চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, তার কুয়াংসি সফরের প্রধান লক্ষ্য হলো, স্থানীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অবস্থা দেখা ও কমিউনিস্ট পার্টির আসন্ন উনিশতম সম্মেলন সম্পর্কে তাদের মতামত জানা।
গত ১৯ থেকে ২১ এপ্রিল কুয়াংসি প্রদেশের পেইহাই ও নাননিং শহরে পরিদর্শন করেন প্রেসিডেন্ট সি। স্থানীয় বন্দর, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ও উদ্ভাবনশীল পরীক্ষামূলক কেন্দ্রের খোঁজখবর নেন সি চিন পিং।
প্রেসিডেন্ট সি প্রথমে কুয়াংসি প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর পেইহাই সফর করেন। সেখানে তিনি হ্যপু হান রাজবংশ-বিষয়ক যাদুঘরের প্রাচীন সামুদ্রিক রেশমপথের নিদর্শন দেখেন এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রকল্পের আওতাভুক্ত থিয়েশান বন্দর পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, সামুদ্রিক পথের উন্নয়ন একটি দেশ উন্নয়নের খুব গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি বলেন, আমরা এখন 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রকল্প উন্নয়নের চেষ্টা করছি। হ্যপু যাদুঘরে হান রাজবংশের রেশমপথের কিছু পুরাতন জিনিসপত্র রয়েছে। ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন দেখে মনে হয়, ইতিহাসে রেশমপথের মাধ্যমে আমাদের সুগভীর যোগাযোগ ছিলো। আজকাল 'এক অঞ্চল, এক পথ'-এর মাধ্যমে পুরানো এ যোগাযোগ নতুন যুগের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
থিয়েশান বন্দরের শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপের সময়, সি চিন পিং বলেন, বন্দর নির্মাণ ও বন্দর অর্থনীতি দেশের উন্নয়নে খুব গুরুত্বপূর্ণ। বন্দর নির্মাণ, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য উচ্চ মানের প্রযুক্তি ও পরিষেবা দরকার। এর মাধ্যমে কুয়াংসি'র উন্নয়ন, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উন্নয়ন এবং উন্মুক্তকরণ ও সংস্কার কল্যাণকর হবে।
শ্রমিকদের উত্সাহ দিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, 'এক অঞ্চল, এক পথ' একটি অভিন্ন স্বপ্ন। এ কাঠামোতে চীনের উন্মুক্তকরণ ও উন্নয়ন এবং 'দুই শত বছরের স্বপ্ন' বাস্তবায়ন এবং চীনের মহান পুনরুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা আমার এবং তোমাদের অভিন্ন লক্ষ্য। আশা করি আমরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে দ্রুত আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো।
একই দিন চীনা প্রেসিডেন্ট পেইহাই চিনহাইওয়ান গরান গাছের সুরক্ষিত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। গরান গাছ উপকূল অঞ্চলের বিশেষ গাছ। সামুদ্রিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় গরান গাছের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, গাছগুলো সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা উচিত।
২০ এপ্রিল সকালে চীনের প্রেসিডেন্ট নাননিং এলুমিনিয়াম শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। সেখানে উত্পাদিত এলুমিয়াম নভোযান, ট্রাক, জাহাজ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। সি চিন পিং বলেন, এটি দেশের কৌশলগত উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি বড় দেশ হিসেবে চীনের রেল অর্থনীতির উন্নয়ন করতে হবে। এ রেল অর্থনীতির একটি ভিত্তি হলো শিল্প উত্পাদন। আমাদের কৌশল হচ্ছে উত্পাদন শিল্পের অব্যাহত উন্নয়নের পাশাপাশি, শিল্পের আধুনিক ও উদ্ভাবনশীল উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা। আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো এ প্রক্রিয়ার প্রধান শক্তি। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অব্যাহত সংস্কার ও উন্নয়ন দরকার।
পরে কুয়াংসি প্রদেশের কমিউনিস্ট পার্টির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন মহলের ১৪জন প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপ করেন প্রেসিডেন্ট সি। এ সময় তিনি বলেন, আপনারা উন্মুক্তকরণ ও সংস্কারের কাজে সরাসরি জড়িত আছেন। আপনাদের মতামতের মাধ্যমে জনমতামত ও পরামর্শ প্রতিফলিত হতে পারে।
পরিশেষে দারিদ্র্য বিমোচনসংক্রান্ত কাজের কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, দ্রুত দরিদ্র অঞ্চলগুলোকে উন্নত করতে হবে।
(স্বর্ণা/তৌহিদ)