'আজকের টপিক' গ্রীষ্মকালীন দাভোস সম্মেলন
  2017-06-27 16:18:11  cri


সুপ্রিয় শ্র্রোতা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। এখন শুনবেন 'আজকের টপিক'। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি রুবি এবং আলিমুল হক।

প্রিয় শ্রোতা, ২০১৭ সালের গ্রীষ্মকালীন দাভোস ফোরামের উদ্বোধন হয়েছে আজ (মঙ্গলবার) চীনের লিয়াও নিং প্রদেশের তা লিয়ান শহরে। বিশ্বের ৮০টিও বেশি দেশের দু্ই সহস্রাধিক প্রতিনিধি এতে অংশ নিচ্ছেন। তিন দিনব্যাপী ফোরামের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে: 'চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সর্বাত্মক প্রবৃদ্ধি অর্জন'। প্রিয় শ্রোতা, আমাদের 'আজকের টপিক' গ্রীষ্মকালীন দাভোস সম্মেলন।

রুবি: আলিম, দাভোস ফোরাম সম্পর্কে কিছু বলবেন? এটা আসলে কী? এ ফোরাম কোন লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়? শ্রোতারা নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন।

আলিম: ২০০৭ সালের ৪ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর প্রথম এ ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দাভোস ফোরাম আসলে জেনিভাভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম (ডাব্লিউইএফ)-এর বার্ষিক সম্মেলন। জানুয়ারির শেষ দিকে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ফোরামের দু'টি বার্ষিক সম্মেলন যুক্ত হয়। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম (ডাব্লিউইএফ)গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে: এটি "committed to improving the state of the world by engaging business, political, academic, and other leaders of society to shape global, regional, and industry agendas".

এ ফোরাম স্থাপিত হয় ১৯৭১ সালে। ইউনিভার্সিটি অব জেনিভার অধ্যাপক জার্মান বংশোদ্ভূত ক্লাউস সোয়াব এটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে এর নাম ছিল 'ইউরোপিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরাম।' ১৯৮৭ সালে একে আন্তর্জাতিক রূপ দিতে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম (ডাব্লিউইএফ)। ২০১৬ সালের অক্টোবরে ফোরাম সান ফ্রান্সিসকোতে 'চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কেন্দ্র' প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়।

২০০৭ সাল থেকে 'অ্যানুয়াল মিটিং অব দ্য নিউ চ্যাম্পিয়ন্স' বা 'গ্রীষ্মকালীন দাভোস ফোরাম' অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ফোরাম অনুষ্ঠিত হয় পালাক্রমে চীনের তা লিয়ান ও থিয়েনচিনে। প্রতিটি ফোরামে চীনের প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণ দিয়ে থাকেন।

রুবি: এবারের ফোরামে প্রতিপাদ্য হিসেবে 'চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সর্বাত্মক প্রবৃদ্ধি'র কথা বলা হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসলে কী?

আলিম: প্রথম শিল্পবিপ্লব হয়েছিল অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দিতে ইউরোপ ও আমেরিকায়। তখন লোহা, টেক্সটাইন ইঞ্জিনিয়ারিং ও স্টিম ইঞ্জিন এ বিপ্লবে মূল ভূমিকা রেখেছিল।

দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব হয় ১৮৭০ থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক আগে। এ সময় স্টিল, তেল, বিদ্যুত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ সময়কালে টেলিফোন, বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফোনোগ্রাফ ইত্যাদি আবিষ্কৃত হয়।

তৃতীয় শিল্প বিপ্লব হচ্ছে ডিজিটাল বিপ্লব। বিংশ শতাব্দির নব্বইয়ের দশকে এ যুগের শুরু। এ যুগে এসেছে ব্যক্তিগত কম্পিউটার, ইন্টারনেট ইত্যাদি।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসলে তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের সম্প্রসারিত রূপ। বর্তমানে কাজ হচ্ছে রোবট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ন্যানোপ্রযুক্তি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, থ্রিডি প্রিন্টিং, চালকবিহীন গাড়ি ইত্যাদি নিয়ে।

রুবি: এবারের ফোরামে অংশগ্রহণকারীরা ২০০টিরও বেশি আলোচনাসভায় যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন সেগুলোর মধ্যে আছে ইনোভেশান, টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, ভৌগোলিক অর্থনৈতিক পরিবর্তন ইত্যাদি।

আলিম: এবারের গ্রীষ্মকালীন দাভোস ফোরামের মাধ্যমে বৈশ্বিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীনা প্রস্তাব সম্পর্কে বিশ্ববাসী আরও ভালোভাবে অবহিত হবে বলে আমরা আশা করছি। 'এক অঞ্চল, এক পথ' সম্পর্কেও বিশ্ববাসী আরও ভালো ধারণা পাবেন এ ফোরাম থেকে।

রুবি: হ্যা, 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রস্তাব বিশ্বজুড়েই সাড়া ফেলেছে। বহু দেশ ও অঞ্চল এ উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও চীন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে সামনে। কোনো কোনো পশ্চিমা বিশ্লেষকের মতে এক্ষেত্রে চীনের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। নতুন সংস্কার কার্যক্রমের ফলে চীন বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দাবস্থায়ও গ্রহণযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে চলেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চীনের অবদান এখনও অনস্বীকার্য।

আলিম: আপনি ঠিকই বলেছেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে যথেষ্ট নেতিবাচক উপাদান এখনও রয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও, চীনের অর্থনীতি সামনে এগিয়ে চলেছে। আর চীনের এগিয়ে যাওয়া মানে বৈশ্বিক অর্থনীতিরও এগিয়ে যাওয়া। আমরা আশা করি, এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।

রুবি: তো, প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। 'আজকের টপিক' এখানেও শেষ করতে হচ্ছে। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আর শুনতে থাকুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। (রুবি/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040