প্রথমে 'সুন্দর চীন অন্বেষণ--অস্ট্রিয়ার সাংবাদিকদের চীন ভ্রমণ' শিরোনামে একটি প্রবন্ধ শুনবো।
২৫ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-র জার্মানভাষা বিভাগ ও জুরিখে অবস্থিত চীনের জাতীয় পর্যটন ব্যুরো অফিসের যৌথ উদ্যোগে 'সুন্দর চীন অন্বেষণ--অস্ট্রিয়ার সাংবাদিকদের চীন ভ্রমণ' অনুষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গে আয়োজিত হয়।
অস্ট্রিয়ার টেলিভিশন কেন্দ্র, বেতার, ক্রাউন এফএম, স্টেইরমার্ক সংবাদপত্র ও বিভিন্ন ম্যাগাজিনের ৬ জন সাংবাদিক চীনের কুয়াং সি ও হাই নান প্রদেশ ভ্রমণ করেন। এ সময় তারা দু'প্রদেশের পর্যটন সম্পদ, সংখ্যালঘু জাতির সংস্কৃতি, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও প্রকৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের তথ্য জানতে পারেন।
স্টেইরমার্ক সংবাদপত্রের পরিচালক উলফগ্যাং কাস্কি জানিয়েছে
ন, কুয়াং সি প্রদেশের কুউলিন শহরে বিভিন্ন জাতির স্বায়ত্তশাসিত কাউন্টিতে অনেক সংখ্যালঘু জাতি বাস করে। এখানে তাদের জীবনযাপনের সঙ্গে যুক্ত সিঁড়ির ধাপের মত থাককাটা মাঠ নতুন দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। এতে করে অঞ্চলটির দরিদ্র জনগণের জীবন ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে। এ ধরনের অর্থনৈতিক উন্নয়নপদ্ধতি অনেক প্রশংসা অর্জন করেছে।
অস্ট্রিয়ার রিপোর্টার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ফ্রেড টুইনহান জানিয়েছেন, এবার সফরে সংখ্যালঘু জাতির লোকসংস্কৃতি তার মনে সবচেয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে। অনেক স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে গভীরভাবে নিজের সংস্কৃতি শেখার ইচ্ছা আছে। তারা আন্তরিকভাবে স্থানীয় সংস্কৃতি প্রচার করে। তাদের উদ্দীপনা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
অস্ট্রিয়ান টেলিভিশন কেন্দ্রের সম্পাদক জোসেফ জানান, আমি অনেক বছর চীনা ভাষা শিখেছি। এবার লি চিয়াং নদীর দু'পারের বৈশিষ্ট্যময় দৃশ্য এবং হাই নান প্রদেশের দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করার পর, আমি বুঝতে পারি, চীন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও লোকসংস্কৃতিতে ভরপুর একটি বিশাল দেশ। যা সারা জীবন দিয়ে উপভোগ করলেও হয়তো শেষ হবেনা।
চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-র জার্মানভাষা বিভাগ এবং জুরিখে চীনের জাতীয় পর্যটন ব্যুরো অফিস যৌথভাবে 'সুন্দর চীন অন্বেষণ--অস্ট্রিয়ার সাংবাদিকদের চীন ভ্রমণ' অনুষ্ঠান আয়োজন করে। প্রথমবার এ কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৬ সালে। এর লক্ষ্য হচ্ছে সার্বিকভাবে অস্ট্রিয়ার প্রধান মিডিয়া শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশটির জনগণের মনে 'সুন্দর চীন'-কে জনপ্রিয় করে তোলা, গঠনমূলকভাবে চীনা পর্যটন সম্পদ প্রচার করা, অস্ট্রিয়ান মিডিয়ায় চীনের পাহাড়, নদী, সংস্কৃতি, ইতিহাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের তথ্য শেয়ার করা এবং দু'দেশের পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে নতুন শক্তি বয়ে আনা।
বন্ধুরা, এখন 'বোলোনে শিশুদের বইমেলায় চীনা প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণ' সম্বন্ধে আলোচনা শুনবেন।
৩ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত শিশুদের প্রকাশনা এক্সপো--বোলোনে শিশুদের বইমেলা ইতালির বোলোনের প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৩৫টি প্রকাশনা সংস্থা নিয়ে গঠিত চীনা যৌথ প্রদর্শনীদল চতুর্থ বারের মত মেলায় অংশ নেয়।
এবারের এ মেলার প্রদর্শনী হলের সংখ্যা ৬টি এবং আয়তন ৩ হাজার বর্গমিটার। মেলাটি শিশুদের বইমেলা হলেও আসলে অনেক গল্পের বই প্রাপ্তবয়স্করাও পড়তে পারেন। এসব বই শিশুদের কাছে আনন্দ ছাড়া জ্ঞানও এনে দিয়েছে। বই পড়তে পড়তে প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে যেন ছোটবেলার স্মৃতি ফিরে এসেছে। চীনা শিশু সংবাদমাধ্যম প্রকাশনার সভাপতি লি স্যুয়েই ছিয়েন বলেন,
