেখা যায়। ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি'র গায়ে 'দীর্ঘায়ু', 'আনন্দ', 'সৌভাগ্য' ইত্যাদিশব্দ লেখা হয়। এইসব শব্দ দিয়ে মানুষের সুখী ও সুন্দর জীবন কামনা করা হয়ে থাকে।

আপনি কি জানেন, চীনের শানতুং প্রদেশের ওয়েই ফাং শহরে প্রতিবছর 'আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উত্সব' অনুষ্ঠিত হয়? ওয়েই ফাং শহরকে বিশ্বের 'ঘুড়ি রাজধানী' বলে ডাকা হয়।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040