মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এরদেনবাত সবার আগে প্রেসিডেন্ট সি'র সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। গত বছরের জুলাইয়ে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের পর এটাই তার প্রথম চীন সফর। প্রেসিডেন্ট সি বলেন, এ প্রকল্পে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান অন্যতম। দেশটিকে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে স্বাগত জানায় বেইজিং। 'প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে স্বর্ণ দিয়ে বিনিময় করা যায় না।' ২০১৪ সালে দেশটি সফরে এ মন্তব্য করেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। এবার মঙ্গোলিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে পুনরায় একথা উল্লেখ করলেন তিনি।
'এক কথায়, দূরের আত্মীয়স্বজনকে প্রতিবেশীর সঙ্গে তুলনা করা সম্ভব না। চীন বরাবরই মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। ভবিষ্যতের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা উচিত। পারস্পরিক আস্থা, সহযোগিতা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সার্বিক কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক উন্নত করতে হবে, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো উন্নত হয় এবং আরো বেশি জনকল্যাণ হয়।'
প্রধানমন্ত্রী এরদেনবাত 'ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড' প্রস্তাবকে মানবজাতির ভারসাম্যহীনতা ও অস্থিতিশীলতা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,
'প্রেসিডেন্ট সি'র উত্থাপিত 'ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড' প্রস্তাব মানবজাতির ভারসাম্যহীন উন্নয়ন ও অস্থিতিশীলতা সমস্যার সমাধান, বিশেষ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও চীন সরকার বিশ্বের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চেষ্টা চালিয়েছে, উন্মুক্ত, সহনশীল চিন্তাভাবনা নিয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। মঙ্গোলিয়া একে অভিনন্দন জানায়।'
এদিন চেক প্রেসিডেন্ট মিলোস জেমান ও পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ব্যাতা সিধোর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন সি। চেক প্রেসিডেন্ট জেমান বলেন,
'শীর্ষফোরাম ও 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে এবারের চীন সফর। আর এজন্যই প্রেসিডেন্ট সি'র সঙ্গে সাক্ষাত। এবার ৩৮টি সহযোগিতামূলক প্রকল্প নিয়ে এসেছি।'
সি বলেছেন, ইউরোপের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণে সহযোগিতা করতে আগ্রহী বেইজিং, যা ইউরোপীয় দেশগুলোকে এ উদ্যোগে অংশগ্রহণে উত্সাহ দেবে এবং যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন পদক্ষেপ।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিধোও চীনের পুরনো বন্ধু। গত বছর জুনে পোল্যান্ড সফরে তার সাথে দেখা করেন প্রেসিডেন্ট সি। তার সঙ্গে সাক্ষাতে সি বলেছেন,
'আমি বলেছি, 'ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড' শুধু চীনের একক সুর নয়, বরং আন্তর্জাতিক সিমফনি। এবারের শীর্ষফোরাম বিভিন্ন দেশের পরামর্শের ভিত্তিতে 'ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড' গঠন করবে, যৌথভাবে পারস্পরিক কল্যাণ এগিয়ে নেবে এবং এ ফোরামের মাধ্যমে 'বেল্ট এন্ড রোড' নতুন অগ্রগতি অর্জন করবে বলে বিশ্বাস করি আমি।'
সিধো বলেছেন, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বিশ্বের ভারসাম্য ও টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ এবং পোল্যান্ডের জন্যও তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ চিন্তাধারায় অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক খাতে অংশ নিতে আগ্রহী পোল্যান্ড। ইউরোপ ও চীনের পারস্পরিক বিনিময়, যোগাযোগ ও বাণিজ্যের জন্য এ উদ্যোগ সহায়ক হবে বলে আশা করেন তিনি।
(সুবর্ণা/তৌহিদ/জিনিয়া)