চীনের দারিদ্র বিমোচন কাজের প্রশংসা করছে আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচনসংক্রান্ত সংগঠনগুলো
  2017-06-17 19:49:18  cri

১৬ জুন জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৩৫তম অধিবেশন চলাকালে চীনের বেসরকারি সংস্থা চায়না এনজিও নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল একচেঞ্জেস (সিএনআইই) ও চীনের দারিদ্র বিমোচন তহবিল যৌথভাবে জেনিভায় জাতিসংঘ সদরদপ্তর প্যালেস অব নেশন্সে 'দারিদ্র বিমোচনের মাধ্যমে মানবাধিকারের অগ্রগতি' বিষয়ক সভার আয়োজন করে। বিভিন্ন দেশের সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় 'চায়না এনজিও নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল একচেঞ্জেস' (সিএনআইই)-র উপমহাসচিব লিউ খাই ইয়াং বলেন, দারিদ্র হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমাজের সম্মুখীন অভিন্ন চ্যালেঞ্জ। দারিদ্র বিমোচন হচ্ছে মানবাধিকার রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। দারিদ্র বিমোচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশের বেসরকারি পর্যায়ের সংস্থাগুলোর অভিজ্ঞতা বিনিময় এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করতে সহায়ক হবে।

চীনের আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের গবেষক ওয়াং শিয়াও লিন প্রথমে 'চীনের দারিদ্র বিমোচন ও মানবাধিকার: অগ্রগতি ও অভিজ্ঞতা' শীর্ষক ভাষণ দেন। তিনি উল্লেখ করেন, বিগত ত্রিশ বছরে চীনের ৮০ কোটি অত্যন্ত দরিদ্র জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। চীন বিশ্বব্যাপী লক্ষণীয় কৃতিত্ব ও মানবাধিকারের অগ্রগতি অর্জন করেছে।

ওয়াং শিয়াও লিন বলেন, '১৯৮১ সালে প্রায় ৮৮ শতাংশ চীনা বিশ্ব ব্যাংকের উত্থাপিত রোজ ১.৯ মার্কিন ডলার দরিদ্র রেখার নীচে বাস করতো। কিন্তু ৩০ বছর পর ২০১৩ সালে চীনের কেবল ১.৯ শতাংশ লোক দরিদ্র রেখার নীচে রয়েছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, বিগত ৩০ বছরে চীন অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি লক্ষণীয় দারিদ্র বিমোচনের সফলতাও অর্জন করেছে।'

ওয়াং শিয়াও লিন আরো জানান, চীন আন্তঃবিভাগীয় দারিদ্র বিমোচন সংস্থা গঠন করেছে। বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয় ও সমাজের বিভিন্ন মহলের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। বহু পক্ষকে সমন্বয় করে যৌথভাবে দারিদ্র বিমোচন ও মানবাধিকারে অগ্রগতি অর্জন করেছে। ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনা চলাকালে চীন শিল্প, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ সহ নানা দিক থেকে দারিদ্র বিমোচনের চেষ্টা করবে। ২০২০ সাল নাগাদ চীনের গ্রামাঞ্চলের সকল জনসংখ্যা দারিদ্র থেকে রেহাই পাওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে।

এরপর চীনের দারিদ্র বিমোচন তহবিলের মহাসচিব লিউ ওয়েন খুই 'দারিদ্র বিমোচন ও উন্নয়ন নিশ্চিত করে চীনের দারিদ্র বিমোচন তহবিলের জাতিসংঘের ২০৩০ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নের বাস্তব প্রয়াস' শিরোনামে ভাষণ দেন। তিনি চীনের দারিদ্র বিমোচন তহবিলের চীনের স্বাস্থ্য রক্ষা, শিক্ষা, জীবিকা উন্নয়ন ও দুর্গতদের উদ্ধারসহ চারটি ক্ষেত্রের কাজ ও অর্জিত সফলতা ব্যাখ্যা করেন।

তিনি বলেন, ২০০৫ সালের পর তার সংস্থা বিশ্বের ১৮টি দেশ ও অঞ্চলে দুর্গতের উদ্ধার তত্পরতা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নের সহায়তা প্রকল্পে অংশ নিয়েছে। পরবর্তী পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ সংস্থা অব্যাহতভাবে দেশি-বিদেশি সামাজিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করে যৌথভাবে জাতিসংঘের ২০৩০ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাবে।

ইথিওপিয়ার 'ইয়ে এনাত ওয়েগ' দাতব্য সমিতির মহাপরিচালক দেব্রেওয়ার্ক লুকেসেগেদ দেবিবি সভায় চীনের দারিদ্র বিমোচন তহবিলসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে তার দেশে 'শিশুর হাসি' নামক স্কুলে খাবার সরবরাহ প্রকল্প কার্যকর করার পরিচয় তুলে ধরেন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সে দেশের ৪০০০'র বেশি স্থানীয় দরিদ্র ছাত্রছাত্রীর পুষ্টির অবস্থা উন্নত হয়েছে। ফলে স্থানীয় জনসাধারণের সমাদর পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক 'মার্সি কর্পস' সংস্থার ঊর্ধ্বতন পরিচালক হেনরি ভান এগহেন বলেন, আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচনে চীন নেতৃত্ব দিচ্ছে। চীনের অভিজ্ঞতা থেকে আন্তর্জাতিক সমাজের শিক্ষাগ্রহণ করা প্রয়োজন।' (ইয়ু/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040