0609china
|
চীন চীনামাটির পাত্র বা 'ছ্য ছি'র জন্মস্থান। এটি চীনের প্রতীক। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে এক দলা কাদামাটিও যে পরিণত হতে পারে চমত্কার শিল্পকর্মে, 'ছ্য ছি' তার প্রমাণ। এসব পাত্র বৈচিত্র্যময় প্যাটার্ন এবং সূক্ষ্ম ও সুন্দর কারূকাজ সমৃদ্ধ। কিছু পাত্র কাগজের মত পাতলা, কিছু জেডের মত সাদা; কোনো-কোনোটি মৃত্পাত্রের মত অমসৃণ, কোনো-কোনোটি আবার কফির মত কালো।
চীনের মিং রাজবংশ আমলের আগে চীনামাটির পাত্রের রঙ সাধারণত সাদা হতো; প্যাটার্নের কোনো বালাই থাকত না। মিং রাজবংশ আমলের পর চীনামাটির পাত্রে রঙ লাগে। উজ্জ্বল রঙ ও সুন্দর প্যাটার্ন একে করে তোলে দৃষ্টিনন্দন। এ ধরনের পাত্র সংগ্রাহকদের কাছে মূল্যবান শিল্পকর্ম হিসেবে গণ্য হয়। রঙিন চীনামাটির পাত্রের মধ্যে আবার সবচে' বিখ্যাত হল নীল-সাদা চীনামাটির পাত্র। এর বাইরের রঙ ফুটিয়ে তুলতে বৃষ্টিপাতের পর আবির্ভূত রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের প্রয়োজন হয়। তাই নীল-সাদা চীনামাটির পাত্র খুবই মূল্যবান। 'চীনামাটির রাজধানী' হিসেবে পরিচিত চিং দ্য জেলার নীল-সাদা চীনামাটির পাত্র আবার সবচে' বেশি মূল্যবান।
বিশ্ববিখ্যাত চীনামাটির পাত্রগুলোর মধ্যে থাং রাজবংশ আমলের তেরঙা চকচকে পাত্র উল্লেখযোগ্য। এই পাত্রে ব্যবহার করা হয় হলুদ, সাদা ও সবুজ রঙ। এর রঙ স্বাভাবিক, প্যাটার্ন সাবলীল। উদাহরণস্বরূপ চীনামাটির তৈরি তেরঙা উটের কথা বলা যায়। দেখে মনে হবে রেশম ও আরোহী পিঠে নিয়ে উটটি মাথা উঁচু করে রেশমপথ বেয়ে এগিয়ে চলেছে।
চীনামাটি 'রেশমপথ'-এর মাধ্যমেই চীন থেকে বাকি বিশ্বে ছড়িয়েছে। বৃটিশ ব্যবসায়ীরা সর্বপ্রথম 'চায়না' শব্দটি ব্যবহার করেন 'চীনামাটি' অর্থে। তার পর তো 'চায়না' শব্দটি চীনের ইংরেজি নামে পরিণত হয়।
প্রাচীন চীনামাটির পাত্রের উচ্চ সংগ্রহমূল্য আছে। আপনার বাড়িতে দু'একটি চীনামাটির পাত্র থেকে থাকলে সেগুলো কত বছরের পুরাতন জেনে নিন!