প্রথমে একটি সাংস্কৃতিক খবর শুনবো।
ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে চীন-রাশিয়া স্নো গেমস ও সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠান চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হেই লং চিয়াং প্রদেশের ছি থাই হে শহরে উদ্বোধন হয়। দু'দেশের মোট ১৩টি প্রতিনিধিদলের প্রায় এক'শ খেলোয়াড় এ গেমসে অংশ নেয়।
রাশিয়া হলো বিশ্বের শীতকালীন গেমসের পরাশক্তি। হেই লং চিয়াং রাশিয়ার নিকটবর্তী একটি প্রদেশ। এই প্রদেশটি চীনের শীতকালীন গেমসেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। সেজন্য স্নো গেমস ও শীতকালীন গেমসের ক্ষেত্রে হেই লং চিয়াং'র বিশাল সুবিধা রয়েছে। এখানকার ইয়াং ইয়াং ও ওয়াং মেংসহ অনেক খেলোয়াড় অলিম্পিক গেমসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
এবারের গেমসে রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক, উসুরিয়াস্ক ও নাহোদকা শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের খেলোয়াড়রা চীনের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ছোট ট্র্যাক স্পিড স্কেটিং ও ফুটবল খেলায় অংশ নেয়।
ইভেন্ট আয়োজকদের মতে এবারের অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হলো ছোট ট্র্যাক স্পিড স্কেটিং গেমসের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে স্নো গেমসের ক্ষেত্রের বিনিময় জোরদার করা। এবারের গেমসের একটি সূচনাস্থল হিসেবে ছোট ট্র্যাক স্পিড স্কেটিং, তায়কোনদো, মার্শাল আর্ট, থাই চিসহ বিভিন্ন ইভেন্টে দু'দেশের ব্যাপক বিনিময় চলে। গেমসের পর দু'পক্ষের সংস্কৃতি, পর্যটন, শিক্ষা ও চিকিত্সাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের আরো গভীর উন্নয়ন ব্যাপকভাবে বাস্তবায়িত হবে।
বন্ধুরা, এখন 'তাইপে আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০১৭ সমাপ্ত' শিরোনামে একটি প্রবন্ধ শুনবেন।
২০১৭ তাইপে আন্তর্জাতিক বইমেলা সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এ বইমেলাটি খুব জনপ্রিয় একটি মেলা। এবারের মেলায় প্রথম বারের মতো ব্যবহৃত বই ও বিরল প্রাচীন বইয়ের নিলাম পর্ব ছিলো। এবার শুনুন বিস্তারিত।
২৫তম তাইপে আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০১৭ একটানা ৮ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাইপে'র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের প্রথম ও তৃতীয় প্রদর্শন হলে হাজার হাজার বিভিন্ন বই হাজার হাজার পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পাঠকরা মনে করে, বর্তমানে ডিজিটাল বই অধিকাংশ বাজার দখল করলেও, পাঠকদের মনে কাগজের বইয়ের অবস্থান অতুলনীয়।
রেকর্ড ১
"কাগজের বই হাতে নিয়ে একটা পৃষ্ঠার পর আরেকটি পৃষ্ঠা পড়ার সেই অনুভূতি কখনোই ডিজিটাল বই পূরণ করতে পারে না। কাগজের বইয়ের ডিজাইন, শব্দ সম্পাদনার স্টাইল সব কিছু যেন এক বইয়ের জগত নির্মাণ করে। ডিজিটাল বই পড়ে এ ধরণের কোনো অনুভূতি পাওয়া যায় না।"
