স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান কতো হওয়া উচিত?
  2017-04-23 19:10:25  cri



শরীর কাঠামো বা ফিগারেরে গোল্ডেন অনুপাত আছে। কথাটি বিয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ও ভালোবাসা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে দু'জনের উচ্চতা, বয়স ও বেতনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। যারা প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন, তাদের কথা বাদ। তারা হয়তো চাইলেও আর কোনো মানদণ্ডে প্রেমিক বা প্রেমিকাকে বিচার করবেন না। কিন্তু যাদের এ সমস্যা নেই, তারা আমাদের আজকের আলোচনা থেকে উপকৃত হতে পারেন।

হ্যা, আজকের আসরে আমরা আলোচনা করবো স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান নিয়ে। কতো হওয়া উচিত সে ব্যবধান? সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে লিখিত একটি প্রবন্ধে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

প্রবন্ধে শুধু বয়সের ব্যবধানের কথা বলা হয়েছে তা নয়, দু'জনের উচ্চতা ও বেতনের ব্যবধান এবং শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর সাথে সুসম্পর্ক রাখাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। আমি প্রথমে স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার আদর্শ উচ্চতা নিয়ে কথা বলবো।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে উচ্চতার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যবধান হচ্ছে ১২ সেন্টিমিটার। অর্থাত স্বামী বা প্রেমিককে হতে হবে ১২ সেন্টিমিটার বেশি লম্বা। কেন? কারণ, এতে নাকি পরস্পরকে আলিঙ্গন করা ও চুমু খাওয়ায় সুবিধা হয়।

এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত হচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মেয়ে সাধারণত নিজেকে সযত্নে রক্ষা করতে চান। স্বামী বা প্রেমিকের উচ্চতা বেশি হলে, তিনি অনেক বেশি নিরাপদবোধ করেন। আসলে ছেলেদের উচ্চতা সাধারণতভাবে মেয়েদের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে ১০ সেন্টিমিটার বেশি হলে, দেখতে সুন্দর লাগে; মানানসই মনে হয়। এই ব্যবধান দু'পক্ষের লিঙ্গ পরিচয়কেও আরও স্পষ্ট করে তোলে। স্বামী বা প্রেমিককে তখন অনেক বেশি ম্যানলি মনে হয় এবং স্ত্রী বা প্রেমিকাকে আরও বেশি কমনীয় ও সুন্দর লাগে। উচ্চতার ব্যবধানটি অতিরিক্ত হলে দেখতে ভালো দেখায় না।

এখন আমি বয়সের ব্যবধান নিয়ে বলবো। প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের আদর্শ ব্যবধান ধরা হয় ৩ বছরকে। সাধারণত মেয়েরা মনের দিক দিয়ে তুলনামূলকভঅবে একটু আগেই পরিপক্কতা লাভ করে। আর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মানসিক মিল থাকাটা জরুরি। তো, মনে করা হয় যে, স্বামী যদি স্ত্রীর চেয়ে ৩ বছরের বড় হয় তবে দু'জনের মানসিক পরিপক্কতা সমান হবে। তা ছাড়া, ৩ বছর বড় হলে স্বামী একটু আগে পড়ালেখা শেষ করে কোনো একটা পেশা বেছে নেবে এবং নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার সময় পাবে। এটাও বয়সের ব্যবধান ৩ রাখার একটা কারণ।

এখানে একটা বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, কিশোর বয়সে মেয়েদের মানসিক বিকাশ ছেলেদের তুলনায় দ্রুত হয়। কিন্তু ২০ থেকে ৩০ বছর সময়কালটায় এ ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য দেখা যায় না।

বেতন বা আয়ের ব্যাপারটা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কোন কোন জরিপ অনুসারে, স্বামীর বেতন বা আয় স্ত্রীর দেড় গুণ হলে ভালো। এতে পরিবারের সুখের সূচক বাড়ে।

আজকাল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় স্বামী ও স্ত্রী দু'জনই কাজ করেন, আয় করেন। তবে ঐতিহ্যবাহী ধারণার প্রভাবে অনেকের মতামতা এমন যে, পরিবারে স্বামীর আর্থিক দায়িত্ব বেশি বহন করা উচিত। তাই স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর আয় বেশি হওয়া আবশ্যক বলেই অনেকে মনে করেন। এতে এক দিকে স্বামীর মুখ রক্ষা হবে, অন্যদিকে স্ত্রীর নিরাপত্তাবোধ বাড়বে। তবে, এ ব্যবধান যত বেশি হবে তত ভালো।

এখন শ্বশুর-শ্বাশুড়ী প্রসঙ্গ। আজকালকার ছেলে-মেয়েরা প্রবীণদের সঙ্গে বসবাস করতে চান না। অথচ বাবা মা'র যত্নে আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।

কিন্তু অনেক দম্পতি নিজেদের মতো করে থাকতে চান; গড়তে চান নিজস্ব একটা ভূবন, যেখানে অন্য কেউ থাকবে না। তারা চান, তাদের বিবাহিত জীবনের গুণগত মান উন্নত করতে। এই চাওয়াটা ঠিক। কিন্তু পিতা-মাতা বা শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর যত্ন নেওয়ার গুরুত্বও তাদের বুঝতে হবে। তারা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে সন্তান বড় করেছেন। তাই পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে কী করা উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তত এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে পিতা-মাতা বা শ্বশুর-শ্বাশুড়ী তাদের প্রয়োজনে ছেলেমেয়েকে কাছে পান।

(ওয়াং হাইমান/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040