0616china
|
একটি সুন্দর 'ইয়ুই' বা জেইড তৈরি করা সহজ কাজ নয়। কাটিং, পলিশিং ও কার্ভিংয়ের সূক্ষ্ম প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই কেবল একটি অশোধিত পাথর থেকে সুন্দর 'ইয়ুই' পাওয়া সম্ভব।
চীনারা জেইডকে স্বর্গ ও পৃথিবীর সারাংশ গণ্য করেন। তারা মনে করেন, বাইরে থেকে দেখতে জেইড নমনীয় হলেও, এটা আসলে অত্যন্ত কঠিন। এর সৌন্দর্য আছে, আছে কাঠিন্যও। জেইড সুখ ও মঙ্গল বয়ে আনতে সক্ষম বলে চীনারা বিশ্বাস করেন।
সহজে পাওয়া যায় না বলে জেইড মূল্যবান। আবার দুর্লভ হবার কারণেই এ পাথর চীনের সম্রাট ও রাজকীয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পূজা ও দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য হিসেবে গণ্য করা হ'ত। জেইড ছিল তাঁদের পদমর্যাদার প্রতীকও। চীনা সম্রাটদের সীলমোহর তৈরি করা হত 'ইয়ুই' দিয়ে।
আদিকাল থেকেই চীনারা জেইডকে ভদ্রলোকের পণ্য হিসেবে গণ্য করে এসেছেন। তারা মনে করেন, যিনি ভদ্রলোক, তিনি অবশ্যই জেইড পরিধাণ করবেন। কোনো বিশেষ কারণ ছাড়া জেইডকে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা যাবে না। একসময় তো সাধারণ মানুষও মঙ্গল কামনায় ও দুর্ভাগ্য এড়াতে জেইড পরিধাণ করা শুরু করে।
জেইড মানুষের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। এর জন্যও এটি মূল্যবান। সাদা জেইড মানুষের মনকে প্রশান্ত ও সুস্থির করে। আকিক জেইড শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। জেইডে মানুষের জন্য কল্যাণকর দশটির বেশি সূক্ষ্ম উপাদান আছে। এসব উপাদান ত্বক ও আকুপাংকচার বিন্দুর মধ্য দিয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। চীনের হান রাজবংশ আমলে সুস্বাস্থ্যের জন্য জেইড পাথরের কুচি খাওয়ার প্রচলন ছিল।
একদিকে জেইড মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য কল্যাণকর, অন্যদিকে এটি মানুষের জন্য সরাসরি কল্যাণ বয়ে আনতে সক্ষম। জেইড মানুষের শরীর থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকর উপাদন ও তাপ শোষণ করে। এতে পাথরের রঙ, ঔজ্জ্বল্য ও অলংকরণ পরিবর্তিত হয়। অন্যভাবে বললে, মানুষের উপর জেইডের আত্মিক প্রভাব পড়ে।
আজকাল সাধারণ মানুষ অলঙ্কার ও সাজগোজের উপকরণ হিসেসে জেইড ব্যবহার করে থাকে। সংগ্রাহকদের কাছেও এটি জনপ্রিয়। উপহার হিসেবেও জেইড বা জেইডের তৈরি পণ্য আদান-প্রদান হয়ে থাকে।
চীনে ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক গেমসের পদকের মধ্যেও জেইড ব্যবহার করা হয়েছিল।