"আমি কাগজের বই পছন্দ করি, এ বই স্পর্শ করতে খুবই ভালো লাগে। যেমন আজ এ স্টলে অনেক বই দেখছি, আমি এ প্রকাশনালয়ের বই খুবই পছন্দ করি, কারণ তাদের গুণগতমান খুবই ভালো। কিন্তু ইন্টারনেটে বই পড়া ভিন্ন ব্যাপার, তা বিশেষ নয়।"
এবারের তাইপে আন্তর্জাতিক বইমেলার কোনো উদ্যোগ সংস্থা ছিলো না। কিন্তু এর প্রধান কর্তব্য হলো পাঠকদের কাছে তাইওয়ানের স্থানীয় প্রকাশনালয়ের বই প্রচার করা। বই ছাড়া সংশ্লিষ্ট শিল্পও প্রদর্শন করা হয়। মেলায় তাইওয়ানের প্রথম মুদ্রণযন্ত্র প্রদর্শন করা হয়। তাইপে আন্তর্জাতিক বইমেলা তহবিলের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান চাও চেং মিন বলেন, এবারে বইমেলায় প্রদর্শকদের সংখ্যা গত বছরের বইমেলার চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন,
রেকর্ড ২
"চলতি বছরের বইমেলায় প্রদর্শকদের সংখ্যা গত বছরের চেয়ে ১০শতাংশ বেড়েছে। সেজন্য চলতি বছরের বইমেলায় আগের চেয়ে পাঠকদের জন্য আরো বৈচিত্র্যপূর্ণ পাঠের বিষয় ছিলো। এবারে বইমেলার সাজানো স্টাইলও ভিন্ন। আমরা আশা করি এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত তাইওয়ানের ৬০ বছরের প্রকাশনা ও পঠন ইতিহাস সবার কাছে তুলে ধরতে পারবো।"
এবারের বইমেলার ১০টি বৈশিষ্ট্য ছিলো। যেমন- প্রথম বারের মতো স্বাধীন বইয়ের দোকান ও স্বাধীন প্রকাশনালয়ের জন্য বিশেষ পর্ব নির্মাণ; প্রথম বারের মতো সম্পাদনা ফোরাম আয়োজন ইত্যাদি। আসলে ব্যবহৃত বইও প্রথম বারের মতো এবারের মেলায় প্রদর্শন করা হয়। তাইওয়ানের বিখ্যাত ব্যবহৃত বইয়ের দোকান মো লি দোকানের পরিচালক দাই লি চেন বলেন, বই পড়লে বইয়ের জ্ঞান কখনও ছেড়ে যায় না, ব্যবহৃত বই নতুন বইয়ের মতোই মূল্যবান। তিনি বলেন,
রেকর্ড ৩
"আসলে অনেক বই খুবই মূল্যবান। বই দেখার পর বইগুলো ছেড়ে দেওয়া খুই দুঃখের বিষয়। সেজন্য এবারের বইমেলার সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা সবাইকে ব্যবহৃত বই রক্ষা ও পুনব্যবহারের আহ্বান জানাই। একটি তথ্য পাঠকদের কাছে পাঠাতে চাই, তা হলো বই আসলে সংরক্ষণে রাখা দরকার।"
এবার বইমেলায় একটানা ৫ বছরের মতো সিম্পলিফাইড চাইনিজ অক্ষরের স্টলও ছিলো। প্রায় এক'শ কন্টিনেন্টাল পাবলিশার্স অংশ নিয়ে মোট ৩'হাজার ধরণের ৮হাজার বই প্রদর্শন করে। এর মধ্যে জনপ্রিয় কল্পকাহিনীসহ বিভিন্ন বই তাইওয়ানের পাঠকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
রেকর্ড ৪
"বেইজিং সান লিয়েন বা চুং হুয়া প্রকাশনা ব্যুরোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার গত বছর প্রকাশিত বই তাইওয়ানের বই বাজারে খুঁজতে পারে পাঠকরা।" প্রায় ৫ লাখ পাঠক এবারের বইমেলায় অংশগ্রহণ করে।
বন্ধুরা, প্রবন্ধ পর্ব এখানে শেষ। এখন শুনুন আমার সহকর্মী এনামুল হক টুটুলের উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক পর্ব।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। অনুষ্ঠান শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়ান (জিনিয়া/টুটুল)