"গত বছর আমাদের ৩৪টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নেয়, চলতি বছর ৩৫টি। এটি 'সংস্কৃতি বাইরে যাওয়া'র উদ্দীপনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। আসলে আরো বেশি বৈদেশিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে বাইরে যাওয়ার দায়িত্ব আরো স্পষ্ট হবে। গত বছর আমাদের চিন্তা ছিলো, মেলায় ভালো ভালো বই দেখা এবং এসব ভালো বইয়ের কপিরাইট দেশে প্রকাশনা করা। কিন্তু চলতি বছর আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো কপিরাইট রপ্তানি। আমাদের আশা এবার বইমেলায় ৭'শটি কপিরাইট প্রকল্প লেনদেন সম্পন্ন করা হবে। আমাদের বইয়ের দ্রব্য আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। "
২০১৮ সালে বোলোনে শিশুদের বইমেলার সম্মানিত অতিথি দেশ হবে চীন। চীনা কিশোর বুক ক্লাবের পরিচালক লি স্যুই ছিয়েন মেলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
"আগামী বছরের একই সময় ভালো গল্প একটি নতুন পর্যায়ে দাঁড়াবে। কারণ চীন মেলার সম্মানিত অতিথি দেশে পরিণত হবে।"
তিনি বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যতে আরো বেশি চীনা গল্প বিশ্বের শিশুদের সঙ্গে বড় হয়ে উঠবে।
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান শেষের আগে কয়েকটি সাংস্কৃতিক খবর শুনবো।
সাংবাদিকদের কাজের ক্ষমতা ও সচেতনতা উন্নয়ন এবং মিডিয়ার লোকদের সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়া জীবন সমৃদ্ধ করার জন্য, ১৬তম জাতীয় প্রেস টেনিস প্রতিযোগিতা চলতি বছরের জুন মাসে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। চীনা সাংবাদিক সমিতিসহ বিভিন্ন সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এ পর্যন্ত মোট ১৫ বার এ প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছে। তা প্রেস মহলের টেনিস খেলোয়াড়দের কাছে প্রতি বছরের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দিবস। প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা ও সংগঠক হিসেবে, চীনা টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের উপ-পরিচালক ওয়ান বো সিয়াং ইতিবাচকভাবে স্পনসরের জন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুঁজছেন।
২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে, চীনের কুয়াং সি প্রদেশের নান নিং শহরের ১৫তম জাতীয় প্রেস টেনিস প্রতিযোগিতায় চীনের হাই নান প্রদেশের প্রতিযোগিতাদল প্রথম স্থান হয়, তার পর চীন আন্তর্জাতিক বেতারের দল ও সিন হুয়া বার্তা সংস্থা আলাদা আলাদাভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান লাভ করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিন চিয়াংয়ের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় 'এক
অঞ্চল, এক পথ' কৌশলে আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময়বিষয়ক সহযোগিতা গভীর করার জন্য চেষ্টা করছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা এক উন্মুক্ত মনোভাব নিয়ে 'বাইরে যাওয়া' বাস্তবায়ন করবে। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে সহযোগিতাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে, যেমন- মধ্য এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় জোট, নিউ কনসেপ্ট ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুলসহ ইত্যাদি। মূলত 'এক অঞ্চল, এক পথ' বরাবর দেশ ও অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনিময় ও একাডেমিক সহযোগিতাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে চলেছে সিন চিয়াংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। অনুষ্ঠান শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়ান (জিনিয়া/টুটুল)