সংবাদ পর্যালোচনা:বোআও ফোরাম থেকে অর্থনীতির বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া বেগবান করার তাগিদ
  2017-03-27 14:35:42  cri

সুপ্রিয় শ্রোতা, শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। এখন শুনবেন সংবাদ পর্যালোচনা। পরিবেশন করছি আমি জিনিয়া।

গতকাল (রোববার) 'বোআও এশীয় ফোরাম, ২০১৭'-এর শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়। ফোরাম থেকে একটি ঘোষণা প্রকাশিত হয়েছে। ঘোষণায় অর্থনীতির বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া আরও বেগবান করতে বিশ্বের সকল দেশের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সিঙ্গাপুরের সিনিয়র মন্ত্রী উ চুও তুং, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট চিন লি ছুন, চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর চৌ সিয়াও ছুয়ানসহ বিভিন্ন অতিথি সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এবার সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল: 'বিশ্বায়ন ও মুক্ত বাণিজ্যের ভবিষ্যত'। এ প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে অংশগ্রহণকারীরা গভীরভাবে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন।

ফোরামে গৃহীত ঘোষণায় বলা হয়েছে, বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি নানামুখী চাপের সম্মুখীন। তা ছাড়া, বিশ্বায়নবিরোধী মনোভাব এবং বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদের প্রবণতাও বাড়ছে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই প্রেক্ষাপটে এশিয়ার দেশগুলোর উচিত বাজার উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়া এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এতে আশা করা যায় যে, আঞ্চলিক অর্থনীতিতে অভিন্ন সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

দু'দিনব্যাপী 'বোআও এশীয় ফোরাম, ২০১৭' শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই মনে করেন, কোনো দেশ যদি বৈশ্বিক বাজারে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সক্ষমতা হারায়, তবে নিশ্চিতভাবেই দেশটিতে কর্মসংস্থানের অভাব দেখা দেবে। এ প্রসঙ্গে সিঙ্গাপুরের সিনিয়র মন্ত্রী উ চুও তুং বলেন, বিশ্বায়ন অবশ্যই অর্থনৈতিক সুবিধা আনবে, কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাবগুলো মাথায় রেখে তা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতেও হবে। তিনি বলেন,

"অবশ্যই বিশ্বায়নের নেতিবাচক দিকগুলোর ওপর আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে ঢালাওভাবে বিশ্বায়নের বিরোধিতা করতে হবে। এতে সমস্যা জটিলতর হবে। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া, প্রযুক্তির উন্নয়ন, ইন্টারনেটের উন্নয়ন বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই, যদি আমরা ভালভাবে বিশ্বায়নের নেতিবাচক দিকগুলো মোকাবিলা করতে পারি, তবে বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।"

এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরুর পর এক বছর গত হয়েছে। ব্যাংকটি বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট চিন লি ছুন জানান, বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট প্রতিযোগিতায় কোনো ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ নেই। তবে, এতে কোনো কোনো দেশ একটু বেশি এবং কোনো কোনো দেশ একটু কম লাভবান হয়। তিনি আরও বলেন, বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ সাধারণ মানুষের জন্য আরও কল্যাণকর প্রমাণিত হবে। তিনি বলেন,

"আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতায় কোনো ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ নেই। শুধু সুবিধার মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন। কোনো কোনো দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। কিন্তু সে সব দেশের সরকারগুলো সামষ্টিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান দিতে পারছে। অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, আন্তঃযোগাযোগ বাড়ানো, এবং সরকার-টু-সরকার সংলাপ বাড়ানোর মাধ্যমে অধিক থেকে অধিকতর মানুষের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করা সম্ভব। আমরা আশা করি, অবকাঠামো খাতে সহযোগিতা ও সমন্বয় আরও জোরদার করে অভিন্ন স্বার্থ উদ্ধার করা সম্ভব হবে।"

বোআও এশীয় ফোরাম থেকে প্রকাশিত ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের সরকার ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত সব ধরণের সংরক্ষণবাদের বিরোধিতা করা। সংস্কার ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য বিনিয়োগ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বের অভিন্ন সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব। (জিনিয়া ওয়াং/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040