মে ১২: 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সিনিয়র টেলিভিশন ও মিডিয়া কনসালটেন্ট খ ম হারুন। আজ (শুক্রবার) চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষত্কারে তিনি এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, চীন এখন বিশাল এক প্রকল্পের রূপকার 'ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড' এতে আছে চীনের সাথে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের অন্তত ৭০টি দেশের জলে ও স্থলে সংযোগ স্থাপনের (কানেকটিভিটি) পরিকল্পনা। আছে এসব অঞ্চলের অবকাঠামো নির্মাণ, সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য বাড়ানোর উন্নয়ন পরিকল্পনা। স্থলভিত্তিক সিল্ক রোড ইকোনমিক বেল্ট এবং সমুদ্রগামী মেরিটাইম সিল্ক রোড এই উদ্যোগের অন্তর্ভুক্ত। চীনাদের বিশ্বাস তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলে নতুন করে চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান ঘটবে। ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডকে সংক্ষেপে 'ওবর' অথবা 'বেল্ট অ্যান্ড রোড' ইনিশিয়েটিভও বলা হয়। এর মাধ্যমে চীন তার উন্নয়নের সাথে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলের উন্নয়নের যোগসূত্র রচনা করতে চাইছে। এটাকে চীন সম্মিলিত উন্নয়নের 'চীনা স্বপ্ন' বলে বর্ণনা করছে। চীনাদের কাছে এখন একমাত্র অগ্রাধিকার 'ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড'। এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) নামে চীনের নেতৃত্বে ১০ হাজার কোটি ডলারের মূলধনে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ছাড়া চীন চার হাজার কোটি ডলারের সিল্ক রোড তহবিল গঠন করেছে। চীন এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগিয়েছে। প্রকল্পটির ব্যাপারে চীনের সাথে ৪৪টি দেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের সাথে জড়িত দেশগুলোকে আগ্রহী করে তোলার জন্য ইতোমধ্যে ২০টিরও বেশি দেশ সফর করেছেন। ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড নামের এই নতুন চীনা স্বপ্নের জন্মদাতা তিনিই। ২০১৩ সালের অক্টোবরে পৃথিবীর সামনে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং তার এই ভিশনারি পরিকল্পনা তুলে ধরেন। যা চীনের সাথে বাইরের দুনিয়ার সম্পর্ক পুননির্ধারণে ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড বিশ্বের একটি আলোচিত বিষয়।
তিনি আরও বলেন, "আমি মনে করি নতুন এই উদ্যোগ আমাদের এই অঞ্চলের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করবে, আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও চীন অর্থনীতি, সংস্কৃতি, আর্থ-বাণিজ্য, জনশক্তি ও মিডিয়াসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার হবেই বলে আমি বিশ্বাস করি। এ উদ্যোগও বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের নতুন উন্নয়নের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে"। (ওয়াং তান হোং)