20170527yinyue.mp3
|
বন্ধুরা, প্রথমে শুনুন লিয়াং চিং রুর গাওয়া 'আমি জানি সেটাই ভালোবাসা' নামের গান। গানটি লিখেছেন মালয়েশিয়ার গীতিকার ফাং শুয়ে বিন। তিনি লিখেছেন, 'আমরা হাতে হাত ধরি। আমি কথা বলছি, তুমি হাসছো। আমি জানি, সেটাই ভালোবাসা। নাহলে তুমি এতো তাড়াতাড়ি আসতে না। আমি বুঝেছি, তুমি মনের প্রেম একটু একটু করে বলছো। আমার মন আনন্দে ভরে গেছে। মন খুলে তোমার প্রেমকে ঢুকতে দেই। প্রেম হলে আর কিছু লাগবে না।'
লিয়াং চিং রু
লিয়াং চিং রু ১৯৭৮ সালে মালয়েশিয়ার নেগেরি সেমবিলানে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৯ সালে সংগীত জগতে তার যাত্রা শুরু হয়। এ পর্যন্ত এশিয়ায় তার ১ কোটি ৮০ হাজার অ্যালবাম বিক্রি হয়েছে। নতুন শতাব্দীতে প্রতিনিধিত্ব গায়িকার অন্যতম তিনি। সংগীতের পাশাপাশি নানা জনকল্যাণ কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয়। তিনি হচ্ছেন মালয়েশিয়ার বিশ্ব দৃষ্টি সংগঠনের দূত এবং সৃষ্টি ফাউন্ডেশনের দূত। তিনি ছোটবেলায় বাসায় ক্যান্টোনিজ ভাষা বলতেন। ১৯৯৭ সালের অক্টোবরে তিনি তাইওয়ানের সংগীত জগতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং ম্যান্ডারিন শিখতে শুরু করেন। লিয়াং চিং রুর চোখ বড়, ত্বক ফরসা। দেখতে ব্যস্ত শহরে প্রশান্ত লিলিফুলের মতো। তার কণ্ঠস্বর কোমল ও মিষ্টি। তার কণ্ঠে উষ্ণতা ও যত্নের ছাপ ফুটে ওঠে। মনে হয়, এক আন্তরিকতাপূর্ণ ভালো বন্ধু তোমার পাশে বসে গল্প করছে। বন্ধুরা, এবার শুনুন তার আরেকটি গান। গানের নাম 'দীর্ঘ সময়ে আসল প্রেম বোঝা যায়।'
মালয়েশিয়ার পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সাল পর্যন্ত সে দেশের জনসংখ্যা ছিলো ৩ কোটি ১৭ লাখ। এর মধ্যে চীনাদের সংখ্যা ৭৪ লাখ ১৭ হাজার ৮০০। যা পুরো দেশের জনসংখ্যার ২৩.৪ শতাংশ। তা ছাড়া দেশটির ৬৮.৮ শতাংশ মানুষ মালে জাতির এবং ৭ শতাংশ ভারতীয়। মালয়েশিয়ার চীনারা প্রধানত মিং ও ছিং রাজবংশের আমলে চীনের ফুচিয়ান, কুয়াংতোং, কুয়াংসি ও হাইনানসহ নানা প্রদেশ থেকে গিয়েছেন। তারা প্রধানত মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর, পেনাং, ইপো, জোহোর, সারাওয়াক, সাবাহ ও মেলাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করেন।
বন্ধুরা, এবার শুনুন কুয়াং লিয়াংয়ের গান 'প্রথম বার'।
কুয়াং লিয়াং
কুয়াং লিয়াং ১৯৭০ সালে মালয়েশিয়ার ইপোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রেমের গান লিখে সুনাম অর্জন করেছেন। তাকে 'প্রেমের গানের রাজকুমার' বলা হয়। তার সৃষ্ট 'রূপকথা' নামের গান টানা সাত বার 'বিদেশে সর্বোচ্চ গ্রন্থস্বত্ব আয়' অর্জনকারী মালয়েশীয় গানের গৌরব অর্জন করে। এ গানটি জাপানি, কোরীয়, ক্যান্টোনিজ, ভিয়েতনামি, মালয়, থাই, ইন্দোনেশীয়, ক্যাম্বোডীয় ও বর্মীসহ নানা ভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে।
বন্ধুরা, শুনুন চীনা ভাষার 'রূপকথা' গানটি।
চীনারা মালয়েশিয়া যাওয়ার পর প্রথম দিকে বাচ্চাদের চীনা ভাষা ও চীনা সংস্কৃতি শেখানোর জন্য প্রাইভেট স্কুল প্রতিষ্ঠা করতেন। সেসব স্কুলে প্রাচীন গ্রন্থও পড়ানো হতো। ১৯৭৭ সালে মালয়েশিয়া প্রবাসী চীনারা চীনা ভাষা শেখার অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন করেন। এখন দেশটিতে মোট ১২শ'রও বেশি সরকারি চীনা ভাষার প্রাথমিক স্কুল, ৬০টি চীনা ভাষার মাধ্যমিক স্কুল আর ৩টি বেসরকারি বহুবিধ মিডিয়ার কলেজ আছে। চীনের মূলভূভাগ, হংকং ও তাইওয়ানের পর মালয়েশিয়া হচ্ছে চীনা ভাষা শিক্ষা ব্যবস্থার অধিকারী দেশ।
বন্ধুরা, এখন শুনুন 'প্রেম আসার সময়' নামের গান। গেয়েছেন উ ছি সিয়ান আর ইয়াং ছাই নি।
উ ছি সিয়ান
উ ছি সিয়ান ১৯৬৩ সালে মালয়েশিয়ার পেরাকে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষের আদি বাসস্থান চীনের কুয়াংতোং প্রদেশের তোংকুয়ানে। ১৯৮৫ সালে তিনি মালয়েশিয়ায় প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ১৯৮৬ সালে তাইওয়ানের সংগীত মহলে প্রবেশ করেন। ১৯৯৪ সালে তার অ্যালবাম 'খুব মূর্খ' প্রকাশের পর মূল গান 'খুব মূর্খ' সবার মুখে মুখে শোনা যেতো। এশিয়ায় তার এ অ্যালবাম ১৮ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে। একই বছর ওই গান নানচিং বেতারের শ্রেষ্ঠ গানের পুরস্কার পায়। বন্ধুরা, শুনুন উ ছি সিয়ানের গাওয়া 'খুব মূর্খ' নামের গান।
মালয়েশিয়া প্রবাসী চীনারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে লক্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছেন এবং সম্মান ও মর্যাদা পেয়েছেন। তারা মালয়েশিয়া উন্নতিতে নিজের অবদান রেখেছেন। অর্থ, বাণিজ্য, রিয়েল এস্টেট, জ্বালানি, রাসায়নিক শিল্প, বিনোদন ও খাদ্যশস্যসহ নানা ক্ষেত্রে সফল চীনা ব্যবসায়ী আছেন।
বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষে শুনুন খ্য ই মিনের গান 'জীবনে প্রথম বার দেখার মতো'।
খ্য ই মিন
প্রিয় বন্ধুরা, আজকের সুর ও বাণী আসরে আপনারা মালয়েশীয় কণ্ঠশিল্পীদের গাওয়া কয়েকটি চীনা গান শুনলেন। অনুষ্ঠানটি শোনার জন্য ধন্যবাদ। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের কোন মতামত থাকলে আমাকে লিখে জানান। আমার ইমেইল ঠিকানা হলো yuguangyue@cri.com.cn।
সবাই ভালো থাকুন। আবার কথা হবে।
(ইয়ু/তৌহিদ)