'এক অঞ্চল, এক পথ' মহাকাশবিষয়ক নব্যতাপ্রবর্তন জোট আন্তর্জাতিক মহাকাশ খাতে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থা, পেশাগত প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গঠিত বেসরকারি সংস্থার অন্যতম। বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইউক্রেন, স্পেইন, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, আলজেরিয়া, মিশর ও পাকিস্তানসহ মোট ১০টি দেশের ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের ২৯টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থা এ জোটে অংশ নিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মহাকাশ খাতে চীন ও রাশিয়ার সহযোগিতা সুষ্ঠুভাবে চলছে। এবার রুশ ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় এ জোটে অংশ নিয়েছে। সেন্ট পিটার্সবুর্গ মহাকাশ যন্ত্রবিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট কনস্তানতিন লইসভ বলেন, ভবিষ্যতে এ কাঠামোতে চীনের সাথে আরো কার্যকর সহযোগিতা বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন,
'গত বছর মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তিবিষয়ক নীতিমালা স্বাক্ষর করেছে রুশ ও চীন সরকার, যা দু'দেশের মহাকাশ খাতের অগ্রগতির জন্য সহায়ক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মহাকাশ খাতে দু'দেশের সহযোগিতা ঘনিষ্ঠ। বর্তমানে নিজের রকেট ও নিক্ষেপ কেন্দ্র রয়েছ এবং দেশ দু'টি স্বাধীনভাবে উপগ্রহ গবেষণা করতে সক্ষম, ভবিষ্যতে আরো বেশি সহযোগিতা চালিয়ে যাবে দু'দেশ।'
আন্তর্জাতিক মহাকাশবিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থা ও পেশাগত প্রতিষ্ঠানের প্রাধান্য নিয়ে 'এক অঞ্চল, এক পথ' কাঠামোতে মিশ্রণ ঘটানোর লক্ষ্য হলো এ জোট প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য। জোটের সচিবালয় চীনের নর্থওয়েস্টার্ন শিল্প বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত। ভবিষ্যতে জোটের উন্নয়ন নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ওয়াং জিন সোং বলেন,
'যত দ্রুত সম্ভব জোটের সহযোগিতামূলক প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। এ জোটকে বিশ্বের প্রভাবশালী ও ব্যাপক অংশগ্রহণকারীদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। জোটের বিভিন্ন সদস্যের প্রাধান্য নিয়ে আঞ্চলিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যময় বিনিময় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। তা ছাড়া, সরকারের সহযোগিতামূলক প্রকল্প নিয়ে প্রযুক্তি হস্তান্তর, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণসহ গভীর সহযোগিতা বাস্তবায়ন করা হবে।'
গত বছরের শেষ দিকে, চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও বিজ্ঞান প্রযুক্তিবিষয়ক শিল্প ব্যুরো এবং চীনের রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির যৌথ উদ্যোগে 'এক অঞ্চল, এক পথ' সংলগ্ন দেশের মহাকাশ তথ্য করিডোর নির্মাণ ও প্রয়োগ সম্পর্কে নির্দেশনা প্রকাশিত হয়। তাতে আন্তর্জাতিক উপগ্রহ ব্যবস্থার সহযোগিতা জোরদার করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে মহাকাশ সম্পদের সহযোগিতা, সমন্বয়, ডেটা বিনিময় ও যৌথ পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে 'এক অঞ্চল, এক পথ' স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড যোগাযোগের নেটওয়ার্ক, উপগ্রহ ব্যবস্থা, আবহাওয়া উপগ্রহ ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যৌথ উপগ্রহ পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির ব্যবস্থাপনা স্থাপন করা ইত্যাদি।
এ সম্পর্কে চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও বিজ্ঞান প্রযুক্তিবিষয়ক শিল্প ব্যুরোর প্রধান প্রকৌশলী, চীনের জাতীয় মহাকাশ ব্যুরোর মহাসচিব থিয়ান ইউ লোং বলেন,
'বিভিন্ন সহযোগিতার মাধ্যমে মহাকাশে রেশমপথ তৈরি করা সক্ষম। এ জোটের প্রতিষ্ঠা অতি গুরুত্বপূর্ণ, তা চীন সরকারের উদ্যোগে 'এক অঞ্চল, এক পথ' মহাকাশ তথ্য করিডোর নির্মাণের মূল ভিত্তি হবে বলে আশা করি।' (সুবর্ণা/টুটুল)