২৩ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিংয়ের নগর পরিকল্পনা বাস্তবায়নকাজ এবং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজ পরিদর্শন করেন।
বেইজিং শহরের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত নতুন বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে প্রায় তিন বছর আগে। এ কাজ এখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে ২০১৯ সালে। এ বিমানবন্দর বছরে ১০ কোটি যাত্রীকে সেবা দেবে এবং বছরে ৮ লাখ ৮০ হাজার ফ্লাইট বিমানবন্দরটিতে উঠানামা করবে। ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সি চিন পিং নতুন বিমানবন্দর দিয়ে তার পরিদর্শন শুরু করেন।
বিমানবন্দর পরিদর্শনকালে সি চিন পিং বলেন, "নতুন বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেইজিংকে আন্তর্জাতিক মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনেই এটি করা হচ্ছে। আমি দেখেছি, আমাদের সাথে যে-সব দেশের সহযোগিতার সম্পর্ক আছে, সে-সব দেশের অধিকাংশই বেইজিং পর্যন্ত সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে বা সরাসরি ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়াতে চায়। কিন্তু আমাদের বিদ্যমান বিমানবন্দর দিয়ে এ চাওয়া পূরণ করা সম্ভব নয়। বেইজিং খুব দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। এ অবস্থায় নতুন বিমানবন্দর শহর উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, বেইজিংকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, এবং সত্যিকারের আন্তর্জাতিক মানের মহানগরী হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে।"
একই দিন সি চিন পিং বেইজিংয়ের দাসিং জেলায় নতুন বিমানবন্দর এলাকার লোকজনের পুনর্বাসনের জন্য বসতবাড়ি নির্মাণকাজও পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ১৯ লাখ বর্গমিটার বসতবাড়ি নির্মিত হবে, যাতে ৪০ হাজার লোকের বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ২০১৮ সালে এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।
এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিং অলিম্পিক গেমসের আইস হকি প্রতিযোগিতার মাঠ --- উ খ্য সোং ক্রীড়াকেন্দ্রে গিয়ে কিশোর আইস হকি ও ফিগার স্কেটিং দলের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম দেখেন। তিনি নবীন খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে বলেন, "আমি মনে করি, তোমরা খুবই সৌভাগ্যবান। এখানে কেবল লেখাপড়ার ভালো পরিবেশ আছে তা নয়, এখানে শরীর গঠনেরও ভালো ব্যবস্থা আছে। শারীরিক অবস্থা উন্নত হলে তোমাদের দক্ষতা আরও বাড়বে। তোমাদের ওপর আমরা ভরসা করি।"
পরে তিনি বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের শর্ট-ট্র্যাক স্পিড স্কেটিং ও ফিগার স্কেটিং প্রতিযোগিতার মাঠ— রাজধানী স্টেডিয়ামে গিয়ে তা সংস্কারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানেন। তিনি সম্প্রতি এশীয় শীতকালীন গেমসে অংশ নিয়ে দেশে-ফিরে-আসা শর্ট-ট্র্যাক স্পিড স্কেটিং দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাপ করেন।
এর পর তিনি থোংচৌ জেলায় যান এবং বেইজিং শহরের উপ-কেন্দ্রের নির্মাণকাজ প্রক্রিয়া পরিদর্শন করেন। তিনি মহাখাল বন পার্কে গিয়ে পানিব্যবস্থা সংস্কার এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষার ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
একই দিন বিকেলে তিনি বেইজিং নগর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজবিষয়ক আলোচনা সভা পরিচালনা করেন। সভায় তিনি বলেন, "জনগণের শহরের উচিত জনগণের সেবা করা। বেইজিংবাসীর বড় বড় সমস্যাগুলোর সমাধান আগে করতে হবে। এ শহরে জনসংখ্যা অতিরিক্ত, যানজট বেশি, বাড়ির দাম দ্রুত বাড়ছে, বায়ুদূষণ আছে। এসব সমস্যার সার্বিক সমাধানের কৌশল বের করতে হবে এবং শহরবাসীর জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে ও গণসেবার মান উন্নত করতে হবে।"
চীনের জন্য আসন্ন বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ব্যাপার। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসকে কেন্দ্র করে যেসব নির্মাণকাজ চলছে, সেগুলোকে শ্রেষ্ঠমানের হতে হবে এবং পরবর্তীকালে সেগুলো যাতে ব্যবহার করা যায়, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। আকৃতি বা সংখ্যা দিয়ে কোনোকিছু বিচার করলে চলবে না। (ইয়ু/আলিম)